বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি- বেলার আয়োজনে বরিশালের বিডিএস মিলনায়তনে হয় জলাশয়ের দূরাবস্থা ও সংরক্ষণে করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভা। এসময় বক্তারা, বরিশালের পরিবেশ বিপর্যয়ের ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
পরিবেশবাদী সংগঠক শুভঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, বরিশাল শহরের ঐতিহ্যবাহী জেল খাল দিনের পর দিন ভরাট, দখল, দূষণ হচ্ছে প্রশাসনের চোখের সামনেই।
উন্নয়ন সংগঠক আনোয়ার জাহিদ অভিযোগ করেন, দুই যুগের ব্যবধানে শহরের মধ্যে থাকা ৪৬টি খালের মধ্যে এখন নামেমাত্র টিকে আছে ৩ থেকে ৪টি। তাছাড়া কেবল খালই নয়, পুকুর জলাশয়ও ভরাট, দখলে হারিয়েছে বরিশালের চিরচেনা পরিবেশের ধারা। আইনের বাস্তবায়ন না হওয়ায় প্রতিবাদে, গভীর উদ্বেগ জানান তিনি।
আরও পড়ুন: পলিথিন নয়, শপিং ব্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে: পরিবেশ উপদেষ্টা
বেলার নেট মেম্বার রনজিত দত্ত বলেন, বছরের পর বছর ধরে বরিশালের পরিবেশ রক্ষার আন্দোলন চালিয়ে আসছেন, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত সুফল পাচ্ছেন না। জলাশয় রক্ষার আইন প্রযোগ না হওয়ার ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
বেলার বরিশাল বিভাগীয় সমন্বয়কারী লিঙ্কন বাইন অভিযোগ করেন, বরিশাল শহরের খালগুলো প্রশাসনের নীরবতায় দখল হয়ে গেছে। ব্যক্তি তো বটেই, সরকারি পুকুরও ভরাট হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থার কর্মকর্তারা শক্তিশালী কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। সভায় অংশ নিয়ে, পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক
কাজী সাঈফুদ্দীন দাবি করেন তাদের লোকবল সংকট রয়েছে। তাছাড়া ব্যক্তি মালিকানার পুকুর ভরাট বিধিমালায় অনেক সময়ই পুকুর রক্ষা করতে পারেন না তারা। তবে অভিযোগ পেলে কার্যকরী পদক্ষেপ নেন জানিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সবাইকে সচেতন হবার আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: অভিযানে পলিথিন জব্দ ৪৬ হাজার কেজি, জরিমানা ২৩ লাখ টাকা
একই বক্তব্য দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, লুসিকান্ত হাজং। তিনি বলেন, পরিবেশ রক্ষা করতে না পারলে আমাদের সবার জন্য ভয়ংকর পরিস্থিতি বয়ে আনবে।
সেমিনারে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারী জানান, মাস্টার প্লানে ৪৬টি খালের নাম থাকলেও সব খাল নেই। রাতের আঁধারে ব্যক্তি মালিকানাধীন পুকুর ভরাট করে ফেলে তা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তবে সিটি করপোরেশন থেকে ৯শ’ কোটি টাকার খাল রক্ষার প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি। বলেন, প্রকল্পটি পাশ হলে বাংলার ভেনিসে রুপ পাবে বরিশাল। সভায় বরিশালের বিশিষ্ট নাগরিকরা অংশ নেন।