বান্দরবান জেলায় প্রথমদিকে দুয়েকজন চাষি ড্রাগন ফলের চাষাবাদ শুরু করলেও বর্তমানে জেলার সদর উপজেলার চিম্বুক পাহাড়, কুহালংসহ রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচিসহ বিভিন্ন উপজেলাতে বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে ড্রাগন ফলের চাষ। সবুজ পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে ড্রাগন বাগান। গাছে গাছে ঝুলে আছে রঙিন ফল ড্রাগন।
পাহাড়ের মাটি ও আবহাওয়া ড্রাগন চাষের উপযোগী হওয়ায় ফলনও হচ্ছে ভালো। প্রতি বছর এপ্রিল মে মাসে জমি তৈরি করে লাগানো হয় ড্রাগন চারা। মাস দুয়েক পরিচর্যার পর পরিপক্ব হলে জুন জুলাইয়ে বাজারে বিক্রির উপযুক্ত হয় ড্রাগন ফল। বছরে একটি বাগান থেকে ৩ থেকে ৪ বার ফল আহরণ করা যায়।
আকারে বড় খেতে সুস্বাদু ও দাম সীমিত হওয়ায় বাজারে এর চাহিদাও রয়েছে ব্যাপক। প্রতি কেজি ড্রাগন ফল বাজারে বিক্রি হয় ১৫০ থেকে ৩০০ টাকায়। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে পাইকাররা এখানকার ড্রাগন ফল নিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। ফলন ভালো হওয়ায় বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে বাগানিরা।
আরও পড়ুন: দিনে কোটি টাকার বেচাকেনা, গৌরীনাথপুরে ড্রাগন ফলের জমজমাট ব্যবসা
কুহালং ইউনিয়নের হেডম্যান পাড়ার বাসিন্দা প্রুনুমং মারমা বলেন, দীর্ঘদিন অনলাইনের ভিডিও দেখে ও বিভিন্ন জেলায় গিয়ে প্রশিক্ষণ নেয়ার পর ২০২২ সালে দেড় একর জায়গায় শুরু করেছিলাম ড্রাগন ফলের বাগান। বর্তমানে বাগানে প্রায় ৮ হাজার ড্রাগন চারা রয়েছে, যেখানে প্রতিটি গাছে এসেছে ফুল ও ফল। চলতি বছর প্রথম বাগান থেকে ড্রাগন বিক্রি করে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা আয় হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমার বাগানের ড্রাগন ফলের আকার বড়, খেতে সুসাধু, দেখতে সুন্দর হওয়ায় ব্যাপারীরা বাগানে এসে ড্রাগন সংগ্রহ করে নিয়ে যায়, বাজারে গিয়ে বিক্রি করতে হয় না।
এদিকে আবাদের পাশাপাশি ফলন বাড়াতে কৃষকদের হাতে কলমে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেয়ার কথা জানান বান্দরবান কৃষি বিভাগের উপপরিচালক এম.এম শাহ্ নেয়াজ। তিনি বলেন, বান্দরবানে আগে শখের বসে অনেকে ড্রাগন বাগান করলেও বর্তমানে অনেক তরুণ উদ্যোক্তা বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন বাগান করছে এবং তারা সফলও হয়েছে। ফলন বাড়াতে এসব ড্রাগন চাষিদের কীভাবে ফল সংগ্রহ করতে হবে, সার কীভাবে দিতে হবে, চারা কীভাবে রোপণ করতে হবে ইত্যাদি বিষয়ে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছর জেলায় ৭৫ হেক্টর জমিতে ড্রাগন ফলের আবাদ হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২০ মেট্রিক টন।
]]>