শ্রবণ প্রতিবন্ধী মিরপুরের বাসিন্দা হোসনে আরা বেগম। অনেক চেষ্টার পর জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের মূল সেবাকেন্দ্র থেকে হেয়ারিং-এইড নিয়েছিলেন গত বছর। ব্যবহারের এক মাসের মাথায় সেটি আর কাজ করেনি।
হাজারীবাগের আল আমিনের দশাও একইরকম। রাজধানীর লালবাগ প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র থেকে একটি হুইল চেয়ার দেয়া হয়েছিল তাকে। কিন্তু সেটি এতই নড়বড়ে যে, তা আল আমিনের ওজন সহ্য করতে পারেনি।
দেশে এরকম প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র আছে ১০৩টি। নারায়ণগঞ্জের সেবাকেন্দ্রে জানা গেল, হুইল চেয়ার যা দেয়া হয় তা সবই একই আকারের। শিশুর জন্য যে রকম চেয়ার সরবরাহ করা হয়, বড়দের জন্যও একই ধরনের চেয়ার সরবরাহ করা হচ্ছে বছরের পর বছর।
হাইড্রো থেরাপির একটি দামী মেশিন শুরু থেকেই নষ্ট। আবার স্থান সংকুলান না হওয়ায় থেরাপির মেশিনগুলো রাখা হয়েছে গাদাগাদি করে। এক কামরায় সব মেশিনে থেরাপি দেয়া অসম্ভব।
আরও পড়ুন: ব্যাংকের লাখ লাখ কোটি টাকা লোপাট, কঠিন সিদ্ধান্তের পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের
টাঙ্গাইলের রুহুল আমিন সিরাজীর সঙ্গে কথা হয় সময় সংবাদের। সারা দেশে নিম্নমানের সামগ্রী সরবরাহের অভিযোগ এনে ২০২২ সালে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে লিখিত দিয়েছিলেন তিনি। পরে গঠিত হয় তদন্ত কমিটি। সেই কমিটি অভিযোগের সত্যতাও পায়। কমিটির সুপারিশ ছিল এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। কিন্তু তারপর কী হয়েছে তা আর কেউ জানে না।
সিরাজী বলেন, ইসমাঈল হোসেন নামের একজন হাফেজ প্যারালাইজড হলে আমার কাছে একটি হুইলচেয়ার দেয়ার জন্য বলেছিলেন। ফাউন্ডেশন থেকে একটা হুইলচেয়ার এনে দিলে, সেটা ভেঙে সেইদিনই মারা যান ইসমাঈল। এরপর আমি লিখিত অভিযোগ দেই।
অভিযোগ রয়েছে, ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় ক্রয় কমিটির সদস্য সচিব এবং অডিটের সহকারী পরিচালক রেজাউল কবিরের যোগসাজশে এসব নিম্নমানের সামগ্রী কেনাকাটায় জড়িত বেশ কয়েকজন। নির্দিষ্ট কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে গত ৯ বছর ধরে কাজ পাইয়ে দিচ্ছেন তিনি। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন রেজাউল।
নিম্নমানের সামগ্রী ক্রয়ের অভিযোগ ও তদন্ত কমিটির সুপারিশের বিষয়ে শুনে ফাউন্ডেশনের যুগ্ম সচিব সেই রেজাউল কবিরকে ডেকে আনেন। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের ফলাফল নিয়ে ফাউন্ডেশনের কেউ কিছুই জানেন না। জবাবদিহির আওতায় আনা হয়নি কোনো কর্মকর্তাকে।
জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের পরিচালক আজমুল হক বলেন, ‘মূলত আমরা এক ধরনের হুইলচেয়ার কিনি। যার কারণে সমস্যাগুলো হচ্ছে। কেনাকাটার ক্ষেত্রে এবার বিষয়টি আমরা দেখবো।’
]]>