আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন,
আর তোমাদের মধ্যে যারা অবিবাহিত, তাদের বিবাহ দাও এবং তোমাদের দাস-দাসীদের মধ্য থেকেও যারা উপযুক্ত তাদের। তারা যদি গরিব হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের অভাবমুক্ত করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও সর্বজ্ঞ। (সুরা আন-নূর: ৩২)
এই আয়াত থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, সমাজে বিয়ের ব্যবস্থা করা, বিশেষত গরিব-অসহায়দের জন্য, এটি একটি ঈমানদার সমাজের দায়িত্ব। আল্লাহর উপর ভরসা রেখে এ কাজে অগ্রসর হলে তিনি তা পূর্ণ করবেন এবং তাদের জন্য রিজিকের পথ খুলে দেবেন।
আরও পড়ুন: ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি পেতে যে দোয়া পড়বেন
নবী করিম (সা.) বলেন,
তিন ব্যক্তির সাহায্য করা আল্লাহর দায়িত্ব, তাদের মধ্যে একজন হলো—সে ব্যক্তি, যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বিয়ে করে। (তিরমিজি: ১৬৫৫)
এ হাদিস থেকে বোঝা যায়, যারা বিয়ে করে আল্লাহর ভয় ও তাঁর সন্তুষ্টির জন্য, এবং যারা এ কাজে সহায়তা করে, তাদের সাহায্য করা আল্লাহর ওয়াদা।
আরেক হাদিসে রসুল (সা.) বলেন,
তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি বিয়ের সামর্থ্য রাখে, সে যেন বিয়ে করে, কেননা এটি চোখকে নিম্নদৃষ্টিতে রাখে ও লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। (সহিহ বুখারি: ৫০৬৫, সহিহ মুসলিম: ১৪০০)
এখানে বোঝানো হয়েছে, যারা বিয়ের পরিবেশ ও সহযোগিতা সৃষ্টি করে, তারা সমাজকে পাপমুক্ত করতে সাহায্য করছে।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দুনিয়াবি কষ্ট দূর করবে, আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন তার কষ্ট দূর করবেন। (সহিহ মুসলিম: ২৬৯৯) অসহায় যুবক-যুবতীদের বিয়েতে সহযোগিতা করা তাদের দুনিয়াবি কষ্ট দূর করার একটি বড় মাধ্যম। এতে আল্লাহর অনুগ্রহ লাভ হয়।
ইসলামে বিয়ে শুধু একটি সামাজিক রীতি নয়, বরং একটি ইবাদত, যা সমাজকে পবিত্র রাখে, ব্যভিচার থেকে বিরত রাখে এবং সুস্থ প্রজন্ম গঠনে সহায়তা করে। যে ব্যক্তি অন্যের বিয়েতে আন্তরিকভাবে সাহায্য করে, বিশেষ করে গরীব-অসহায় মানুষের, সে একটি মহৎ ইবাদতে অংশ নেয় এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে বিপুল সওয়াব লাভ করে।
আজকের সমাজে যখন অনেক তরুণ অর্থাভাবে বা সামাজিক প্রতিবন্ধকতায় বিয়েতে বাধাগ্রস্ত হয়, তখন আমরা যারা তাদের পাশে দাঁড়াতে পারি, আমাদের উচিত তাদের জন্য সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়া। এ কাজ শুধু দান নয়, বরং তা একটি সদাকায়ে জারিয়া হতে পারে যার সওয়াব মৃত্যুর পরও বহমান থাকবে।
]]>