তরুণ মুসলিম হিসেবে জোহরানের এজেন্ডা নিউইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশিসহ দক্ষিণ এশীয় অভিবাসীদের মধ্যে বিপুল সাড়া ফেলেছে। প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রু কুমোরকে পেছনে ফেলে প্রার্থিতা নিশ্চিত করার পর জোহরান তার সমর্থকদের ধন্যবাদ দিতে ভোলেননি।
২৪ জুন মধ্যরাতের পর সমর্থকদের উদ্দেশে দেয়া এক বক্তব্যে নিজের জয়ের পেছনে বাংলাদেশিদের অবদানের কথা তুলে জোহরান ‘বাংলাদেশি আন্টিদের’ ধন্যবাদ দেন। তিনি বলেন,
মাত্র কয়েক মাস আগেও, তার নামের পাশে ১ শতাংশ সমর্থন ছিল। ২০২১ সালে কুইন্স থেকে স্টেট অ্যাসেম্বলির সদস্য হিসেবে রাজনীতিতে তার পদচারণা শুরু হয়। ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিতে অভিজ্ঞ প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুয়োমোকে হারিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে।
আরও পড়ুন: নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী জোহরান মামদানি
নির্বাচনের আগে সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ভিডিওতে তিনি দক্ষিণ এশিয়ার প্রবাসী ভোটারদের জন্য বিভিন্ন বিনোদনমূলক প্রচারণার ভিডিও প্রকাশ করেন। এমনকি কিছু ভিডিওতে ভারতীয় বংশোদ্ভুত এই মেয়র প্রার্থী বাংলা ও হিন্দি ভাষায় ভিডিও পোস্ট করেন।
মামদানি নিজের প্রচারে ট্রাম্পবিরোধী অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন আগেই। তার মতে একজন প্রগতিশীল মুসলিম অভিবাসী হওয়ায় তিনিই ডোনাল্ড ট্রাম্পের সবচেয়ে বড় দুঃস্বপ্নের কারণ।
ফোর্বস ও সরকারি তথ্যমতে, মামদানির মোট সম্পদ ২ থেকে ৩ লাখ ডলারের মধ্যে। নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলির সদস্য হিসেবে তার প্রধান আয়ের উৎস বেতন। তার এ আর্থিক সক্ষমতা ট্রাম্পের বিলিয়ন ডলারের সম্পদের বিপরীতে এক নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতা উপস্থাপন করে।
বিশেষ করে ইসরাইল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে মামদানি যেভাবে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছেন, সেটি তাকে নিয়ে যায় বিতর্কের কেন্দ্রে। গাজায় ইসরাইলি হামলাকে তিনি গণহত্যা আখ্যা দিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, মেয়র হলে আইসিসি ওয়ারেন্ট অনুযায়ী নেতানিয়াহুকে গ্রেফতার করবেন। দলীয় পদে জয়ী হওয়ায় নিউ ইয়র্ক শহরের বাসিন্দাদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: পাক সেনাপ্রধানকে প্রশংসায় ভাসালেন ট্রাম্প
এক তরুণ আমেরিকান বলেন, ‘মামদানির প্রগতিশীল মানসিকতাকে আমি খুব সম্মান করি। আমি মনে করি, তিনি নির্বাচিত হলে আমাদের শহরকে সঠিক পথে নিয়ে যাবে।’
আরেকজন বলেন, ‘সত্যি বলতে, বিষয়টা নিয়ে আমি নিয়ে বেশ শঙ্কিত। যদিও আমি অ্যান্ড্রু কুয়োমোর খুব বড় ভক্ত ছিলাম না, তবুও আরও কিছু বিকল্প প্রার্থী থাকলে ভালো থাকতো।’
মামদানির এ ঐতিহাসিক জয়ের পরপরই সবচেয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছ থেকে। নিজ মালিকানাধীন সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেয়া পোস্টে মামদানিকে কমিউনিস্ট পাগল বলে কটাক্ষ করেন তিনি। এছাড়া, নিউইয়র্কের নতুন মেয়রের কণ্ঠস্বর, বুদ্ধিমত্তা এবং চেহারা নিয়েও উপহাস করেন তিনি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রেসিডেন্টের এই প্রতিক্রিয়া মামদানির জয়ের রাজনৈতিক তাৎপর্যকে আরও জোরালো করে তুলেছে। আগামী নভেম্বরে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে ভোট হবে।