রোববার (৫ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনের দ্বিতীয় তলায় জেলা লিগ্যাল এইডের কার্যালয়। সিনিয়র সহকারী জজ খালেদ মিয়া লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দুপুরে লিগ্যাল এইড আদালতে স্বামী-স্ত্রীর দেনমোহর মামলার আপস মিমাংসার শুনানি চলছিল। ওই সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন নিজেকে পরিচয় দেয়া সদর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান খান। তিনি একটি পক্ষ নিয়ে বিচারকের আদেশ ঘোষণার সময় উত্তেনাজনাপূর্ণ মন্তব্য করেন ও সহকারী জজ খালেদ মিয়াকে হুমকি দেন। পরে সহকারী জজ খালেদ মিয়া কোর্ট পুলিশ ডেকে সোলায়মানকে আটক করার নির্দেশ দেন। পুলিশ দুপুর দেড়টার দিকে তাকে আটক করে কোর্টের হাজতখানায় রাখেন।
এরপর বিকেলে সহকারী জজ খালেদ মিয়া বাদী হয়ে একটি মামলার আবেদন করেন। বিকেলে ওই মামলা অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চাঁদনী রুপমের আদালতে পাঠানো হয়। এরপরই বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা ও স্থানীয় বিএনপির নেতারা ওই ব্যক্তিকে ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য তৎপর হয়ে ওঠেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সোলায়মানকে সহকারী জজ খালেদ মিয়ার কক্ষে আনা হলে সেখানে বিএনপিপন্থি আইনজীবী ও বিএনপি নেতাদের উপস্থিতিতে সহকারী জজের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান।
আরও পড়ুন: আন্দোলনের মূল দায়িত্ব পালন করেছে তারেক রহমান: সালাউদ্দিন টুকু
পরে এমন আচরণ আর কখনও করবেন না এমন মুচলেকা দেয়ার পর তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। সন্ধ্যা ৭টার দিকে সোলায়মানকে তার স্বজন ও বিএনপির নেতারা আদালত থেকে নিয়ে যান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নিজেকে সদর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দেয়া সোলায়মান খান বলেন, ‘আমার এক প্রতিবেশী ছেলের সঙ্গে তার স্ত্রীর ঝামেলা ছিল। সেই ব্যাপারে তার সঙ্গে আদালতে গিয়েছিলাম। সেখানে বসে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। পরে বিষয়টি সমাধান হয়ে গেছে।
এদিকে সোলায়মান খান যুবদলের কেউ না বলে দাবি করেছেন জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন বিদ্যুৎ। তিনি বলেন, ‘সোলায়মান খান যুবদলের কেউ না। শুনেছি বিচারকের সঙ্গে খারাপ আচরণ করায় পুলিশ তাকে আটক করেছে।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে বললেন বিএনপি নেতা
জানতে চাইলে শরীয়তপুর জজ কোটের পিপি মনিরুজ্জামান দীপু বলেন, ‘বিষয়টি আমার দৃষ্টিগোচর হয়নি। আদালতের ও আইনজীবীদের কোনো পক্ষও বিষয়টি আমাকে জানায়নি। সাংবাদিকদের কাছেই প্রথম শুনেছি।’
এ ব্যাপারে শরীয়তপুর আদালতের পুলিশ পরিদর্শক শিমুল সরকার বলেন, ‘একজন সহকারী জজের মৌখিক নির্দেশে দুপুরে এক ব্যক্তিকে জজ কোটের দ্বিতীয়তলা থেকে আমাদের হেফাজতে রাখা হয়েছিল। পরে সন্ধ্যার দিকে বিচারকের নির্দেশে মুচলেকা নিয়ে বিএনপিপন্থি এক আইনজীবীর জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়।’