এ দিকে বর্ষায় ভাঙন মোকাবেলায় প্রস্তুতির কথা জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড। পানি বাড়া-কমার সঙ্গে ভাঙছে অরক্ষিত নদীর পাড়। প্রতিরোধে সরকারি কোনো ব্যবস্থা না থাকায় আগেভাগেই ঘর-বাড়ি সরিয়ে নিয়েছেন অনেক বাসিন্দা।
জানা যায়, প্রতি বছর বর্ষা আসলেই ভাঙন দেখা দেয় কুড়িগ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমারের দুই পাড়জুড়ে। বৃষ্টি আর উজানের ঢলে ভাঙন শুরু হলে ঘরবাড়ি সরানোর সময়টুকু পান না নদীপাড়ের মানুষ। তাই এবার একটু আগেভাগেই ঘর-বাড়ি সরিয়ে নিয়েছেন নদ-নদীর তীরে থাকা বাসিন্দারা।
ভুক্তভোগীরা জানান, এবার বর্ষা শুরুর আগেই উজানের ঢলের ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়েছে অনেকেই। বছরের পর বছর ধরে অব্যাহত ভাঙনে হাজার হাজার পরিবার নিঃস্ব হলেও সরকারি কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ তাদের।
আরও পড়ুন: ভাঙন আতঙ্কে গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র পাড়ের বাসিন্দারা, হুমকিতে মসজিদ-বিদ্যালয়ও
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুরের বানিয়াপাড়া এলাকার লেবু মিয়া জানান, এই এলাকায় ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমারের মোহনা। এখানে একযুগ ধরে ভাঙন চললেও পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো কাজ করেনি। এরফলে এখানকার প্রায় শতাধিক পরিবার তাদের ঘর-বাড়ি নিয়ে অন্য জায়গায় চলে গেছে। আর যারা আছে তারা খুবই দুশ্চিন্তায়। কেন না উজান থেকে ঢল নামলে পুরো এলাকা নদীতে চলে যাবে।
এ দিকে বারবার নদীর কবলে পড়া বাসিন্দাদের আকুতি, এবার ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হোক। তা না হলে নিঃস্ব হয়ে পড়বে আরও হাজার হাজার পরিবার।
কুড়িগ্রামের উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মোল্লারহাট এলাকার শফিকুল ইসলাম জানান, ‘এ পর্যন্ত এই এলাকায় শতাধিক পরিবার ঘর-বাড়ি হারিয়েছে। আমরা চাই দ্রুত এসব এলাকায় ভাঙনরোধে কাজ করা হোক।’
আরও পড়ুন: বর্ষায় ভাঙন আতঙ্ক, পায়রার পাড়ে প্রতিদিনই চলছে বাঁচার লড়াই
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত নদ-নদীর ভাঙন কবলিত ২০টি পয়েন্টের মধ্যে ১৪টি পয়েন্টে জরুরি ভিত্তিতে অস্থায়ী প্রতিরোধের কাজ চলমান রয়েছে। বর্ষায় ভাঙন প্রবণ এলাকাগুলোতেও কাজ করা হবে।
জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমারের দুই পাড়ের দৈর্ঘ্য সাড়ে ৩০০ কিলোমিটারের বেশি। এরমধ্যে অরক্ষিত পাড় রয়েছে ৩০০ কিলোমিটার।