সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে আরও জানানো হয়েছে যে, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে ঘটনার তদন্ত শুরু করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার জন্য বলা হয়েছে। সকলকে আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন আরও জানিয়েছে, বীর এ মুক্তিযোদ্ধা হত্যাসহ নয়টি মামলার আসামি।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাতিসা ইউনিয়নের কুলিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে বীর মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পরিয়ে তাকে লাঞ্ছিত হয়।
ভুক্তভোগী ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম আবদুল হাই ওরফে কানু (৭৮)। তিনি ঘটনাস্থলের পাশের লুদিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা। আবদুল হাই কৃষক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও একই সংগঠনের কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার সাবেক সহসভাপতি। তার পরিবারের অভিযোগ, লাঞ্ছিতকারীরা সবাই স্থানীয় জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী। আবদুল হাইকে এলাকা ছাড়ার জন্য হুমকি দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফারুকীর ছবিতে জুতার মালা!
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের রাজনীতি করলেও আবদুল হাই ছিলেন নির্যাতনের শিকার। চৌদ্দগ্রামের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের পক্ষে রাজনীতি না করার কারণে গত প্রায় আট বছর এলাকাছাড়া ছিলেন তিনি। তার বাড়িঘরে একাধিকবার হামলা চালিয়েছেন মজিবুলের লোকজন। সম্প্রতি তিনি বাড়িতে যান। গতকাল দুপুরে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পরই তাকে আটক করেন একদল লোক। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় কুলিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে। সেখানে তার গলায় জুতার মালা পরিয়ে তাকে লাঞ্ছিত করা হয়। লাঞ্ছিতকারীরাই ঘটনাটির ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ১ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের ভিডিওতে দিয়ে দেখা যায়, দুজন ব্যক্তি জুতার মালা পরা অবস্থায় ওই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে টানাহেঁচড়া করছেন। তাকে লাঞ্ছিত করা ব্যক্তিদের একজনই পুরো ঘটনার ভিডিও করেছেন। এ সময় ওই বীর মুক্তিযোদ্ধা বারবার তাকে ছেড়ে দেয়ার আকুতি জানান।
এ ঘটনার পর আবদুল হাই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। বর্তমানে ফেনীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।
গতকাল রাত সোয়া ১১টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি বলেন, আমার বেশি কিছু বলার নেই। মানুষের স্বাধীনতার জন্য দেশ স্বাধীন করেছি, কিন্তু স্বাধীনতার সুফল আজও পাইনি। চৌদ্দগ্রামের সাবেক আওয়ামী লীগের এমপি মুজিবুল হকের অনিয়ম, অত্যাচার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলায় আট বছর বাড়িতে আসতে পারিনি। আমার বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছিল। বর্তমান সময়ে ভেবেছিলাম অন্তত বাড়িতে ঘুমাতে পারব। সেই আশা মনে হচ্ছে পূরণ হবে না। তাহলে কার জন্য দেশ স্বাধীন করেছিলাম? এভাবে জুতার মালা পরার জন্য অবশ্যই নয়।
]]>