শস্যের পাশাপাশি আমিষ উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন অনেক দেশের কাছে উদাহরণ। মিঠা পানির মাছ আহরণে বিশ্বে আমাদের অবস্থান দ্বিতীয়, আর মুরগি উৎপাদনে দক্ষিণ এশিয়ায় তৃতীয়। এক দশকে গবাদিপশুর উৎপাদন বেড়েছে ১৪২ শতাংশেরও বেশি।
কৃষিখাতে মৎস্য ও প্রাণীর অংশগ্রহণ বাড়লেও এ খাতে শস্যের তুলনায় বরাদ্দ, ভর্তুকি ও ঋণ সুবিধা তেমন নেই। যা দিনদিন বাড়িয়ে দিচ্ছে উৎপাদন খরচ, যার প্রভাব গিয়ে পড়ছে ভোক্তাদের উপর। খামারিরা বলছেন, খাবার ও ওষুধের দাম অনেক বেশি। এতে লাভ উঠিয়ে খামার টিকিয়ে রাখা কঠিন। ফলে বাধ্য হয়ে অনেক খামারি কাজ বন্ধ করে দিচ্ছেন।
ফিড উৎপাদনকারীরা বলছেন, দেশীয় কাঁচামাল কিনতে মধ্যবর্তী স্তরের ভোগান্তি ও আমদানিতে উচ্চ শুল্কের চাপে রয়েছেন তারা। যার প্রভাব পড়ছে বাজারে।
আরও পড়ুন: রাজধানীর যেসব স্থানে বসবে কোরবানির পশুর হাট
ফিড ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, সাধারণ ভোক্তাকে কম খরচে মাছ, মাংস, ডিম-দুধ খাওয়াতে চাইলে ফিডের দাম কমানোর বিকল্প নেই। এজন্য শুল্ক কমাতে হবে। পাশাপাশি চাষিদের জন্য স্বল্পসুদে ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে।
টাকার অঙ্কে বাজেটের আকার বাড়লেও সবশেষ ৫ অর্থবছরে ৪ বারই কৃষিখাতে বরাদ্দ ছিল গড়ে মোট বাজেটের সাড়ে ৫ শতাংশ। এর মধ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপখাত পেয়েছে নামমাত্র বরাদ্দ।
এ পরিস্থিতিতে সামগ্রিক কৃষিতে বিরাট অবদান রাখা এই উপখাতে বরাদ্দ-ভর্তুকি বাড়ানোর তাগিদ কৃষি অর্থনীতিবিদদের। কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের জন্য যেভাবে আলাদাভাবে ভর্তুকি দেয়া হয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জন্য আলাদাভাবে সেটি রাখা হয় না। এ খাতে যেসব উপকরণ ব্যবহার করা হয় সেগুলোর দাম প্রায়ই বেড়ে যায়, বিশেষ করে খাবারের। এতে ভর্তুকি দিলে দাম কমবে, ফলে ভোক্তাও কম দামে পণ্য পাবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, আগামী বাজেটে কৃষিখাত সংশ্লিষ্ট ৫ মন্ত্রণালয়ের জন্য ৪৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হতে পারে। যেখানে ভর্তুকি থাকতে পারে ১৮ হাজার কোটি টাকা।
]]>