বাজেট গতানুগতিক, নেই নতুনত্ব: জামায়াত

২ সপ্তাহ আগে
জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী প্রথম বাজেটে নতুন বাংলাদেশ পুনর্গঠনের প্রত্যয় আশানুরূপভাবে প্রতিফলিত হয়নি বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

সোমবার (২ জুন) বাজেট ঘোষণার পর দলটির পক্ষ থেকে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাছুম এমন প্রতিক্রিয়া জানান।

 

তিনি বলেন, ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার এক বাজেটে নতুন বাংলাদেশ পুনর্গঠনের প্রত্যয় আশানুরূপভাবে প্রতিফলিত হয়নি। পূর্বের বাজেটের মতো এটি একটি গতানুগতিক বাজেট। প্রস্তাবিত বাজেটের সঙ্গে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের মূল বাজেটের মোটা দাগে খুব একটা তফাৎ পরিলক্ষিত হয়নি। বাজেটে ব্যয় না বাড়লেও তেমন কোনো ব্যয় কমেওনি, এতে কোনো নতুনত্ব নেই।

 

জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, এই বাজেটে বড় অংকের ব্যয় মেটাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দেয়া হয়েছে। গত অর্থবছরেও এর কাছাকাছি অর্জন করা সম্ভব হয়নি। যা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ বলে মনে আমরা মনে করছি।

 

তিনি বলেন, বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতি বাজেট বাড়িয়ে ২ লাখ ৬৬ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যার একটি বড় অংশ আসবে বৈদেশিক উৎস থেকে। বাজেটে বিদেশ নির্ভরতা কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

 

আরও পড়ুন: নবায়নযোগ্য উৎস থেকে ৩০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য

 

বাজেটে কর বাড়ানোর বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বাজেটে বিভিন্ন ধরনের পরোক্ষ কর বাড়ানোর মাধ্যমে রাজস্ব বাড়ানোর উদ্যোগ দেখা গেলেও প্রত্যক্ষ কর বাড়ানোর তেমন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। পরোক্ষ কর বাড়ানোর কারণে দেশের সাধারণ মানুষকে এর ভার বহন করতে হবে।

 

বাজেটে স্থানীয় শিল্পের জন্য আশার আলো নেই জানিয়ে তিনি আরও বলেন, স্থানীয় শিল্পের কর অবকাশ ও ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা সংকুচিত করা হয়েছে। এতে দেশীয় পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়বে। পাশাপাশি এসি, ফ্রিজ, মোবাইল ফোন এবং এলইডির দাম বাড়ায় ভোক্তার খরচও বাড়বে।

 

অপরদিকে সুতার আমদানি শুল্ক বাড়ানোয় আরএমজি সেক্টরে উৎপাদন ব্যয় বাড়বে। ফলে তৈরি পোশাক শিল্পের রফতানির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

 

শিক্ষা সামগ্রীর দাম কমালেও শিক্ষা খাতে মোট বাজেট কমানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য খাতে উপকরণ, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি, কৃষি কাজে ব্যবহৃত সার-কীটনাশকসহ অন্যান্য পণ্যের দাম কমানো হয়েছে যা আশাব্যঞ্জক। এছাড়াও কোল্ড স্টোরেজ খরচ কমানোর কারণে কৃষকদের জন্য কিছুটা স্বস্তির কারণ হবে।

 

 

 

বাজেটে জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা প্রদান, সামাজিক সুরক্ষা বৃদ্ধি এবং আর্থিক সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য যে বরাদ্দ রাখা হয়েছে তা প্রশংসার দাবি রাখে বলেও মন্তব্য করেন জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল।

 

তবে মুদ্রাস্ফীতি কমিয়ে ৬.৫ শতাংশ করার কথা বলা হলেও বাজেটে এ লক্ষ্য অর্জনের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ নেই বলে অস্পষ্টতা তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন জামায়াতের এই শীর্ষ নেতা।

 

বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে তিনি বলেন, বিদেশে পাচারকৃত অর্থ এবং অন্যান্য অবৈধ অর্থ উদ্ধার করে ফিরিয়ে আনার স্পষ্ট কোনো পরিকল্পনা বাজেটে লক্ষ করা যায়নি, যা জাতিকে হতাশ করবে। এছাড়া কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বাড়ানো হয়েছে, যা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। এই অপচেষ্টা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন মাওলানা এটিএম মাছুম। 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন