এদিকে, কোটা ইস্যুতে ছাত্র-জনতার আন্দোলন গড়ায় প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে। জোর খাটিয়েও আন্দোলন দমাতে না পেরে অবশেষে সাত মাস না যেতেই প্রধানমন্ত্রীর গদি ছেড়ে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিতে হয় আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাকে। এরপর থেকেই কোণঠাসা হয়ে পড়েছে দলটি। নেতাকর্মীদের কেউ কেউ কারাগারে বন্দি হলেও গা ঢাকা দিয়েছেন অনেকে।
সাত জানুয়ারির নির্বাচন
জাতীয় সংসদের সবশেষ কয়েকটি নির্বাচন নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। চলতি বছরের ৭ জানুয়ারির নির্বাচনও সেই ধারাবাহিকতারই অংশ ছিল। এ নির্বাচনকে একপাক্ষিক ও পাতানো বলে দাবি করেছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআইবি)।
ওই নির্বাচনের শেষের ১ ঘণ্টায় ১৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে দাবি করা হয়। এতে মোট ভোট পড়েছে ৪১ দশমিক আট শতাংশ।
সংস্থাটির মতে, নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং অংশগ্রহণমূলক দেখাতে নিজ দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী দিয়ে ভোট করলেও বেশিরভাগ আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। নির্বাচনের এমন প্রক্রিয়া গণতন্ত্রের জন্য অশনি সংকেত- বলছিল টিআইবি।
আরও পড়ুন: ফিরে দেখা ২০২৪ /ইসরাইলের নতুন যুদ্ধক্ষেত্র লেবানন
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একপাক্ষিক ও পাতানো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়নি। সংসদে ব্যবসায়ী আধিপত্যের মাত্রাও একচেটিয়া পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। বেশিরভাগ আসনেই নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়নি। অন্তত ২৪১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাই হয়নি।
বিএনপিসহ ১৫টি নিবন্ধিত দলের অনুপস্থিতি ও তাদের নির্বাচন বর্জনের প্রেক্ষাপটে নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও উৎসবমুখর দেখাতে ক্ষমতাসীন দল বিবিধ কৌশল গ্রহণ করে। আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর চেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী বেশি ছিল। ২৬৬ জন দলীয় প্রার্থীর বিপরীতে স্বতন্ত্র ছিলেন ২৬৯ জন।
ভোটের দিন স্বল্প ভোটারের আগমন এবং ডামি লাইন তৈরি করে বিভিন্ন আসনে অন্য দলের প্রার্থীর এজেন্ট বের করে দেয়া হয়। ভোটের আগে ব্যালটে সিল মারা, ভোট চলাকালে প্রকাশ্যে সিল মারাসহ আওয়ামী লীগের পরাজিত প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অনিয়মের অভিযোগ থেকে এমন তথ্য উঠে এসেছে টিআইবির প্রতিবেদনে।
কোটাপ্রথা পুনর্বহাল
পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সমতার ভিত্তিতে এগিয়ে নিতে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে কোটা সুবিধা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ৫৬ শতাংশ কোটা ও ব্যাপক দুর্নীতির কারণে মেধাবী শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় ভালো করেও সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করতে পারতেন না।
আরও পড়ুন: ফিরে দেখা ২০২৪ /ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনে মার্কিন রাজনীতিতে তোলপাড়
এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে দীর্ঘ আন্দোলনের পর ২০১৮ সালে প্রথম কোটাপ্রথা বাতিল করে দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু সাত জানুয়ারির নির্বাচনের পর সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে সরকার। সরকারি চাকরিতে আগের মতোই কোটাপ্রথা পুনর্বহাল করা হয়।
গেল ১৪ জুলাই প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাসহ কোটা পদ্ধতি বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ ২৭ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন।
রায়ে বলা হয়, ২০১২ সালে করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দেয়া রায় ও আদেশ, ২০১৩ সালের লিভ টু আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের তা বহাল ও সংশোধিত আদেশ এবং ২০১১ সালের ১৬ জানুয়ারির অফিস আদেশের (মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনির কোটা) আলোকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনিদের জন্য কোটা পুনর্বহাল করতে সরকারকে নির্দেশ দেয়া হলো। একইসঙ্গে জেলা, নারী, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, উপজাতি-ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য কোটাসহ, যদি অন্যান্য থাকে, কোটা বজায় রাখতে হবে। এ বিষয়ে যত দ্রুত সম্ভব আদেশ পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে পরিপত্র জারি করতে নির্দেশ দেয়া হলো।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন
কোটাপ্রথা পুনর্বহালের পরই নতুন করে আবার আন্দোলন শুরু হয়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আবারও রাস্তায় নেমে পড়েন। যার নাম দেয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থায় স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে টানা এ আন্দোলন চালিয়ে যান শিক্ষার্থীরা।
কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা দল-মত নির্বিশেষে এই আন্দোলনে অংশ নেন। তাদের একদফা দাবি সরকারের নির্বাহী বিভাগের কাছে।
একদফায় বলা হয়েছে, ‘সরকারি চাকরির সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য কোটাকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংস্কার করতে হবে।’
কোটাবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলা
গেল ১৬ জুলাই কোটা ইস্যুতে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ। ধারালো অস্ত্র, রড ও লাঠিসোঁটা হাতে থাকা নেতাকর্মীদের দখলে চলে যায় ক্যাম্পাস। সংঘর্ষের সময় কয়েকজন যুবককে আগ্নেয়াস্ত্র হাতেও দেখা যায়। হামলায় ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এদের মধ্যে অনেক ছাত্রীও ছিলেন।
আরও পড়ুন: ফিরে দেখা ২০২৪ /বছরজুড়ে আলোচনায় ব্রিকস, কার জন্য সম্ভাবনা শঙ্কায় কে
এর আগে কোটা আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকার’ আখ্যা দেয়ার অভিযোগ ওঠে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। তার এই বক্তব্যের প্রতিবাদে ১৬ জুলাই মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ক্যাম্পাসে মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা স্লোগান দেন ‘তুমি কে আমি কে-- রাজাকার রাজাকার, কে বলেছে, কে বলেছে--স্বৈরাচার, স্বৈরাচার’।
এ নিয়ে সরকারপন্থিরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আন্দোলনকারীদের সমালোচনাও করেন। নানা মহল এটাকে ‘ন্যক্কারজনক’ বলে আখ্যা দেয়। শিক্ষার্থীদের দাবি, প্রধানমন্ত্রী তাদের ‘রাজাকার’ বলায় তারা এমন স্লোগান দেন।
ঢাবি ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত ছাত্রলীগ
সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলার দায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল থেকে ছাত্রলীগকে তাড়িয়ে দেয়া হয়। ছাত্রলীগমুক্ত ক্যাম্পাসে বিভিন্ন হলে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। এসময় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ‘শিক্ষা-সন্ত্রাস, একসঙ্গে চলে না’, ‘শিক্ষা-ছাত্রলীগ, একসঙ্গে চলে না’, ‘ছাত্রলীগ বিতাড়িত করো, সন্ত্রাসমুক্ত দেশ গড়ো’-- এসব স্লোগান দিতে দেখা যায়।
১৭ জুলাই বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্রলীগ সবশেষ নিয়ন্ত্রণ হারায় সলিমুল্লাহ মুসলিম হল থেকে। এই হলের কোটা আন্দোলনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতাদের রুম ভাঙচুর করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় ছাত্রলীগ নেতারা পালিয়ে যান।
আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড
১৬ জুলাই বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেটের সামনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ, যে ফটকটি পরে ‘শহীদ আবু সাঈদ গেট’ নামকরণ করেন শিক্ষার্থীরা। আবু সাঈদ সেখানে একা দুই হাত প্রসারিত করে, বুক পেতে পুলিশ থেকে ৫০-৬০ ফিট দূরে সম্পূর্ণ নিরস্ত্র অবস্থায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। তার হাতে ছিল কেবল একটি লাঠি। এরপরও তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এরপরই আন্দোলন আরও বেগবান হয়ে ওঠে।
আবু সাঈদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের (২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ) শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ছিলেন। অত্যন্ত দরিদ্র বাবা-মায়ের ৯ সন্তানের একজন ছিলেন সাঈদ। নয় ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ ও মেধাবী। পরিবারের মধ্যে প্রথম কোনো ব্যক্তি হিসেবে যখন তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি হন, তার ভাইবোনরা এতই উচ্ছ্বসিত ছিলেন যে নিজেদের পড়াশোনার খরচ বাঁচিয়ে তাকে দিতেন।
জুলাই-আগস্ট গণহত্যা
১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতার গণ-অভুত্থানের সময় সরকারের চালানো দমনপীড়ন ও ব্যাপক হত্যাকাণ্ডকে ‘জুলাই গণহত্যা’ বলা হয়। বিতর্কিত কোটা পদ্ধতি পুনর্বহাল ও ব্যাপক গণ-অসন্তোষের জের ধরে এই দমন অভিযান পরিচালনা করে তৎকালীন সরকার, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ এবং বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
জুলাই বিপ্লবে অন্তত ১ হাজার ৪২৩ জন ছাত্র-জনতা শহীদ হয়েছেন বলে দাবি করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তরিকুল ইসলাম। গেল ২১ সেপ্টেম্বর এক ফেসবুক পোস্টে তিনি আরও বলেন, শহীদ এবং আহতদের সংখ্যায় আরও কিছু সংযোজন-বিভাজন হতে পারে। তবে এ বিষয়ে খুব শিগগিরই একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হবে। এত প্রাণহানি সত্ত্বেও হাসিনা সরকার এই গণহত্যার দায় অস্বীকার করে এবং সহিংসতার জন্য অন্যান্য কারণকে দায়ী করে।
একদফা দাবিতে আন্দোলন
৩ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার মন্ত্রিসভার পদত্যাগের একদফা দাবি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া সংগঠনটির সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার মন্ত্রিসভাকে পদত্যাগ করতে হবে।
পরে সারা দেশে অসহযোগ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন নাহিদ। বলেন, সরকার পদত্যাগ না করা পর্যন্ত অসহযোগ আন্দোলন চলবে। সেনাবাহিনীসহ নিরাপত্তাবাহিনীর উদ্দেশে তিনি বলেন, এই সরকারকে জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। আপনারা সরকারকে সমর্থন না দিয়ে জনগণকে সমর্থন দিন।
এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে রাজনৈতিক দল, শিল্পী গোষ্ঠী, শিক্ষক সমাজ থেকে শুরু সারা দেশের মানুষ সমর্থন যোগান। একটি সংবাদ সম্মেলনে দেশের সাবেক সেনাপ্রধানসহ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সশস্ত্র বাহিনীকে ছাত্র-জনতার মুখোমুখি দাঁড় না করানোর আহ্বান জানান।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ডাকে অসহযোগ কর্মসূচি ঠেকাতে ৪ আগস্ট তিন দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। বলা হয়, সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, আদালত ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। সেইসঙ্গে অনির্দিষ্টকালের কারফিউও বহাল রাখা হয়।
এদিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা ৬ আগস্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’র ঘোষণা দেন। কিছু সময় পর সেই কর্মসূচি ৫ আগস্টের জন্য ঘোষণা দেন সমন্বয়করা। সারা দেশে বিক্ষোভ-আন্দোলন এবং গণ-অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রাখারও ঘোষণা দেন। অন্যদিকে কঠোর হাতে নৈরাজ্যবাদীদের দমন করতে ৪ আগস্ট দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
৪ আগস্ট দুপুর থেকে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয়া হয়। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টিকটকসহ বন্ধ করে দেয়া হয় বেশ কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। আন্দোলনকারীদের ওপর সরাসরি গুলি না চালানোর নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের আবেদন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।
শেখ হাসিনা দেশত্যাগ
৫ আগস্ট সকালেও রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে ছাত্র-জনতার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষ চলে। গুলিতে সেদিনও অনেক শিক্ষার্থী নিহত হন। তবে দুপুর ১২টার দিকে সংবাদ মাধ্যমে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জাতির উদ্দেশে ভাষণের ঘোষণা দেন। তখনই রাজধানীর বুকে ছাত্র-জনতার ঢল নামে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে অংশ নেয়া লাখো মানুষের সমাবেশ বেলা আড়াইটার দিকে যাত্রা করে গণভবনের দিকে। এরপর জনগণের উদ্দেশে দেয়া ভাষণে শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং অন্তবর্তী সরকার গঠনের কথা বলেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
সেনাপ্রধানের ভাষণের পরই উচ্ছ্বসিত ছাত্র-জনতার মিছিলে মিছিলে স্লোগান ছিল, ‘কী হয়েছে কী হয়েছে, শেখ হাসিনা পালাইছে’। ৩৬ দিন আগে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার চেয়ে শুরু হওয়া আন্দোলন ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত রূপ লাভ করল। যার জন্য শেষদিন পর্যন্ত সময়কে ‘৩৬ জুলাই’ বলে অ্যাখ্যা দিয়েছে ছাত্র-জনতা।
]]>