ঈদের ছুটির সঙ্গে নির্বাহী আদেশের ছুটি ও সাপ্তাহিক ছুটির দিনসহ টানা ১০ দিনের ছুটি পেয়েছিল রাজধানীবাসী। ছুটি কাটিয়ে এখন ঢাকার পথে মানুষ। এতে অনেকটাই ফাঁকা রাজধানীর বাজারগুলো। নেই চিরচেনা ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাক, কোনো কোলাহল।
শুক্রবার (১৩ জুন) রাজধানীর নয়াবাজার ও কারওয়ান বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, বিক্রেতারা পণ্য সাজিয়ে বসে আছেন, তবে দেখা নেই তেমন ক্রেতার। বিক্রেতার সংখ্যাও বেশ কম। এতে অনেকটাই কম দামে বিক্রি হচ্ছে বেশিরভাগ নিত্যপণ্য।
আরও পড়ুন: আরও কমলো মুরগির দাম, সবজিতে স্বস্তি
বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে পণ্য আছে, কিন্তু ক্রেতা নেই। এতে দাম কমেছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা আনিস বলেন, ঈদের ছুটি শেষে মানুষ এখনও ঢাকায় ফেরেনি। বাজারে তেমন একটা ক্রেতা নেই। পণ্য বিক্রি করব কার কাছে?
দাম কমায় স্বস্তিতে ভোক্তারও। তারা বলছেন, বাজারে ক্রেতা না থাকায় বেশি দরদাম করতে হচ্ছে না। তুলনামূলক স্বস্তাতেই পাওয়া যাচ্ছে বেশিরভাগ পণ্য। আবিদ নামে এক ক্রেতা বলেন, হাতেগোণা দুই-একটি ছাড়া দাম কমেছে বেশিরভাগ পণ্যের। শাক-সবজির দাম বেশি কমেছে, মাছের দামও কিছুটা কমতির দিকে রয়েছে; মুরগিতেও স্বস্তি আছে।
বাজারে প্রতি কেজি করলা ৪০ টাকা, বরবটি ৩০-৪০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৩০ টাকা, আলু ২০-২৫ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা লতি ৪০ ও পটোল ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে কেজি প্রতি ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে টমেটো। আর প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়।
নতুন করে না কমলেও স্বস্তিতে রয়েছে ব্রয়লার মুরগির বাজার। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫০ টাকা টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে কিছুটা বেড়ে সোনালি মুরগি ২৫০-২৬০ টাকা, দেশি মুরগি ৬৫০-৬৮০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৬০-২৮০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকায়।
বাজারে স্থিতিশীল রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দামও। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি খাসির মাংস ১ হাজার ২০০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ টাকায়।
আরও পড়ুন: ‘হিসাবকিতাব বুঝি না, বাজারে স্বস্তি চাই’
মোটামুটি স্বাভাবিক রয়েছে মাছের বাজারও। ক্রেতারা বলছেন, দাম সাধ্যের মধ্যেই আছে তবে বাজারে সরবরাহ কম সব ধরনের মাছের। বাজারে প্রতিকেজি চাষের কৈ ৩৫০ টাকা, রুই ৩৫০ থেকে ৩৮০ টাকা, কাতল ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা, পাবদা ৩৫০ টাকা, চাষের টেংরা ৪৫০ টাকা, নদীর টেংরা ৬০০ টাকা ও ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ২০০ টাকায়।
অপরিবর্তিত রয়েছে মসলার বাজারও। বর্তমানে মানভেদে এলাচ বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৬০০ থেকে ৫ হাজার ৩০০ টাকা কেজি দরে। এ ছাড়া বাজারে প্রতিকেজি দারুচিনি ৫৬০ টাকা, জিরা ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা, লবঙ্গ ১ হাজার ৪৫০ টাকা, গোলমরিচ ১ হাজার ২০০ টাকা, কিশমিশ ৮৫০ থেকে ৬৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ধনিয়া ১৮০ থেকে ২৪০ টাকা, বড় এলাচ ২ হাজার ৮৫০ টাকা, কাজুবাদাম ১ হাজার ৭৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা ও চীনাবাদাম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়।
আগের দামে বিক্রি হচ্ছে আদা, রসুন ও পেঁয়াজও। বাজারভেদে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। এ ছাড়া প্রতিকেজি আদা মানভেদে ১২০-১৮০ টাকা এবং দেশি রসুন ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা ও আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়।
]]>