পূর্ব শত্রুতার জেরে স্কুলে যাওয়ার পথে মোহসিন খান নামের এক শিশুকে পিটিয়ে ও নদীতে চুবিয়ে নির্যাতন করা হয়। মহসিন সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামের মো. দেলোয়ার খানের পুত্র। সে চিলারকান্দি কছিমউদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
সোমবার (১২ মে) দুপুরে সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের চিলারকান্দি কছিমউদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধনে নির্যাতনের শিকার মহসিন জানায়, গত ৮ মে স্কুলে যাওয়ার পথে কয়েকজন যুবক তাকে প্রথমে ধরে মারপিট করে পাশের নদীতে চুবায়। এরপরে তাকে গামছা দিয়ে বেঁধে টানা-হেঁচড়া করে এলোপাথাড়ি চড়-থাপ্পড়ের পাশাপাশি লাঠি দিয়ে পেটায়।
আরও পড়ুন: কুয়েট শিক্ষকদের লাঞ্ছিতের ঘটনায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে শোকজ
জানা গেছে, মহসিনের বাবার সঙ্গে হামলাকারীদের পূর্ব শত্রুতা রয়েছে। মহসিন জানায়, হামলাকারীরা তার বাবাকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য বলে। সেই সঙ্গে হুমকি দেয়, মামলা তুলে না নিলে তাকে খুন করা হবে।
মোহসিনের বাবা দেলোয়ার খান (৩৬) জানান, স্থানীয় এক যুবকের পরকীয়া সম্পর্কে বাধা দেয়ায় গত বছরের ১২ জুন ইউপি মেম্বার মনিরুজ্জামান আবেদের নেতৃত্বে কয়েকজন বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে তার ওপর নির্যাতন চালায়।
তিনি আরও জানান, হামলাকারীরা চোর আখ্যা দিয়ে তার কোমর থেকে পা পর্যন্ত পিটিয়ে থেতলে দেয়। তিন মাস ঢাকা ও ফরিদপুরের ট্রমা সেন্টারে চিকিৎসা নিয়ে তিনি কিছুটা সুস্থ হন। এ ঘটনায় তিনি হামলাকারীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।
মোহসিনের মা মিরা আক্তার (৩০) বলেন, তার স্বামীর ওপর হামলার ঘটনায় তিনি বাদি হয়ে কোতোয়ালি থানায় ৯ জনের নামোল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। সেই মামলা তুলে নিতে তার ছেলের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি বিচারের দাবি করেন।
আরও পড়ুন: নেত্রকোনায় বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু
এ ঘটনায় চিলারকান্দি গ্রামের রবিন শেখ (২০), শাহিন মল্লিক (২৫), উজ্জ্বল শেখ (২৫), হাসিব মল্লিক (৪৯) ও হানিফ শেখের (৪৫) বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। কোতোয়ালি থানার এএসআই রেজাউলের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করেছে।
মানববন্ধনে অভিযোগ করা হয়, থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ এখন পর্যন্ত কোনো মামলা নেয়নি। অভিযুক্তরা এখনও প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করছে এবং আবারও মারধরের হুমকি দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কোতয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক রেজাউল হক বলেন, ঘটনার তদন্তে ওই শিশুকে মারধরের সত্যতা পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
]]>