বাংলাদেশের প্রতি সন্তানদের টান নিয়ে হামজার আবেগঘন স্বীকারোক্তি

২ সপ্তাহ আগে
হামজা চৌধুরী বড় হয়েছেন ইংল্যান্ডে, তবে তার বাবার জন্মভূমি বাংলাদেশের প্রতি তার টান নেহাতি কম নয়। আর টান থাকবেই বা না কেন, হামজা চৌধুরী নিজেও তো বাংলাদেশেরই একজন। শুধু কী হামজা, এ দেশের প্রতি তার সন্তানদের টানও কম নয়।

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রবি আজিয়াটা পিএলসি সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে হামজা চৌধুরীকে এক বছরের জন্য তাদের নতুন শুভেচ্ছাদূত ঘোষণা করেছে। হামজা চৌধুরী বাংলাদেশের জাতীয় ফুটবল দল ও ইংলিশ ক্লাব লেস্টার সিটির ফুটবলার। দেশের হয়ে খেলা প্রথম ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ফুটবলারও তিনি। 

 

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে রবির করপোরেট কার্যালয়ে আজ সকালে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী জিয়াদ সাতারা, চিফ কমার্শিয়াল অফিসার শিহাব আহমাদ, চিফ করপোরেট ও রেগুলেটরি অফিসার শাহেদ আলম এবং নতুন শুভেচ্ছাদূত হামজা চৌধুরী।     

 

সংবাদ সম্মেলনে জিয়াদ সাতারা বলেন, ‘হামজা চৌধুরীকে শুভেচ্ছাদূত হিসেবে পেয়ে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। বাংলাদেশের হয়ে খেলতে হামজা চৌধুরী নিজের শিকড়ে ফিরে এসে দেশপ্রেমিক চেতনার প্রকাশ ঘটিয়েছেন। রবির ‘‘বিলিভ ইউ ক্যান” প্রচারণার মূল ভাবনাও তা-ই।’ মঞ্চ সাজানো হয় হামজা চৌধুরীর ডিজিটাল ছবি দিয়ে। তাতে লেখা ‘সুপার ফুটবলার, রবি সুপারনেটে’। হামজা অনুষ্ঠানের মঞ্চে আসেন সকাল সোয়া ১০টায়।  

 

হামজা চৌধুরী রবির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘রবির সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমি আনন্দিত। আশা করি, বাংলাদেশের যুব সমাজকে অনুপ্রাণিত করতে পারব এবং দেশের ফুটবলের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি আরও উন্নত করতে সাহায্য করতে পারব।’ 

 

আরও পড়ুন: ইনিয়েস্তার বিরুদ্ধে গুরুতর প্রতারণার অভিযোগ

 

এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দেন হামজা। ১৮ নভেম্বর ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপের ম্যাচ জয়ের আশাবাদ জানিয়ে হামজা বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ আমরা ভারতের বিপক্ষে জিতব।’ 

 

গত মার্চে শিলংয়ে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক হয় হামজার। সেই থেকে বাংলাদেশে তাকে নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে। হামজার খেলা দেখতে ভরে যাচ্ছে গ্যালারি। ভারত ম্যাচের সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে ছয় মিনিটের মধ্যে। 

 

লেস্টার সিটির ফুটবলার হিসেবে হামজা এক সপ্তাহে যে বেতন পান, তা বাংলাদেশের পটভূমিতে অকল্পনীয়। ফলে কোনো করপোরেট চুক্তি, অর্থ- এসব তার কাছে দেশের প্রতি আবেগের চেয়ে আগে নয়। বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসাই আগে- এ কথা জানিয়ে হামজা বাংলাদেশকে নিয়ে নিজের অনুভূতির কথা বলেন। 

 

‘আমি বাংলাদেশের হয়ে কয়েক মাস হলো খেলছি। এখনো সত্যি বলতে অবাস্তব মনে হয় এই ভ্রমণটা। আমি শুধু চাই এই দেশের অংশ হয়ে গর্ব করতে এবং যেকোনোভাবে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে। বিশেষ করে আমার মা-বাবার জন্য।’ 

 

আরও পড়ুন: রোনালদোকে ‘ইতিহাসের সেরা’ মানতে নারাজ ব্রাজিলের রোনালদো

 

মাত্র এই কয়েকটা দিনের ব্যবধানেই বাংলাদেশের প্রতি তার সন্তানদের ভালোবাসা জন্মেছে। হামজা বলেন, ‘আমার বাবা এই দেশেই জন্মেছেন ও বড় হয়েছেন, তাই তাদের মুখে সেই হাসিটা দেখতে পাওয়াটাই আমার আসল প্রাপ্তি। প্রত্যেক সন্তানই চায় তার বাবা-মাকে গর্বিত করতে, আর আমি মনে করি আমি ভাগ্যবান যে পুরো জাতিকেই গর্বিত করতে পারি।’

 

এ নিয়ে চতুর্থবার বাংলাদেশে এলেন হামজা। এখানে এসে অনেক ভালোবাসা পান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি যে ভালোবাসা পাই, সেটা আমি খুব ভালোভাবে লালন করি। আমি চেষ্টা করি সেই ভালোবাসা ও সমর্থনটা সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করতে। যখনই আমি বাংলাদেশ ছাড়ি, আমার সন্তানেরা বলে, ওরা বাংলাদেশে ফিরতে চায়। ইনশাআল্লাহ, ওরা মার্চে আবার ফিরে আসবে।’ 

 

১৮ নভেম্বর এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। তার আগে ১৩ নভেম্বর নেপালের প্রীতি ম্যাচ খেলবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এই ম্যাচ দুটি খেলতেই সোমবার (১০ নভেম্বর) ঢাকায় এসেছেন হামজা।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন