বিশ্ববিদ্যালয় শুধু বিসিএস ক্যাডার বানানোর জায়গা না: শিবির সেক্রেটারি

৪ সপ্তাহ আগে
বিশ্ববিদ্যালয় শুধু বিসিএস ক্যাডার বানানোর জায়গা না, গবেষণা ও জ্ঞান তৈরির জায়গা। রাষ্ট্র সেরকম শিক্ষা ব্যবস্থা দিতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম।

শনিবার (১৬ আগস্ট) সকাল ৯ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল ফিল্ড সংলগ্ন বাস্কেটবল মাঠে অনুষ্ঠিত ‘ফ্রেশার রিসিপশন অ্যান্ড ক্যারিয়ার গাইডলাইন প্রোগ্রাম ২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সেক্রেটারি জেনারেল। 
 

দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে শিক্ষার্থী না থাকলেও লাইব্রেরিতে বিসিএস পড়ার জন্য শিক্ষার্থীর অভাব হয় না। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় শুধু বিসিএস ক্যাডার বানানোর জায়গা না, গবেষণা ও জ্ঞান তৈরির জায়গা। রাষ্ট্র সেরকম শিক্ষা ব্যবস্থা দিতে পারেনি। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা বেকারত্ব দূর করতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা মনস্তাত্ত্বিক দাসে পরিণত হয়েছি। জ্ঞান ও গবেষণায় বাংলাদেশ এখনও অনেক পিছিয়ে।’

আরও পড়ুন: চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবি ছাত্র আন্দোলনের

তিনি আরও বলেন, ‘বিসিএস ক্যাডারে আসার পরে প্রথমে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পরে সহকারী সচিব, সিনিয়র সহকারী সচিব, যুগ্ম সচিব সিনিয়র যুগ্ম সচিব এরকম করে করে পদোন্নতি দিয়ে সিনিয়র সচিব পর্যন্ত করা হয় এবং এর মধ্যেই আপনার এক্সপেরিয়েন্স, আপনার নলেজ কে গ্যাদার করা হয় এবং ট্রেইন আপ করা হয়। ছাত্রশিবিরে যোগ দিলেও এরকম নলেজ ও এক্সপেরিয়েন্সের সমন্বয়ে এক স্তর থেকে পরবর্তী স্তরে মানোন্নয়ন করা হয়৷ এজন্য ইসলামী ছাত্রশিবিরকে আমরা বলি যে, এটা শুধু তথাকথিত প্রচলিত রাজনৈতিক সংগঠনই নয়, বরং এটি একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানও। এই ইনস্টিটিউশনের কাজ হচ্ছে আপনাকে ট্রেইন আপ করা, আপনাকে স্কিলড করা, আপনার মরালিটি, লয়ালটি, ইন্টিগ্রিটি, সিন্সিয়ারিটি কে  ডেভেলপ করা আমাদের উদ্দেশ্য।’
 

নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে নুরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা না করে ‘আদু ভাই’ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। প্রথম বর্ষ থেকেই মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। ফার্স্ট ইয়ারকে রেস্ট ইয়ার মনে করলে হবে না। পরিকল্পনা অনুযায়ী নিয়মিত পড়াশোনা করলে ভালো ফল করা সম্ভব। দক্ষ হয়ে নিজেকে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।’
 

গত বছরের মতো এবারও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রায় দুই হাজারের অধিক নবীন শিক্ষার্থীদের নিয়ে 'ফ্রেশার রিসিপশন এন্ড ক্যারিয়ার গাইডলাইন প্রোগ্রাম-২০২৫' আয়োজন করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন শাখা শিবিরের সেক্রেটারি মোহাম্মদ পারভেজ।
 

আরও পড়ুন: চবির ছাত্র হলের ডাইনিং-ক্যান্টিনে পচা-বাসি খাবার

ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সমাজসেবা সম্পাদক আব্দুল মোহাইমেন বলেন, ‘আপনারা ফ্যাসিবাদমুক্ত করেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসেছেন। আগামীর বাংলাদেশকে বৈষম্যমুক্ত গড়ে তুলতে হবে, কারণ এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে আপনাদের সহপাঠীরা রক্ত দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনারা স্বাধীন, তবে সেই স্বাধীনতা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে। মাদকাসক্তি বা খারাপ কাজে জড়ানোর সুযোগ থাকলেও এগুলো এড়িয়ে দক্ষতার ভিত্তিতে টিকে থাকতে হবে। আগামী বাংলাদেশে নেতৃত্বের দায়িত্ব আপনাদেরকেই নিতে হবে।’


অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইব্রাহিম হোসেন রনি বলেন, ‘আমরা স্বপ্ন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসেছি, আর সেই স্বপ্ন হতে হবে আগামীর বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার। শিক্ষার্থীরা যে প্রত্যাশা নিয়ে এখানে এসেছে, প্রশাসন তাদের সুবিধা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। খাবারের মান খারাপ হওয়ায় ক্যান্টিনগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এত কর্মচারী থাকার পরও শিক্ষার্থীদের কাজে আসছে না। আমরা সৎ, দক্ষ ও মেধাবী নেতৃত্ব তৈরি করতে অবিরত কাজ করছি।’


নবীনদের নিয়ে এ অনুষ্ঠানে 'ইরামনাস ন্যাশনাল ফোকাল পয়েন্টস' ইউরোপীয় কমিশনের আঞ্চলিক পরিচালক আশিকুর রহমান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক এনায়েত উল্যা পাটওয়ারী সহ চবি ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বক্তব্য রাখেন। 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন