ফিলিস্তিনের সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্রে ‘সবচেয়ে বড়’ বিক্ষোভ

২ সপ্তাহ আগে
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত জানুয়ারিতে ক্ষমতা নেয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনপন্থি সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হয়েছে। রোববার (৬ এপ্রিল) ওয়াশিংটন ডিসিতে হাজারো মানুষ ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে জড়ো হন। এ সময় ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের দমন-পীড়ন, ইসরাইলের গণহত্যাসহ বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ করেন তারা।

সম্প্রতি ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীদের ওপর কঠোর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। এরই মধ্যে ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিল, রুমেসা ওজতুর্ক, বদর খান সুরি এবং অন্যান্যদের আটক করা হয়েছে এবং তাদের ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। 

 

এদিকে অবরুদ্ধ গাজায় ইসরাইলের গণহত্যা পুনরায় শুরু হয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলন চালিয়ে যাওয়াটা অনেকের কাছে কঠিন মনে হলেও হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রোববার ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নামেন।

 

আরও পড়ুন:গাজায় ১৫ স্বাস্থ্যকর্মী হত্যার ঘটনায় ইসরাইলের ভুল স্বীকার

 

এই সমাবেশটি প্রায় ৩০০টি সংগঠনের সমন্বয়ে আয়োজন করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে অধিকার গোষ্ঠী, ট্রেড ইউনিয়ন, যুদ্ধবিরোধী গোষ্ঠী, মহিলা গোষ্ঠী এবং মুসলিম গোষ্ঠী।

 

রোববার (৬ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহর থেকে ওয়াশিংটন ডিসিতে জড়ো হন হাজারো বিক্ষোভকারী। ট্রাম্প দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর এটি যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বড় ফিলিস্তিনিপন্থি বিক্ষোভ।

 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রতিবাদকারী বলেন, ‘যখন আমরা লক্ষ লক্ষ, কোটি কোটি মানুষের হয়ে কথা বলি তখন আমরা সবাই ফিলিস্তিনি। তখন আমরা তা হালকাভাবে বলি না। যখন আমাদের একজনের ওপর আক্রমণ হয়, তখন আমরা মনে করি আমাদের সকলের ওপরই আক্রমণ করা হয়।’


তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্র নির্যাতন এবং মাহমুদ খলিল ও রুমেসাকে নির্বাসনের জন্য আটকে রাখার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। এটি কেবল আন্দোলনকে পুনরুজ্জীবিত করেছে।’


ওই আন্দোলনকারী সতর্ক করে বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসন শুধু ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলন নয়, বরং তার বাইরেও অন্য অনেক ক্ষেত্রেই এই দমন-পীড়ন চালাবে। যারাই তাদের বক্তব্যের সঙ্গে একমত হবেন না তাদের ওপরেই কঠোর হবে ট্রাম্পের প্রশাসন।

 

জেসিকা নামে একজন বিক্ষোভকারী টিআরটি ওয়ার্ল্ডকে বলেন, ‘এই বিক্ষোভ করাটা তাদের জন্য একটু ভীতিকর ছিল কিন্তু গাজার মানুষ প্রতিদিন যা ভোগ করছে তার তুলনায় এটি কিছুই নয়।’  


আরেক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসন কেবল ফিলিস্তিনিদের ওপরই এই দমন-পীড়ন চালাবে না বরং ট্রাম্প গাজায় ইসরাইলের গণহত্যা থেকে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন।’


‘তারা (ট্রাম্প প্রশাসন) ফিলিস্তিনিদের দমন করেই থেমে থাকবে না। তারা অভিবাসীদের ওপরও দমন-পীড়ন চালাবে। আমরা এটি আগেও দেখেছি। তিনি গাজার জনগণের ওপর সংঘটিত গণহত্যা থেকে আমাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীদের কাছ থেকে বর্তমানে যে অধিকার কেড়ে নেয়া হচ্ছে তা থেকেও তিনি আমাদের চোখ সরিয়ে নিতে চান,’ বলেন ওই বিক্ষোভকারী।

 

তিনি বলেন, ‘আমরা মাহমুদের আগেও এটা ঘটতে দেখেছি। এটা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঘটেছিল। আমার মনে হয় এটা চলতেই থাকবে এবং তারা এটা চালিয়ে যাবে যতক্ষণ না আমরা এর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য যথেষ্ট শক্তি তৈরি করতে না পারি। কারণ তারা ভয় না পাওয়া পর্যন্ত থামে না। আমরা জানি কখন তারা ভয় পায়। যখন আমরা ছোট ছোট জয়গুলো অর্জন করি। তখন তারা ভয় পায়।’

 

আরও পড়ুন:ইসরাইলের কারাগারে ফিলিস্তিনি কিশোরের অনাহারে মৃত্যু


গাজা যুদ্ধে ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনের জন্য গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীদের দমন-পীড়ন শুরু করেন ট্রাম্প। 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন