বিপ্লবের ঝড়ে সেদিন লন্ডভন্ড হয় স্বৈরাচারী হাসিনার মসনদ

৯ ঘন্টা আগে
বাঙালির ইতিহাসে রক্তাক্ত গৌরবের নাম ৩৬ জুলাই। সেদিন বিপ্লবের ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যায় ১৭ বছরের স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার মসনদ। পুরো বাংলাদেশ নেমে আসে রাজপথে। শুধু স্বৈরাচার সরকারের পতনই হয়নি, দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। গণভবনের দখল নেয় গণমানুষ। বিজয়ের পতাকা উড়িয়ে উচ্ছ্বাসে মাতে গোটা দেশ। এদিনও পুলিশের গুলিতে মারা যায় অনেক মানুষ।

ভিন্ন কিছু দিন, ভিন্ন কিছু ঘটনা লেখা থাকে ইতিহাসে। আর সেই ভিন্নতা যদি আসে হাজারো রক্তের বিনিময়ে স্বৈরাচার পতনের মাধ্যমে, তবে তা পৌঁছে যায় অনন্য উচ্চতায়।

 

৩৬ জুলাই আবারও স্মরণ করিয়ে দেয় এক সময় সুদীর্ঘ অবিচারেরও ইতি ঘটে। ইতিহাস বলে, সুদীর্ঘ অন্যায়েরও সমাপ্তি আছে। ৩৬ জুলাই, বাঙালির ইতিহাসে তেমনই একটি দিন। যেদিন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী মানুষের সংখ্যা হাজার বা লাখে নয়, যা পৌঁছে যায় কোটিতে।

 

সকাল থেকে পুরো দেশ ছিল থমথমে। কোটি মানুষ কারফিউ ভেঙে ঢাকার একাধিক মোড়ে জড়ো হয়ে রাজধানীতে প্রবেশের চেষ্টা করে। শেখ হাসিনা এদিনও বল প্রয়োগ করে ক্ষমতায় থাকতে চাইলে তাকে জানানো হয়, এই ধরনের ব্যবস্থা অকার্যকর হবে।

 

আরও পড়ুন: জুলাইয়ের অর্জিত বিজয় ছিল মুক্ত পাখির মতো বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসের

 

কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকার প্রবেশ পথগুলোতে দেখা যায় জনতার স্রোত। মার্চ টু ঢাকা সফল করতে ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষ যাত্রা শুরু করে গণভবনের দিকে। কিন্তু তখনো থামেনি শাসকের বন্দুকের গুলি।

 

দুপুরের পর হঠাৎ পাল্টে যায় দৃশ্যপট। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন- এ খবর প্রকাশের পর ছাত্র-জনতা রাজপথে নেমে আসতে থাকেন। বিজয় উৎসব শুরু হয় চারদিকে। বেলা আড়াইটার পর জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে শেখ হাসিনা হেলিকপ্টারে করে ভারতে পালিয়ে গেছেন।

 

এরপর আন্দোলনে জয়ী মানুষের বাঁধভাঙা স্রোত ছড়িয়ে পড়ে সড়কে। অলি-গলি, পাড়া-মহল্লায়, গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। রাজধানীর রাজপথ হয়ে ওঠে আন্দোলনে বিজয়ী ছাত্র-জনতার বিজয়ের ক্যানভাস।

 

আরও পড়ুন: বৈষম্যহীন, দুর্নীতি ও স্বৈরাচারমুক্ত নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থা অভ্যুত্থানের লক্ষ্য: প্রধান উপদেষ্টা

 

কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে তীব্র গণ-অভ্যুত্থান, যার মধ্য দিয়ে শুরু হয় এক নতুন সম্ভাবনার, নতুন অকাঙ্ক্ষার পথে যাত্রা। যেই যাত্রার শুরুটা স্বৈরাচারী হাসিনার পতনের মধ্য দিয়ে হলেও এর পেছনে আছে হাজারো শহীদ আর অগণিত আহতের রক্তগাঁথা। এত রক্তের বিনিময়ে পাওয়া নতুন এই যাত্রা হোক সাম্যতা আর ন্যায্যতার পথে- এমন প্রত্যাশা আপামর জনতার। 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন