রোববার (২৪ নভেম্বর) সকাল থেকে হাজারো চালক জড়ো হয়েছেন এখানে। দলে দলে আসছেন আরও অনেকে। দাবি আদায় না হলে তারা বাড়ি ফিরবেন না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা বিশাল একটি মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার দোয়েল চত্বর, হাইকোর্ট মাজার মোড় ও কদম ফোয়ারা হয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আসেন। এ সময় তারা ‘ব্যাটারিচালিত যানবাহন বন্ধে হাইকোর্টের আদেশ প্রত্যাহার করতে হবে’ স্লোগান দিতে থাকেন। পরে প্রেস ক্লাবের সামনে এসে তারা রাস্তায় বসে পড়েন।
গণ-অবস্থানে অংশ নেয়া কয়েকজন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকের সঙ্গে কথা হয় সময় সংবাদের। ক্ষোভ প্রকাশ করে একজন বলেন, ‘বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ছিলাম, এখন দেখি আমিই বৈষম্যের শিকার।’
রিকশার মালিকদের উদ্দেশে রফিক নামে এক চালক বলেন, ‘গাড়ি ধুইয়া পানি খাইবেন, চাকা না ঘুরলে টাকা পাইবেন কই।’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের কাছে লাইসেন্সের দাবি জানিয়ে সজিব নামে এক চালক বলেন, ‘আমাদের লাইসেন্স দিন। ব্যাটারিচালিত রিকশা চালিয়ে আমরাও জীবিকা নির্বাহ করতে চাই।’
আরও পড়ুন: ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকদের গণ-অবস্থান, লাইসেন্সসহ ১২ দাবি
আরেক রিকশাচালক বলেন, ‘সব দোষ গরীবের, মনে রাখবেন সমাজ পরিবর্তন করতে গরীব মানুষই লাগে।’
সকালে রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের ব্যানারে প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালকরা। কামরাঙ্গীরচর, সেকশন, হাজারিবাগ ও মোহাম্মদপুর থেকে এসেছেনতারা। টিটাগাং রোড এলাকা থেকেও আরও রিকশাচালক আসছেন।
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত গণ-অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা রিকশাচালক শ্রমিকদের। বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী রিকশাচালকদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে গণসঙ্গীত পরিবেশন করছে।
এদিকে, একই দাবিতে সকাল থেকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মোড় অবরোধ রেখেছেন অটোরিকশার চালকরা।
তাদের ১২ দফার মধ্যে অন্য দাবিগুলো হলো: দেশের সড়ক উপযোগী নকশায় আধুনিকায়নসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহনের বিআরটিএ লাইসেন্স ও যৌক্তিক রুট পারমিট দিতে হবে, চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করতে হবে, ব্যাটারিচালিত যানবাহন চলাচলে নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে, শ্রমিক প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে সড়ক ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনা কমিটি গঠন করতে হবে, সড়কের লেন পদ্ধতি সচল ও সার্ভিস লেন নির্মাণ করতে হবে, আন্দোলনে আটক ও গ্রেপ্তারকৃতদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে, ব্যাটারিচালিত যানবাহনকে গণপরিবহন ও শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে, জব্দ করা সব ব্যাটারিচালিত যানবাহন ও ব্যাটারি মালিকের কাছে হস্তান্তর ও নিলামকৃত ব্যাটারির মালিকদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে, চার্জিং স্টেশন নির্মাণ করতে হবে, মানবিক বিবেচনায় ব্যাটারিচালিত যানবাহনের পুঁজিকে নিরাপদ করে পর্যায়ক্রমে প্যাডেলচালিত বাহনের শ্রম থেকে মানুষকে মুক্ত করতে হবে এবং শ্রমিকদের ওপর সব জুলুম-নির্যাতন-চাঁদাবাজি-হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
]]>