সময় সংবাদের অনুসন্ধানে ধরা পরে এমনই চাঞ্চল্যকর দৃশ্য। সরেজমিনে দেখা যায়, রাত ২টার পর বগুড়া সিএনজি ফিলিং স্টেশন থেকে গ্যাস পাচার করছিল চক্রটি। প্রথম দেখায় বোঝার উপায় নেই বিশেষ কায়দায় বানানো কার্গো গাড়িতে ৫০ থেকে ১০০ এলপিজি সিলিন্ডারে গ্যাস ভরানো হচ্ছে গভীর রাতে।
একই চিত্র বগুড়া শহরের চারমাথার শরিফ ফিলিং স্টেশন ও আকিজ ফিলিং স্টেশনেও৷
বগুড়ায় শিল্প কলকারখানাগুলোতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় জ্বালানির চাহিদা মেটাতে যানবাহনের গ্যাসের বড় একটি অংশ ব্যবহার হচ্ছে উৎপাদন কাজে। প্রতিরাতেই বগুড়ার সদর ও শাজাহানপুর উপজেলার ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের পাশের সিএনজি স্টেশনগুলো থেকে কাভার্ড ভ্যানে গ্যাস ভরিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করছে একটি চক্র। প্রতি কাভার্ড ভ্যানে এলপিজি সিলিন্ডারগুলোতে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকার সমমূল্যের গ্যাস ভরানো হয়। ক্যামেরার উপস্থিতি টের পেয়ে সটকে পরার চেষ্টা করেন চক্রের সদস্যরা৷
বগুড়ায় পাঁচ বছর যাবত শিল্পকারখানায় গ্যাস সংযোগ দেয়া বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। এই সময়ে শিল্প গ্যাসের সংযোগ পেতে অন্তত শতাধিক আবেদন জমা পড়েছে পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডে। বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে ১৯০৮ অনুযায়ী সিএনজি সিলিন্ডার বা গ্যাস ট্যাংক অনিরাপদভাবে বহন করা বিস্ফোরক দ্রব্য পরিবহন সমতুল্য ধরা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দফায় দফায় মেয়াদ বাড়িয়েও শেষ হয়নি বগুড়ার ফতেহ আলী ব্রিজের নির্মাণকাজ
এভাবে গ্যাস সিলিন্ডার পরিবহনে ঘটতে পারে বিস্ফোরণের মতো বড় দুর্ঘটনা। সড়কে জনসাধারণের জীবন ঝুঁকিতে ফেলার জন্য সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আর বাংলাদেশ দাহ্য গ্যাস আইন ২০০১ অনুযায়ী অনুমোদিত পরিবহন ছাড়া গ্যাস সিলিন্ডার বহনে জেল ও জরিমানার বিধান আছে।
এ নিয়ে পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা সারা দেননি। তবে জেলা প্রশাসনের শীর্ষ এক কর্মকর্তা ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
বগুড়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মঞ্জিল হক বলেন, ‘অনুমোদনহীন গাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার পরিবহন সম্পূর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ ও বেআইনি। এতে করে বড় রকমের দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দেয়।’
বগুড়ার জেলা প্রশাসক হোসানা আফরোজা বলেন, ‘বেআইনিভাবে গ্যাস নেয়ার সুযোগ নেই। যারাই এই কাজ করছে তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে৷’
]]>