বেতিসে যোগ দিয়ে কান্না ভেজা চোখে খুশির বার্তা দিলেন অ্যান্টনি

৩ সপ্তাহ আগে
চোখের জল কি শুধু সবসময় দুঃখ, কষ্ট, ক্ষোভ-অভিমানের কথাই প্রকাশ করে? না, অনেক সময় আনন্দ-উচ্ছ্বাসও ঝরে চোখের জল হয়ে। ব্রাজিলিয়ান তারকা অ্যান্টনি সেটিই যেন ফুটিয়ে তুললেন আরও একবার। ম্যানচেস্টার ইউনাইট থেকে রিয়াল বেতিসে যোগ দিয়ে কান্না ভেজা চোখে শোনালেন সুখের বাণী।

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে শেষ কয়েকটা দিন দুঃস্বপ্নের মতোই কেটেছে অ্যান্টনির। সেই দুঃস্বপ্ন থেকে বেরিয়ে এবার বেতিসে পাড়ি জমালেন ব্রাজিলিয়ান এই তারকা। ইউনাইটেডের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ দুই বছর বাকি থাকতেই ক্লাব ছাড়লেন তিনি। 

 

গত মৌসুমে ধারে খেলতে গিয়েছিলেন রিয়াল বেতিসে। সেই সময় ক্লাবটির সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠে অ্যান্টনির। তারপর থেকেই সেখানে যেতে মরিয়া ছিলেন তিনি। কিন্তু চুক্তির নানা বিষয় নিয়ে ইউনাইটেডের সঙ্গে টানাপড়েন চলছিল। শেষ পর্যন্ত সমাধান হলো সেই সমস্যার। 

 

পাঁচ বছরের চুক্তিতে ব্রাজিলিয়ান এই তারকাকে পেতে রিয়াল বেতিসের খরচ হয়েছে ২ কোটি ২০ লাখ ইউরো। সেইসঙ্গে বোনাস মিলিয়ে খরচ হতে পারে আরও ৩০ লাখ ইউরো। আর ভবিষ্যতে দলবদলের ক্ষেত্রেও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড পাবে ৫০ শতাংশ। 

 

গত মৌসুমে হুবেন আমোরিমের অধীনে একাদশে জায়গা মিলতো না অ্যান্টনির। তারপর ধারে রিয়াল বেতিসে পাঠায় তাকে। সেখানে গিয়ে দারুণ পারফর্ম করেন ব্রাজিলিয়ান এই ফুটবলার। ২৬ ম্যাচে গোল করেছেন ৯টি। সেটুকু সময়ের মধ্যেই ক্লাবটির সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। 

 

আরও পড়ুন: এক মিনিটের ভুলে ৩২ লাখ টাকা জরিমানা

 

এমন দুর্দান্ত পারফর্ম করে বেতিস থেকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ফিরে আসার পর নতুন মৌসুমে আন্টনির জায়গা হয়নি আমুরির স্কোয়াডে। অনুশীলনও করতে হয়েছে আলাদাভাবে। 

 

তখন থেকেই বেতিসের সঙ্গে চুক্তির অপেক্ষায় দিন গুণতে থাকেন অ্যান্টনি। অবশেষে ক্লাবটির সঙ্গে সেই চুক্তি হওয়ার পর কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। বেতিসকে ধন্যবাদ জানিয়ে কান্না ভেজা চোখে শোনালেন ইউনাইটেডে থাকাকালীন অসহায় সময়টুকুর কথা। 

 

‘কেবল আমার পরিবারই জানে, সেখানে (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড) থাকা কতটা কঠিন ছিল। আলাদাভাবে অনুশীলন করতে হচ্ছিল। তবে জানতাম, দারুণ মুহূর্তটি আসছে। কিছুটা ভয় অবশ্যই ছিল যে, শেষ পর্যন্ত নাও হতে পারে। তবে অপেক্ষা করে গেছি, কারণ আমার বিশ্বাসের কমতি ছিল না।’ 

 

অ্যান্টনি আরও বলেন, ‘খুবই কঠিন ছিল (দলবদলের প্রক্রিয়া), তবে শেষ পর্যন্ত আজকে আমি এখানে। বেতিসের জার্সি আবার গায়ে চাপাতে তর সইছে না আমার। এটা সম্ভব করায় যারা কাজ করেছেন, তাদের প্রতি কেবল কৃতজ্ঞতাই জানাতে পারি।’ 

 

আরও পড়ুন: সিটি ছেড়ে তুরস্কের ক্লাবে গুন্ডোগান

 

গত মৌসুমে যখন রিয়াল বেতিসে ধারে খেলতে গিয়েছিলেন অ্যান্টনি, তখনই এই সেভিয়া শহর, বেতিস ক্লাবের প্রতি ভালোলাগার কথা বলেছেন। ইউনাইটেডের দুঃস্বপ্নের কথাও তিনি বলেছিলেন তখন। তবে এবার লম্বা সময়ের জন্য বেতিসে ফিরে সেই ভালোবাসার কথাই আবার বললেন অ্যান্টনি। 

 

‘কত যে পার্থক্য! ম্যানচেস্টারের চেয়ে সেভিয়া অনেক বেশি সুন্দর। অবশেষে আমি এখানে! ৪০ দিনের বেশি হোটেলে কাটাতে হয়েছে আমাকে, সময়টা কঠিন ছিল। তবে সবাই জানত, বেতিসে ফিরতে আমি মরিয়া। এখন সময়ের সঙ্গে অনেক কিছু করার ও অর্জনের আছে। বেতিসের সমর্থকদের ভালোবাসার এত জোয়ার দেখে ঘুমাতে পারছিলাম না আমি।’ 

 

২০২২ সালে সাড়ে ৯ কোটি ইউরোতে আয়াক্স থেকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দেন অ্যান্টনি। ক্লাবটির ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দামি ফুটবলার তিনি। 

 

অ্যান্টনি এখন যে ক্লাবে যোগ দিয়েছেন, লা লিগায় তাদের দাপট খুব একটা নেই বললেই চলে। গত ৯০ বছরে তারা লা লিগা জেতেনি, ক্লাবের ১১৮ বছরের ইতিহাসে কোপা দেল রে জিতেছে স্রেফ তিনবার। এখানে তার পারিশ্রমিকও অনেক কম হওয়ার কথা ইউনাইটেডের চেয়ে। তবে অর্থ, নামডাক এসবের অ্যান্টনির কাছে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে তাদের ভালোবাসা। 

 

‘আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো যত্ন পাওয়া। এটা টাকায় কেনা যায় না। এই ক্লাবে আমার অনুভূতিটাই ভালো লাগার, অনেক অনুরাগ অনুভব করি এখানে। এজন্যই এটা ছিল আমার প্রথম পছন্দ। এজন্যই শেষ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি বেতিসে ফিরতে। এখন আমি খুবই খুশি যে ভালোবাসার ক্লাব ও শহরে আবার আসতে পেরেছি।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন