বাকৃবিতে স্পিচ থেরাপিতে ফিরলো নারীর বাকশক্তি

২ সপ্তাহ আগে
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) অবস্থিত সেন্টার ফর দ্য রিহ্যাবিলিটেশন অফ দ্য প্যারালাইজড (সিআরপি) ময়মনসিংহ সেন্টারে স্পিচ থেরাপির মাধ্যমে বাকশক্তি হারানো এক নারীর মুখে ভাষা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিষয়টি নিশ্চিত করেন সুমির মুখের ভাষা ফেরত পেতে অবদান রাখা সিআরপি ময়মনসিংহ সেন্টারের স্পিচ অ্যান্ড ল্যাংগুয়েজ থেরাপিস্ট সাবরিনা হোসেন তৃষা।

 

তিনি জানান, ৩৫ বছর বয়সি রোগী সুমি দীর্ঘদিন ধরে গ্লোবাল অ্যাফেসিয়া, ওরো-ফ্যারিঞ্জয়াল ডিসফ্যাজিয়া ও ডিসলেক্সিয়ায় ভুগছিলেন, যার ফলে তিনি স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে, গিলতে এবং অনুভূতি প্রকাশ করতেও অক্ষম ছিলেন। তবে মাত্র ১২টি স্পিচ থেরাপি সেশনের মধ্যেই তার অবস্থার দৃশ্যমান উন্নতি ঘটে।

 

জানা যায়, এক রাতে দুর্বৃত্তদের হামলায় মাথায় গুরুতর আঘাত পান ময়মনসিংহের বাসিন্দা সুমি। এরপর থেকেই তার বাকশক্তি, গলাধঃকরণ ক্ষমতা এবং ভাষা প্রকাশের সক্ষমতা হারিয়ে যায়। তখন নিউরো-সার্জনরা জানিয়েছিলেন, তিনি আর কখনোই কথা বলতে পারবেন না।

 

পরবর্তীতে সুমিকে বাকৃবির সিআরপি ময়মনসিংহ সেন্টারে আনা হলে স্পিচ অ্যান্ড ল্যাংগুয়েজ থেরাপিস্ট সাবরিনা হোসেন তৃষার তত্ত্বাবধানে শুরু হয় থেরাপি। ধাপে ধাপে চিকিৎসা চলাকালের তিন মাসেই দৃশ্যমান উন্নতি দেখা যায়।

 

আরও পড়ুন: বাকৃবির জুলাই-৩৬ হলের ১৫ ছাত্রী বহিষ্কার

 

এ বিষয়ে থেরাপিস্ট সাবরিনা হোসেন তৃষা বলেন, ‘আমি এই পেশাটি বেছে নিয়েছি কারণ এটি অনন্য এবং নতুন। আমি মনে করি, একজন অনুসন্ধানপ্রবণ ব্যক্তি হিসেবে আমার দক্ষতা এই পেশার জন্য উপযুক্ত। আমি এতে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারি।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপি বাংলাদেশে এখনও অনেকটাই অজানা একটি ক্ষেত্র। অথচ আমরা যে সমস্যাগুলোর চিকিৎসা করি যেমন কথা বলা, গিলতে পারা, কণ্ঠস্বর, তা মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। দ্রুত থেরাপি শুরু করলে রোগী দ্রুত উন্নতি লাভ করেন।’

 

তিন মাসের চিকিৎসা শেষে সুমি এখন আবার কথা বলতে পারছেন। প্রথমে ছোট শব্দ, পরে বাক্য, এরপর ধীরে ধীরে পূর্ণাঙ্গভাবে নিজেকে প্রকাশ করতে শুরু করেন তিনি।

 

থেরাপিস্ট তৃষা মনে করেন, দেশের আরও অনেক গ্লোবাল অ্যাফেসিয়া বা ডিসফ্যাজিয়া রোগীর জন্য এই ঘটনা অনুপ্রেরণা হয়ে উঠতে পারে। সময়মতো চিকিৎসা শুরু করলে স্পিচ থেরাপির মাধ্যমে অনেকেই সুস্থতা লাভ করতে পারেন।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন