‘বানৌজা বিশখালি’ যুদ্ধজাহাজ দেখে উচ্ছ্বসিত দর্শনার্থীরা

২ দিন আগে
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে খুলনায় সর্বসাধারণের জন্য প্রদর্শিত হলো নৌ-বাহিনীর যুদ্ধ জাহাজ বানৌজা বিশখালি।

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খুলনার বিআইডব্লিউ ঘাটে আধুনিক সমরাস্ত্রে সজ্জিত এই যুদ্ধ জাহাজ দেখে উচ্ছ্বসিত ছিলেন দর্শনার্থীরা। বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী খুলনা অঞ্চল-এ প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করে।

 

দর্শনার্থীরা ঘুরে ঘুরে দেখছেন জাহাজের বিভিন্ন অস্ত্র, নেভিগেশন সিস্টেম, কন্ট্রোল রুম, ডেক এবং নিরাপত্তা সরঞ্জাম। নৌ কর্মকর্তারা ব্যাখ্যা দিচ্ছেন প্রতিটি যন্ত্রের কাজ, এর ব্যবহার এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে এর গুরুত্ব সম্পর্কে।

 

বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে নব সংযোজিত আধুনিক যুদ্ধজাহাজ বানৌজা বিষখালি-এর দৈর্ঘ্য ৫১ দশমিক ৬ মিটার এবং প্রস্থ ৭ দশমিক ৫ মিটার। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২১ নটিক্যাল মাইল বেগে চলতে সক্ষম এই জাহাজটি অত্যাধুনিক অস্ত্র ও প্রযুক্তিতে সজ্জিত। এর প্রধান অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ৪০ মিলিমিটারের বফর গান এবং দুটি ১২ দশমিক ৭ মিলিমিটারের হেভি মেশিনগান। এছাড়া রয়েছে মাইন লেইং রেল, সারভেইল্যান্স রাডার, জিপিএস, ইকো-সাউন্ডার সিস্টেম, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি।

 

আরও পড়ুন: ভূমিকম্পে হতাহতদের জন্য জামায়াত আমিরের গভীর শোক

 

জাহাজে উঠেই বিশেষ করে শিশুরা উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে। যুদ্ধজাহাজে থাকা অস্ত্র ও সরঞ্জামগুলো নিয়ে তাদের কৌতূহলের শেষ ছিল না। অন্যদিকে প্রবীণ দর্শনার্থীরাও দেশের নৌ সক্ষমতা দেখে মুগ্ধতা প্রকাশ করেন।

 

খুলনা পাবলিক কলেজের শিক্ষার্থী আবিদুর রহমান বলেন, বন্ধুদের নিয়ে জাহাজ দেখতে এসেছি। আগে কখনও সামনা সামনি যুদ্ধ দেখিনি। এখানকার কর্মকর্তারা আমাদের সুন্দর করে প্রতিটি জিনিস বুঝিয়ে দিয়েছেন। জাহাজ দেখতে পেরে নৌ-বাহিনী সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পারলাম।

 

স্কুল পড়ুয়া দুই সন্তান নিয়ে জাহাজ দেখতে আসেন স্কুল শিক্ষক আয়েশা খাতুন। তিনি বলেন, বাচ্চাদের স্কুল ছুটি থাকায় ওদের যুদ্ধ জাহাজ দেখাতে নিয়ে আসলাম। ওরা খুবই উচ্ছ্বসিত। প্রতিটি জিনস আগ্রহ নিয়ে দেখেছে ওরা। দিন দিন আমাদের দেশের নৌ-বাহিনীর সক্ষমতা বাড়ছে। আমরা আশা করি সামুদ্রিক নিরাপত্তা রক্ষায় এসব জাহাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

 

নৌ কর্মকর্তারা জানান, কেবল যুদ্ধ প্রস্তুতিই নয়, সামুদ্রিক নিরাপত্তা, জলদস্যু দমন, চোরাচালান প্রতিরোধ, সমুদ্র অঞ্চলের সম্পদ রক্ষা, পরিবেশ সংরক্ষণ, জরুরি উদ্ধার ও দুর্যোগ-ত্রাণ কার্যক্রমেও জাহাজটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবে।

 

আরও পড়ুন: রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালনে আলেমদের এগিয়ে আসতে হবে: ধর্ম উপদেষ্টা

 

বানৌজা বিষখালি জাহাজের অধিনায়ক বলেন, লে: কমান্ডার আফজালুল আলম বলেন, জাহাজটি দেশের সামুদ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সংযোজন। আধুনিক সব প্রযুক্তি এখানে যুক্ত করা হয়েছে। আজ জনগণকে এটি দেখানোর সুযোগ পেয়ে আমরা আনন্দিত। এ ধরনের উদ্যোগ নৌবাহিনীকে জনগণের আরও কাছে নিয়ে আসে।

 

বাংলাদেশের নিজস্ব কারিগরি দক্ষতায় তৈরি এই জাহাজটি খুলনা শিপইয়ার্ডে ২০১৯ সালে নির্মাণ শুরু হয়। নির্মাণ শেষে গত বছর ২২ নভেম্বর বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয় এবং একই মাসে খুলনায় এর কমিশনিং সম্পন্ন হয়।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন