শুক্রবার (৯ মে) সন্ধ্যায় খুলনার হোটেল সিটি ইন-এর কনভেনশন হলে ‘নেপাল-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সহযোগিতা’ শীর্ষক এক নেটওয়ার্কিং ইভেন্টে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।
ঢাকাস্থ নেপাল দূতাবাসের উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন খুলনার ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।
রাষ্ট্রদূত ভান্ডারী বলেন, ‘নেপাল একটি স্থলবেষ্টিত দেশ হলেও তার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে বাংলাদেশের ভূ-অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মোংলা বন্দর এবং বিদ্যমান রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার আরও কার্যকর ব্যবহার দুই দেশের মধ্যে পণ্য পরিবহনে অভাবনীয় সুযোগ এনে দিতে পারে।’
আরও পড়ুন: সুন্দরবনের মধু ঘিরে নতুন সম্ভাবনা
তিনি আরও বলেন, ‘নেপাল ও বাংলাদেশ উভয় দেশের রয়েছে অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও ইতিহাস। এসব মিলিয়ে দুই দেশের মধ্যে পর্যটন খাতে পারস্পরিক সহযোগিতার অপার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে সুন্দরবন ও হিমালয়কে ঘিরে পর্যটন বিনিময় বাড়ানো গেলে স্থানীয় জনগণ সরাসরি উপকৃত হবে।’
অনুষ্ঠানে খুলনার ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, ‘মোংলা বন্দরকে কেন্দ্র করে নেপালের সঙ্গে পণ্য আমদানি-রপ্তানির কার্যক্রম সম্প্রসারণ করলে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনীতি আরও সক্রিয় হবে। তাঁরা জানান, নেপাল ইতোমধ্যে বাংলাদেশের বাজারে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানিতে আগ্রহ দেখিয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশও তার উৎপাদিত পণ্য নেপালে রপ্তানির সুযোগ কাজে লাগাতে প্রস্তুত।’
বক্তারা বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন আন্তর্জাতিক পর্যটকদের অন্যতম গন্তব্য হতে পারে। নেপাল ও বাংলাদেশ যৌথভাবে এ অঞ্চলকে কেন্দ্র করে পর্যটন প্যাকেজ তৈরি করলে উভয় দেশের পর্যটন খাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
তারা আরও বলেন, ‘সুন্দরবনের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য এমনই এক ঐতিহ্য, যা আন্তর্জাতিকভাবে উপস্থাপন করতে পারলে এর আর্থিক সম্ভাবনা অনুধাবন করা যাবে। এতে শুধু পর্যটন নয়, স্থানীয় হস্তশিল্প, কৃষি ও পরিবহনখাতও লাভবান হবে।’
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরার বাজারে আমের সরবরাহ বেড়েছে, দাম না পেয়ে হতাশ চাষিরা
আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক আরও জোরদার করতে এই ধরনের নেটওয়ার্কিং সভা অত্যন্ত কার্যকর। এমন আয়োজন দুই দেশের উদ্যোক্তাদের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া, অংশীদারিত্ব এবং নতুন উদ্যোগ গ্রহণে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে নেপালের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা, ব্যবসায়িক পরিবেশ, ভ্রমণ-সহজীকরণ, এবং সরকারি নীতিমালার বিষয়ে তথ্য উপস্থাপন করেন দূতাবাসের কর্মকর্তারা।