ববিতে কোষাধ্যক্ষকে অপসারণের দাবিতে শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি

১ দিন আগে
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এমনকি কোষাধ্যক্ষকে অপসারণ করা না হলে প্রশাসনিক ও একাডেমিক কাজ থেকে বিরত থাকার ঘোষণাও দেন শিক্ষকদের একটি বড় অংশ।

সোমবার (২ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় কোষাধ্যক্ষকে অপসারণ নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।


এর আগে নবনিযুক্ত কোষাধ্যক্ষ কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) আবু হেনা মোস্তফা কামাল খানকে দুর্নীতিবাজ ও স্বৈরাচারীর দোসর আখ্যা দিয়ে প্রতিবাদলিপিতে স্বাক্ষর করেন ববির ১১৬ শিক্ষক।


কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজ আশরাফুল হক বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার কোনো আমলাদের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে মেনে নিতে পারছি না। আমাদের অধিকাংশ শিক্ষক এই দাবির সঙ্গে একমত। আমরা সরকারকে অনুরোধ করবো যেন, এই সাবেক সেনা কর্মকর্তার নিয়োগ বাতিল করেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন শিক্ষাবিদকে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হোক।’


তিনি আরও বলেন, ‘যারা ফ্যাসিস্টদের দোসর বা দুর্নীতিগ্রস্ত তাদের পুনর্বাসন করা মানেই জুলাই বিপ্লবের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা। সাবেক ওই সেনা কর্মকর্তাকে কোষাধ্যক্ষ পদ থেকে অপসারণ করা না হলে আমরা শিক্ষকরা সামনে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।’


আরও পড়ুন: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের মহাসড়কে মৃত্যুর মিছিল!


মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. জামাল উদ্দীন বলেন, ‘আমরা শুনেছি রাতের আঁধারে কোষাধ্যক্ষের দফতরে কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাকে গাড়িও দেয়া হয়েছে, যেটি দুঃখজনক। এমনকি তিনি নাকি ঢাকা থেকে অনলাইনে অফিসও করবেন। আমরা যে মানুষটিকে গ্রহণ করছি না সেখানে কীভাবে তিনি অফিস করবেন সেটিই বোধগম্য নয়। আমরা অনতিবিলম্বে কোষাধ্যক্ষকে অপসারণ চাই।’


সমাজকর্ম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবু জিহাদ বলেন, ‘যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে আমলা ও সাবেক সেনা কর্মকর্তার পুনর্বাসন হতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের শিক্ষাবিদদের দ্বারা। অথচ আমরা দেখতে পাচ্ছি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট না এমন একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’


তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বলতে চাই, বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে। তাই, সরকারের কাছে অনুরোধ থাকবে এই নিয়োগ বাতিল করে একজন স্বনামধন্য শিক্ষাবিদকে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হোক।’


কোষাধ্যক্ষ গাড়ি ব্যবহার করছেন কিনা প্রশ্ন করা হলে পরিবহন পুলের ম্যানেজার আতিকুল হক ফরাজী বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী তিনি গাড়িটি ব্যবহার করছেন।’


আরও পড়ুন: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় পেল প্রথম নারী ভিসি


অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন: সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সিরাজিস সাদিক, সৈয়দ আশিক-ই-ইলাহী, একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল আলিম বাসের ও সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক মোস্তাকিম রহমান প্রমুখ।


উল্লেখ্য, গত ২৬ নভেম্বর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পান কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) আবু হেনা মোস্তফা কামাল খান। ওইদিন রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন তিনি। তার আগেই যোগদানে বা ক্যাম্পাসে প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করার জন্য সেখানে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীদের একটি অংশ।


পরে উপাচার্যের কার্যালয়ে আসেন সদ্য নিয়োগ পাওয়া ট্রেজারার। শিক্ষার্থীরা উপাচার্য কক্ষে ঢুকে ট্রেজারারের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ এনে তাকে যোগদানে বাধা দেন এবং ক্যাম্পাস থেকে তাকে চলে যেতে বলেন। এমনকি শিক্ষার্থীরা তাকে (কোষাধ্যক্ষ)  স্বৈরাচারীর দোসর, বেরোবিতে রেজিস্ট্রার থাকাকালীন দুর্নীতিগ্রস্ত ও কলিমউল্লাহর সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে বলে অভিযোগ তোলা হয় তার (ট্রেজারার) সামনেই।


এ সময় সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত ট্রেজারার এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন।
 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন