বিদেশি নম্বর থেকে ফোনে চাঁদা দাবি, না পাওয়ায় গুলি!

২ সপ্তাহ আগে
রাজধানীতে থামছেই না শীর্ষ সন্ত্রাসী পরিচয়ে চাঁদাবাজির ঘটনা। বিদেশি নাম্বার থেকে ফোন করে চাঁদা দাবি করে না পেলেই গুলি করছে সন্ত্রাসীরা। শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের নামে চাঁদা চেয়ে না পেয়ে এক মাসের ব্যবধানে মোহাম্মদপুরের আবাসন ব্যবসায়ী মনির আহমেদের প্রতিষ্ঠানে দুইবার গুলি করেছে সন্ত্রাসীরা। এমন ঘটনায় আতঙ্কে শের শাহ সুরি রোডের বাসিন্দারা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তাকে দায়ী করছেন এলাকাবাসী। ইমনের পাশাপাশি এ ঘটনায় নাম এসেছে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলালেরও।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুর ২টা ২০ মিনিট, রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শের শাহ সুরি রোডের ৭৫/বি নম্বর বাসায় আসে হেলমেট পরিহিত মোটরসাইকেল আরোহী দুইজন। মোটরসাইকেল থেকে নেমেই কোমর থেকে অস্ত্র বের নিচতলার ফ্ল্যাট লক্ষ্য করে দুই রাউন্ড গুলি করে পালিয়ে যায়।


একই জায়গায় গত ২৪ মার্চ তিনজন মোটরসাইকেল আরোহী এসে নিচতলার একটি কক্ষে ঢুকে দুই রাউন্ড গুলি করেছিল সন্ত্রাসীরা। গুলি করার সেই দৃশ্য আবার ফোনে ভিডিও করেছিল তারা।


শের শাহশুরী রোডে চন্দ্রিমা মডেল টাউনের পরিচালক মনির আহমেদের অফিস।


চন্দ্রিমা মডেল টাউনের পরিচালক মনির আহমদ জানান, শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন পরিচয়ে বিদেশি একটি নাম্বার থেকে ফোন করে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেয়ায় এর চারদিন পরই গুলির ঘটনা ঘটে।


তিনি বলেন, ‘আমাকে কল দিয়ে বলে ঈদের বকশিস হিসেবে ইমন ৫০ লাখ টাকা চেয়েছে। তার পরিচয় জানতে চাইলে, সে ইমনের ছোট ভাই পরিচয় দেয়। পরে আমি ইমনকে ফোন করতে বললে, আমাকে সে বলে- আপনি বেশি বোঝেন। ২০ তারিখে চাঁদা চেয়েছে, ২৪ তারিখ আমার বাসার নিচে এসে গুলি করে গেছে।’


আরও পড়ুন: খুলনায় যুবককে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা


পরপর এমন গুলির ঘটনায় এলাকার মানুষ  আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তাকেই দায়ী করেছেন তারা।


এলাকাবাসী জানান, আতঙ্কে আছে এলাকাবাসী। প্রশাসন কি করছে কেউ জানে না। অথচ প্রশাসনের উচিত গুরুত্ব দিয়ে বিষয়গুলোর সমাধান করা, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।’


এ ঘটনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের নাম চাঁদা চাওয়া হলেও ঘটনায় জড়িত এক আসামি জাভেদকে গ্রেফতারের পর আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলালের নাম আসে।

ছাড়া পাওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসীরা। ছবি: সংগৃহীত 


এতোদিন বাকি আসামিদের গ্রেফতার করতে না পারলেও পুলিশ বলছে, জড়িত সবাইকেই আনা হবে আইনের আওতায়।


ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. আলমগীর কবির বলেন, ‘এর আগে এ কাজে যে মোটরসাইকেল ব্যবহার হয়েছিল, সেটি উদ্ধার করা হয়েছে এবং একজন আসামিও গ্রেফতার করা হয়েছে।’


তিনি আরও বলেন, ‘এসব ঘটনায় পুলিশ কাজ করছে, ডিবি কাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরা এ ব্যাপারে আন্তরিক।’


অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, একই প্রতিষ্ঠানে দুইবার গুলির ঘটনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চরম ব্যর্থতা। আগের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করা গেলে ঘটনার পুনরাবৃত্তি নাও হতে পারতো।


আরও পড়ুন: রাজধানীতে চাঁদা আদায়ের সময় গণপিটুনিতে ২ জনের মৃত্যু


সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক ড. তৌহিদুল হক বলেন, ‘পুলিশ যে এটা মনিটরিং করতে পারছে বা শীর্ষ সন্ত্রাসীদের অপরাধ প্রবণতা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে, সে দৃষ্টান্ত কিন্তু আমরা দেখছি না।’


৫ আগস্টের জামিনে বের হওয়া সন্ত্রাসীদের যথাযথ নজরদারি অভাবেই চাঁদাবাজির ঘটনা কমছে না বলেও মত বিশ্লেষকদের।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন