শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকার হাজারীবাগের ইনস্টিটিউট অব লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযানের বিস্তারিত জানানো হয়।
এ সময় বাবর ও তানভীরের হাতে তুলে দেয়া হয় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা।
অভিযানের ব্যবস্থাপক ফরহান জামান বলেন, মানাসলু অভিযানে সময় লাগবে প্রায় এক মাস। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় কিংবা শেষ সপ্তাহে চূড়ায় আরোহণ হতে পারে।
অভিযান অপারেটর হিসেবে থাকছে নেপালের স্নোয়ি হরাইজন ট্রেক্স এন্ড এক্সপিডিশন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ‘লোক’ লড়বে আমেরিকার ফ্যান্টাস্টিক ফিল্ম ফেস্টে
পর্বতারোহণের প্রয়োজনীয় অনুমতি ও নানান সরঞ্জাম কেনার কাজ শেষ করে নেপালের রাজধানী কাঠমাণ্ডু থেকে বেসিশহরের উদ্দেশে রওনা হবেন তারা।
মানাসলু পর্বত বাবরের জন্য চতুর্থ আট হাজার মিটারি পর্বত অভিযান। পৃথিবীতে ১৪টি আট হাজার মিটার (২৬,২৪৬ ফুট) কিংবা তার অধিক উচ্চতার পর্বত আছে।
বাবর আলী বলেন, ‘‘এভারেস্ট-লোৎসে আরোহণের পর থেকে বিশ্বের ১৪টি আট হাজার মিটার পর্বতই আরোহণের স্বপ্ন দেখছি। ইতোমধ্যে তিনটিতে গিয়েছি, এটি চতুর্থ। এ বছরের শুরুতে অন্নপূর্ণা-১ আরোহণের পর মানাসলু অভিযান সে লক্ষ্যের দিকে আরো একটি দৃঢ় পদক্ষেপ।’’
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, দিন কয়েকের ট্রেক শেষ দুই পর্বতারোহী পৌঁছাবেন মানাসলু বেস ক্যাম্পে। মূল অভিযান শুরু হবে সেখান থেকেই। বেস ক্যাম্প থেকে উপরের ক্যাম্পগুলোতে উঠানামা করে শরীরকে অতি উচ্চতা ও নিম্ন তাপমাত্রার সাথে খাপ খাইয়ে নেবেন দুই অভিযাত্রী।
২০২৪ সালে বিশ্বের উচ্চতম শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট ও চতুর্থ উচ্চতম পর্বত মাউন্ট লোৎসে আরোহণের পর এ বছরের এপ্রিল মাসে পৃথিবীর দশম সর্বোচ্চ পর্বত অন্নপূর্ণা-১ আরোহণ করেন পর্বতারোহী এবং ভার্টিক্যাল ড্রিমার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বাবর আলী।
বাবর আলী বলেন, ‘‘ধীরে ধীরে বাকি পর্বতগুলোর চূড়াও ছুঁতে চেষ্টা করব। মানাসলু অভিযানে তানভীর ভাইকে সহঅভিযাত্রী হিসেবে পাওয়াটা নিঃসন্দেহে দারুণ ব্যাপার। আমাদের দুজনের মধ্যে বোঝাপড়া দারুণ। আশা করি এই চমৎকার ব্যাপারটাই আমাদেরকে চূড়ার দিকে এগিয়ে দেবে। এতদিন একা আট হাজার মিটার পর্বত অভিযানে যেতাম। এবার আমি আর একা নই, আমরা।’’
ক্লাবের মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড ট্রেকিং সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী তানভীর ২০২৪ সালের নভেম্বরে আরোহণ করেন হিমালয়ের ম্যাটারহর্ন খ্যাত আমা দাবলাম শিখর।
মানাসলু তানভীরের প্রথম আট হাজার মিটার পর্বত অভিযান।
তানভীর বলেন, ‘‘গত বছর ৬ হাজার ৮১২ মিটার উচ্চতার আমা দাবলাম অভিযানের পর থেকে আমি একটা আট হাজার মিটার পর্বতে যাবার জন্য নিজেকে তৈরি করছিলাম। আরোহণের মৌসুম এবং নিজের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় এই মুহূর্তে মানাসলুকেই আমার কাছে সবচেয়ে উপযোগী মনে হয়েছে।”
তিনি বলেন, ‘‘বেশিরভাগ পর্বতারোহীই বিশ্বের উঁচু সব পর্বতে দেশের পতাকা হাতে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখেন। আমিও ব্যতিক্রম নই। আমি মুখিয়ে আছি মানাসলুর শৃঙ্গে লাল-সবুজ পতাকা হাতে দাঁড়ানোর জন্য। উঁচু পর্বতের চ্যালেঞ্জ নিতে আমি শারীরিক এবং মানসিকভাবে প্রস্তুত।’’
আরও পড়ুন: কানের পর টরন্টো চলচ্চিত্র উৎসবে নির্বাচিত আল আমিন অভিনীত ‘আলী’
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ক্লাবটির সভাপতি এবং অভিযানের ব্যবস্থাপক ফরহান জামান।
আরও বক্তব্য রাখেন পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান ‘সামুদা’ এর চিফ বিজনেস অফিসার বিকাশ কান্তি দাস এবং ‘গিগাবাইট বাংলাদেশ’ এর কান্ট্রি ম্যানেজার আনাস খান।
এই দুই প্রতিষ্ঠান ছাড়াও অভিযানে পৃষ্ঠপোষক হিসেবে দুই পর্বতারোহীর পাশে দাঁড়িয়েছে ভিজুয়াল নিটওয়ারস লিমিটেড, সিনো ভেস্ট, সিয়েরা রোমিও ইন্টারন্যাশনাল এবং চন্দ্রবিন্দু প্রকাশন।
]]>