ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটি, সিডনি সেন্টার ফর পলিসি অ্যান্ড অ্যানালাইসিস এবং ডায়াস্পোরা এলাইন্স ফর ডেমোক্রেসির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলাদেশিরা মুক্ত আলোচনা ও চায়ের টেবিলের মতো এক অনানুষ্ঠানিক পরিবেশে তাদের প্রত্যাশা, চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ ভাবনা তুলে ধরেন।
আলোচনার সঞ্চালক হিসেবে ছিলেন- ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. খন্দকার আল ফরিদ উদ্দিন এবং গনভাবনা পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ড. ফয়সাল কবীর শুভ। অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য ছিল, বাংলাদেশের ফ্যাসিস্ট শাসনের অবসানের পর নতুন ধরনের স্বৈরাচারী শাসনের উদ্ভব প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টি করা।
আলোচনায় প্রধান বক্তা হিসেবে অংশগ্রহণ করেন বিশিষ্ট লেখক ড. ফাহাম আব্দুস সালাম, অস্ট্রেলিয়া সরকারের রেগুলেটরি সায়েন্টিস্ট ড. শামারুহ মির্জা, ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ও শিক্ষক ড. আবদুল্লাহ আল মামুন, এবং বাংলাদেশভিত্তিক থিংকট্যাংক গ্রুপ ব্রেইন-এর অর্থনীতিবিদ জ্যোতি রহমান।
বক্তারা জানান, ফ্যাসিস্ট শাসনের অবসানের পর বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে টেকসই করতে হলে প্রয়োজন রাজনৈতিক সংস্কার, প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহিতা এবং সামাজিক মূল্যবোধে রূপান্তর।
ড. শামারুহ মির্জা বলেন, 'অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন অর্জনের জন্য কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান অধিকার, ন্যায্য পারিশ্রমিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা অপরিহার্য।' তিনি অতীত বিএনপি সরকারের মেয়াদে নারী ও কন্যাশিশুদের ক্ষমতায়নের ধারাবাহিকতাকে ইতিবাচক উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন।
ড. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, 'প্রকৃত টেকসই উন্নয়ন হতে হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক, যেখানে কৃষক, জেলে, উদ্যোক্তা, সব শ্রেণির মানুষ উন্নয়নের সমান অংশীদার হবেন।' তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের খাল-খনন, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির মাধ্যমে প্রকৃতি ভিত্তি সমাধানের উপর জোর দেন।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাথে হাইকমিশনারের মতবিনিময়
অর্থনীতিবিদ জ্যোতি রহমান বলেন, 'বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধার এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অপরিহার্য। নব্বইয়ের দশকের রাজনীতিতে মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও যে প্রবৃদ্ধির ধারা বজায় ছিল, আজ বাংলাদেশকে সেই চেতনায় ফিরতে হবে।'
ড. ফাহাম আব্দুস সালাম বলেন, 'বাংলাদেশে কর্তৃত্ববাদী শাসনের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে একটি শক্তিশালী ও স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন অত্যাবশ্যক। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সব রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সংলাপ জরুরি।'
আলোচনায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন সেন্ট মেরিস মসজিদের ইমাম আবু হুরায়রা আজহারী, মানবাধিকার কর্মী ও শিক্ষক শিবলী সোহেল, ক্রীড়া সংগঠক ফরহাদ মাহবুব, স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মী সাঈদ সামনান, মাহবুব মোরশেদ এবং প্রবাসী সম্প্রদায়ের অন্যান্য প্রতিনিধিরা।
আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা রাজনৈতিক মতের ভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও যুক্তিনির্ভর আলোচনার মাধ্যমে গণতন্ত্রের পথরেখা নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সভার উপসংহারে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, বিশ্বাস, সহমর্মিতা ও নাগরিক অংশগ্রহণের ভিত্তিতে একটি সহিষ্ণু, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং প্রাণবন্ত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব, এবং সেই ভবিষ্যৎ এখন নাগালের মধ্যেই।
]]>
২ সপ্তাহ আগে
৩







Bengali (BD) ·
English (US) ·