জেলার অন্তত ১০টি সরকারি ও বেসরকারি মালিকানাধীন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অধিকাংশে পুরোনো এবং অকেজো অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জাম ব্যবহার করা হচ্ছে। নেই নিয়মিত ফায়ার ড্রিল বা কোনো কার্যকর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা। ফলে মাঝেমধ্যেই ঘটছে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ড, বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদন।
সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যায় শাহজিবাজার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে ঘটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। এতে সারাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে এবং পুরো হবিগঞ্জ জেলা প্রায় ১৫ ঘণ্টা অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের অভিযোগ, প্রতি ঘটনার পর আশ্বাস মিললেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা আজও গ্রহণ করা হয়নি। স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, কলকারখানা সবখানেই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের প্রভাব পড়ছে। ব্যবসায়িক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে, বাড়ছে জনভোগান্তি।
একাধিক কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মেইনটেন্যান্সের জন্য বরাদ্দ না থাকা এবং জনবল সংকটের কারণে অনেক সময় চাইলেও ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয় না। ফলে সামান্য আগুনও মুহূর্তে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান বলেন, বিদ্যুৎ না থাকলে দোকান খোলা রাখা যায় না। ব্যবসা করি লোকসানে। সরকারের উচিত ব্যবস্থা নেয়া।
আরও পড়ুন: শাহজিবাজার গ্রিডে আগুন লাগায় বিদ্যুৎহীন হবিগঞ্জ
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) হবিগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট ত্রিলোক কান্তি চৌধুরী বিজন বলেন, প্রতিটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ অগ্নি–নির্বাপক ব্যবস্থা থাকা উচিত। কাগজে কলমে না, বাস্তবেই তা কার্যকর হওয়া জরুরি।
হবিগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, দুর্ঘটনা এড়াতে প্রতিটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রশিক্ষিত জনবল ও আধুনিক অগ্নি–নির্বাপক সরঞ্জাম থাকা জরুরি। তবেই ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব।
বিদ্যুৎ বিভাগে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কাগজে থাকলেও বাস্তবে নেই কোনো কার্যকর প্রস্তুতি। স্থানীয়রা বলছেন, প্রতিবার দুর্ঘটনার পর তদন্ত হয়, আশ্বাস মেলে, কিন্তু বাস্তবায়ন দেখা যায় না। সরকারের উচ্চপর্যায়ে হস্তক্ষেপ না হলে এ ধরনের বিপর্যয় আরও বাড়বে।