ফরিদপুরে আন্তঃজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সভা ফের পণ্ড

৩ সপ্তাহ আগে
ফরিদপুরে আন্তঃজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রি-বার্ষিক সাধারণ সভা ঘিরে আবারও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সকাল ১০ টা থেকে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও পরে প্রশাসন গিয়ে কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা অবনতি হওয়ার আশঙ্কায় সভাটি বন্ধ করা হয়েছে।
 

শুক্রবার শহরের গোয়ালচামটস্থ পুরাতন বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ অডিটোরিয়ামে এ সভার আয়োজন করা হয়। 


এর আগে বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) এছাড়া এই সাধারণ সভার আয়োজকদের আওয়ামী লীগের দোসর উল্লেখ করে এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি অভিযোগ দেন মো. খায়রুল বাশার সবুজ নামে সংগঠনটির একজন সদস্য।


জানা যায়, সকাল ১০ টা থেকে সাধারণ সভার কার্যক্রম শুরু প্রস্তুতি নেন সংগঠনটির সভাপতি আব্দুল মান্নান শেখ মানা ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম মো. আজাদসহ শ্রমিকদের একাংশ। তারা হলরুমে সাধারণ সভার ব্যানার টাঙানো ও প্যান্ডেল করাসহ সকল প্রস্ততি নেন। সভা শেষে অসহায় শ্রমিক পরিবারের মধ্যে ক্ষতিপূরণের টাকা বিতরণ ও খাদ্য বিতরণের কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়েছিল।


তবে খবর পেয়ে শ্রমিকদের অপর একটি অংশ সেখানে অবস্থান করেন। পরে থানা পুলিশ গিয়ে সভা বন্ধ করে দেন। এর আগে গত ২৮ জুন সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল, সেদিনও একটি পক্ষের বাধায় পণ্ড করা হয়।


বেলা সাড়ে ১১ টায় সরেজমিনে দেখা যায়, অডিটোরিয়ামের প্রবেশ পথ বন্ধ করে রাখা এবং দরজায় তালা ঝুলছে। তার সামনে পুলিশের ২০ থেকে ৩০ জন সদস্য অবস্থান করছেন। বাইরে শ্রমিকরা অবস্থান করছেন। দুপুর ১২ টার দিকে রান্না করা ৮ পাতিল খাবার পৌর বাস টার্মিনালে নিয়ে যাওয়া হয়।

 

আরও পড়ুন: ফরিদপুরে আ.লীগপন্থি অভিযোগে একাংশের বাধায় শ্রমিক ইউনিয়নের সম্মেলন পণ্ড


মোজাফফর আলী মুসা সাংবাদিকদের বলেন, আওয়ামী লীগের ছত্রচ্ছায়ায় এই সাধারণ সভার আয়োজন করা হয়েছে, যাদের শ্রমিকদের সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা নেই, শ্রমিকদলের সঙ্গে সম্পৃক্তা নেই। এরা আওয়ামী লীগের দোসর, আওয়ামী লীগের দোসর হয়ে আজকে তারা মঞ্চ করেছে। এই মঞ্চের ব্যানারে তারেক জিয়া, বেগম খালেদা জিয়া ও শহীদ জিয়াউর রহমানের কোনো ছবিও নেই।ফরিদপুর জেলা শ্রমিকদল জীবিত থাকতে ফরিদপুরের মাটিতে আওয়ামী লীগ ও কোনো সংগঠনকে প্রতিষ্ঠিত হতে দেব না।


তিনি আরও বলেন, এই ফ্যাসিবাদের দোসররা গোপনে ঢাকা থেকে সাধারণ সভার অর্ডার করে এনে গোপনে সভার আয়োজন করে, জেলা শ্রমিকদলকেও অবগত করে নাই। তারা শ্রমিকদের ও জেলা শ্রমিকদলকে লাঞ্ছিত করেছে। যে কারণে আমরা প্রতিহত করতে এসেছি।


অপরদিকে সংগঠনটির সভাপতি আব্দুল মান্নান শেখ মানা জেলা শ্রমিকদলের অপর আরেকটি অংশের সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দেন। তিনি বলেন, কি কারণে তারা এসব করছে আমি জানি না। একটি পক্ষ প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েছে যে কারণে পুলিশ এসে বন্ধ করে দিয়েছে। আমি আজকের পর থেকে আর শ্রমিক রাজনীতি করব না।


এদিকে সভা স্থগিত হওয়ার কারণে সাধারণ শ্রমিকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে দেখা যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শ্রমিক বলেন, সাধারণ সভা সম্পন্ন হলে নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব আসবে, আমরা সেটাই চাই। তবে কেউ কেউ আবার জানান, নির্বাচন ছাড়া নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কমিটি করা হবে।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক মো. আব্দুল্লাহ বিশ্বাস বলেন, এ সভা ঘিরে একটি পক্ষ অভিযোগ করেছিল এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল, যে কারণে আপাতত বন্ধ করে রাখা হয়েছে। উভয়পক্ষ যদি একমত হতে পারে তাহলে করতে দেয়া হবে। সকাল থেকেই পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন