বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে যশোর আদালতে মামলাটি করেন তার ছেলে আহসান হাবীব। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করতে ব্যর্থ হয়েছিল পরিবারটি।
সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবা শারমিন অভিযোগ আমলে নিয়ে পুলিশের দায়ের করা মামলাটির নথি ও সিডি তলব করে আগামী ২০ নভেম্বর আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী দেবাশীষ দাস।
আসামিরা হলেন: বেনাপোল পোর্ট থানা এলাকার সহিদুলের ছেলে রেজাউল ইসলাম রেজা ও তার ভাই আজিজুল ইসলাম, আকবর সর্দারের ছেলে শাহাদৎ হোসেন, মোতালেব সর্দারের ছেলে কামাল হোসেন, আব্দুল মজিদের ছেলে তারিকুল ইসলাম, আবদুর ওয়াজেদ মান্দারের ছেলে আব্দুর রব, নারায়ণপুর গ্রামের মৃত জব্বার আলী মুন্সির ছেলে ইয়াকুব আলী, পুটখালীর শহিদুল ইসলামের ছেলে জিয়াউর রহমান, মোতালেব সর্দারের ছেলে রিয়াজুল ইসলাম, বেনাপোল পোর্ট থানার সাবেক এসআই আবুল কালাম আজাদ, সাবেক ওসি (তদন্ত) সৈয়দ লুৎফর রহমান, সাবেক এসআই শিকদার মতিয়ার রহমান, ডিবির তৎকালীন এসআই আবুল খায়ের মোল্লা।
বাদীর দাবি আসামিরা সকলেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। চাঁদা না দেয়ায় খালেককে হত্যা করা হয়েছিল।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ২০১২ সালের ৩ জানুয়ারি দুপুরে ব্যবসায়ী আব্দুল খালেক তার ছেলে মুন্নাকে বেনাপোল হাইস্কুলে ভর্তি করাতে যান। ছেলে ভর্তি শেষে কাছের একটি দোকানে বসিয়ে তিনি যশোর-বেনাপোল সড়কের দিঘিরপাড় এলাকায় শাহজালাল ফিলিং স্টেশনে মোটরসাইকেলে তেল নিতে গেলে দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে হামলার শিকার হন। পুলিশ বাদে অন্য আসামিরা আব্দুল খালেককে ঘিরে ফেলেন। রেজাউল, আজিজুল, ইয়াকুব ও জিয়াউর রহমান আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি চালান। রেজাউলের গুলি খালেকের ডান কান ভেদ করে বাম কান দিয়ে বেরিয়ে যায়। অন্য আসামিরা চারদিক ঘিরে সহযোগিতা করে। পরে তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: শ্যালিকার সঙ্গে পরকীয়ার জেরেই স্ত্রীকে খুন, দুবছর পর গ্রেফতার স্বামী
অভিযোগে আরও বলা হয়, তৎকালীন বেনাপোল পোর্ট থানার এসআই আবুল কালাম আজাদ প্রকৃত আসামিদের রক্ষায় ২০১২ সালের ৭ জানুয়ারি নিজে বাদী হয়ে মনগড়া অভিযোগ এনে মামলা করেন। তার সঙ্গে ওসিও (তদন্ত) জড়িত ছিলেন। এমনকি খালেকের পরিবারকে মামলা করতে দেয়া হয়নি। পরে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শিকদার মতিয়ার রহমান ও জেলা গোয়েন্দা শাখার এসআই আবুল খায়ের মোল্লা আসামিদের বাঁচাতে ২০১৩ সালের ১৩ মার্চ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে করে প্রকৃত আসামিরা সবাই ছাড় পেয়ে যান। এরপর থেকেই বাদী পরিবার পালিয়ে ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর তারা এলাকায় ফিরে আসেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় বাদী বাবার হত্যার বিচার চেয়ে আদালতে মামলা করেন।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, এ হত্যার সঙ্গে পুটখালীর মোতালেব সর্দারের ছেলে সিরাজুলও জড়িত ছিলেন। কিন্তু তিনি মারা গেছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের শাসনামলে যশোরের বেনাপোল সীমান্তে ১৬০ জন হত্যার শিকার হয়েছেন। এসব হত্যার অধিকাংশ ছিল রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার, প্রতিশোধ ও আক্রোশমূলক হত্যা।