এর আগে দীর্ঘ ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর ১১ জুন থেকে জেলেরা সাগরে মাছ ধরতে গেলেও কয়েকদফা বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়েছেন। একদিকে মাছ না ধরা, অন্যদিকে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে জেলে ও ট্রলার মালিকরা পড়েছেন চরম আর্থিক সংকটে।
সুন্দরবন সংলগ্ন উপজেলা ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন বলেন, ‘এলাকা থেকে বহু ট্রলার সাগরে গিয়েছিল মাছ ধরতে। হঠাৎ সাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়ায় প্রচণ্ড ঢেউ ও বাতাসে ট্রলারগুলো নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে মহিপুর, খেপুপাড়া, নিদ্রাসখিনা, পাথরঘাটা ও অন্যান্য উপকূলীয় এলাকায় ফিরে এসেছে।’
মোংলার রাজৈর মৎস্যঘাটের আড়ৎদার কবীর হোসেন বলেন, ‘বর্তমানে মাছ ধরা একেবারে বন্ধ। প্রতিটি ট্রলার পাঠাতে প্রায় ৫ লাখ টাকা খরচ হয়। মৌসুমের শুরুতে মাছ পড়া শুরু হলেও বৈরী আবহাওয়ায় জেলেরা সাগরে টিকতে না পেরে ফিরে এসেছে। এত কম মাছ পাওয়া গেছে যে খরচই উঠবে না।’
বরগুনা জেলা ফিশিং ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দুলাল মাস্টার বলেন, ‘দীর্ঘ ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞায় জেলেরা ঋণে জর্জরিত। এরপর মাছ ধরতে গিয়ে কেউ তেমন মাছ পায়নি। অন্যদিকে ট্রলিং বোটের কারণে সাগরে মাছের প্রজননও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তার ওপর এখনকার দুর্যোগ যেন আরেক অভিশাপ।’
আরও পড়ুন: মোংলায় পুকুর থেকে নবজাতকের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার
বরগুনা জেলা ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ‘জেলেরা ধারদেনা করে ট্রলার চালিয়ে সাগরে গেছেন। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ায় জাল ফেলতে না পেরে ফিরে এসেছেন উপকূলে। এতে মালিকদের লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হচ্ছে।’
এদিকে পূর্ব সুন্দরবনের দুবলারচরের আলোরকোল ফরেস্ট টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরেস্টার ফারুক আহমেদ শনিবার বিকেলে বলেন, ‘নিম্নচাপের কারণে সাগর প্রচণ্ড উত্তাল হয়ে উঠেছে। ঝড়ো হাওয়া ও ভারী বৃষ্টিতে ট্রলারগুলো নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য উপকূলমুখী হয়েছে।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উপকূলীয় অঞ্চলে মাছ ধরার মৌসুম শুরু হলেও বৈরী আবহাওয়া ও প্রকৃতির অনুকূলে না থাকায় সাগরগামী জেলেরা চরম সংকটে পড়ছেন। দ্রুত আবহাওয়ার উন্নতি না হলে জেলেদের এই দুর্দশা দীর্ঘায়িত হতে পারে।
]]>