গত সপ্তাহে (২ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা বাংলাদেশি পণ্যের ওপর নতুন করে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাংলাদেশের পণ্যের ওপর আগে থেকেই ১৫ শতাংশ শুল্ক ছিল। এখন আরও ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ঢুকতে সব মিলিয়ে ৫২ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে বাংলাদেশকে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বছরে বাংলাদেশের রফতানির পরিমাণ প্রায় ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন (৮৪০ কোটি) ডলার। এর বেশিরভাগই তৈরি পোশাক। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রফতানির পরিমাণ ছিল ৭ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন (৭৩৪ কোটি) ডলার। নতুন শুল্ক মওকুফের জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
বিষয়টি নিয়ে দ্য নিউইয়র্ক টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নোবেলজয়ী মার্কিন অর্থনীতিবিদ পল ক্রুগম্যান বলেন, বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানির ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করা এমন একটি পদক্ষেপ, যা আপনার একেবারেই নেয়া উচিত হয়নি। এটি মার্কিন ভোক্তাদের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়াবে এবং আমাদের নিরাপত্তার জন্য কিছুই করবে না।
আরও পড়ুন: ইসরাইলের ওপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহারের বিষয়ে যা বললেন ট্রাম্প
তিনি আরও বলেন, জাতীয় নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে দেশীয় উৎপাদনের পাশাপাশি বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর সঙ্গে ‘ফ্রেন্ডশোরিং’ বা নিকটবর্তী দেশগুলোর সঙ্গে ‘নিয়ারশোরিং’ গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। তবে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মতো দেশগুলোর ওপর শুল্ক আরোপ করা এই লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
এমনকি কানাডা ও মেক্সিকোর মতো প্রতিবেশী দেশগুলোর ওপরও শুল্ক আরোপ করা অযৌক্তিক বলে মনে করেন এই মার্কিন অর্থনীতিবিদ। সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পের বাণিজ্যনীতির সমালোচনা করে ক্রুগম্যান বলেন, বর্তমান প্রশাসন স্বাধীন দৃষ্টিভঙ্গি সম্পন্ন বিশেষজ্ঞদের পরিবর্তে এমন ব্যক্তিদের পরামর্শ গ্রহণ করছে, যারা কেবল শীর্ষ নেতৃত্বের পছন্দসই কথা বলেন।
উদাহরণ হিসেবে মার্কিন বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ রবার্ট লাইথিজারের কথা উল্লেখ করেন ক্রুগম্যান। বলেন, তার এই বন্ধু ওয়াশিংটনে বাণিজ্য সংরক্ষণবাদী হিসেবেই পরিচিত। বাণিজ্যের জগতে তিনি এক রকম শয়তান হিসেবে পরিচিত, যদিও নিজের কাজটা তিনি খুব ভালো বোঝেন, সে কারণে সব মহলেই তিনি শ্রদ্ধার পাত্র। তিনি স্বাধীনচেতা মানুষ; সে কারণে ট্রাম্প প্রশাসনে তার ঠাঁই হয়নি। হলে তিনি হয়তো বলতেন, বাংলাদেশের পণ্যে শুল্ক আরোপ করা যাবে না।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের নতুন শুল্ক হুমকি ভুলের ওপর আরেকটি ভুল: চীন