সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে অবসর ভাতার সুবিধা দিতে ২০২৩ সালের আগস্টে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করেছিল হাসিনা সরকার। প্রবাসী, বেসরকারি চাকুরিজীবী, ব্যবসায়ী ও স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য এ স্কিমে চারটি ক্যাটাগরি চালু হয়। তবে বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও অনেকে এখনও জানেন না এ স্কিমের সুবিধা-অসুবিধা।
তথ্য বলছে, চলতি বছরের ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত স্কিমের জন্য মোট নিবন্ধনের পরিমাণ ৪ লাখেরও কম। এর মধ্যে সবচেয়ে বেহাল দশা প্রবাসীদের স্কিমে। এ ক্যাটাগরিতে নিবন্ধনের সংখ্যা মাত্র ৯১৩।
আর সবচেয়ে বেশি নিবন্ধন হয়েছে স্বল্প আয়ের মানুষের স্কিম সমতায়। এতে নিবন্ধনের সংখ্যা ২ লাখ ৮৫ হাজার ৮৮২। এছাড়া, প্রগতি ও সুরক্ষা স্কিমে নিবন্ধনের সংখ্যা যথাক্রমে ২২ হাজার ৪১০ ও ৬৩ হাজার ১৮৪।
আরও পড়ুন: সর্বজনীন পেনশন স্কিম: ৭ ব্যাংকের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের সমঝোতা স্মারক
বিভাগভিত্তিক নিবন্ধনে তলানিতে রয়েছে ময়মনসিংহ। এ বিভাগে নিবন্ধনের সংখ্যা মাত্র ৪ হাজার ৪৮৪। এছাড়া, ঢাকা বিভাগে নিবন্ধনের সংখ্যা ২৮ হাজার ৬৬৭। তবে নিবন্ধনে সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ। এ বিভাগে নিবন্ধনের সংখ্যা ২ লাখ ৬ হাজার ৮০১।
সাধারণ মানুষ বলছেন, কেউ সঠিকভাবে পেনশন স্কিমের সুবিধা-অসুবিধার কথা বলতে পারছেন না। প্রচার-প্রচারণা না চালালে সাধারণ মানুষ এটি সম্পর্কে তেমন জানতে পারবে না। তাছাড়া, এটির ঝুঁকির পরিমাণও অজানা। তাই অনেকেই এটিতে আগ্রহী না।
তবে জনসাধারণের আস্থার ঘাটতি প্রসঙ্গে কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, জম করা টাকার গ্যারান্টি দেবে খোদ সরকার। জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য মো. গোলাম মোস্তফা বলেন,
ঝুঁকি কম বেশি লাভ -- এমন প্রকল্পে এ স্কিমের অর্থ বিনিয়োগ করা হবে। এ স্কিমের অর্থের গ্যারান্টি দিচ্ছে সরকার। তাই এখানে অনিশ্চয়তার সুযোগ নেই।
আরও পড়ুন: অবশেষে করমুক্ত হলো সর্বজনীন পেনশনের টাকা
আর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো অর্থনীতিবিদ মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন,
স্বল্প আয়ের মানুষদের জন্য বিশেষ স্কিম -- এটি ধারণাগতভাবে খুবই ভালো উদ্যোগ। বর্তমান পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে। এরপর নির্বাচিত সরকার আসলে তারা যদি এটির বিষয়ে কাজ করে, তাহলে স্কিমটিতে মানুষের আস্থা তৈরি হবে।
মানুষের মাঝে এ স্কিম নিয়ে সর্বাত্মক সচেতনতা বাড়াতে সক্ষম হলে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তার দায় অনেকটাই মিটবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
]]>