শনিবার (২৮ জুন) বেলা ১১টার দিকে শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ পৌর অডিটোরিয়ামে এ সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল।
জানা গেছে, সম্মেলন শুরুর আগে বিবাদমান দুপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ধস্তাধস্তি শুরু হলে ওই এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ প্রেক্ষাপটে পুলিশ ওই অডিটোরিয়ামে গেট আটকে রাখে এবং কাউকে সেখানে ঢুকতে দেয়নি। পরে দুপক্ষ দুদিকে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে পুলিশ অডিটোরিয়াম গেট বন্ধ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, শ্রম অধিদফতরের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৮ জুন সংগঠনের সম্মেলন ও নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার উদ্যোগে বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ পৌর অডিটোরিয়ামে এ আয়োজন করা হয়। গত ২৩ জুন পৌরসভায় টাকা পরিশোধ করে হলটি ভাড়া নেয়া হয়।
এদিকে, গত ২৬ জুন ফরিদপুর আন্তঃজেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মো. আরিফ হাসান একইদিনে ওই মিলনায়তনে ‘প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ’ আয়োজনের অনুমতি চায় ফরিদপুর পৌরসভার কাছে। তাতে জানানো হয় এ সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ।
সম্মেলনটি ফরিদপুর আন্তঃজেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল মান্নান শেখ মানার নেতৃত্বে আয়োজন করা হয় বলে জানা যায়। তিনি জেলা শ্রমিকদলের একাংশের সদ্য দাবি করা যুগ্ম সম্পাদক পদে রয়েছেন।
জানতে চাইলে তিনি জানান, বিরোধ এড়ানোর জন্য গত শুক্রবার রাতে তিনি চৌধুরী নায়াব ইউসুফের সঙ্গে দেখা করেন। নায়াব ইউসুফ তাকে সম্মেলন পিছিয়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু তিনি সব আয়োজন সম্পন্ন করার বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে শ্রমিকরা আসবেন। এ অবস্থায় সম্মেলন স্থগিত করা সম্ভব না। তবে তিনি সীমিত পরিসরে করবেন বলে জানান।
আব্দুল মান্নান শেখ মানা বলেন, ‘সম্মেলন উপলক্ষে শ্রমিকরা জড়ো হলে তাদের সংগঠনের সহ-সভাপতি মো. আরিফ হাসানসহ কয়েকজন সম্মেলনস্থলে বাধা দিতে এলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। আমাদের কাউকে মিলনায়তনে ঢুকতে দেয়নি।’
আরও পড়ুন: শেরপুরে হত্যার হুমকি ও চাঁদা দাবির প্রতিবাদে ব্যবসায়ীর সংবাদ সম্মেলন
অপরদিকে সংগঠনটির সহ-সভাপতি মো. আরিফ হাসান সম্মেলন আয়োজকদের আওয়ামীপন্থি বলে আখ্যায়িত করেন।
তিনি বলেন, ‘অধিকাংশ শ্রমিক নেতাকে না জানিয়ে আওয়ামী লীগের দোসরদের নিয়ে সম্মেলন করে পকেট কমিটি করতে চেয়েছিল। ওরা আওয়ামীপন্থি আর আমরা বিএনপিপন্থি। ১৫ বছর ওরা লুটপাট করে খেয়েছে। নতুন করে আবার লুটপাট করার উদ্যোগ নিয়েছিল। এজন্য সাধারণ শ্রমিকদের নিয়ে আমরা তাদের প্রতিহত করেছি।
‘আওয়ামীপন্থি বা আওয়ামী লীগের দোসর’ বিষয়ে আন্তঃজেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল মান্নান শেখ বলেন, ‘শ্রমিকরা শ্রমিক রাজনীতি করেন। তারা আওয়ামী লীগ-বিএনপি নয়। কিছুদিন আগে তো বিএনপি বলে কাউকে খুঁজে পাওয়া যেতো না, সবাই আওয়ামী লীগ ছিলেন। এখন আওয়ামী লীগ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা আওয়ামী লীগ-বিএনপি বুঝি না, শ্রমিকদের কল্যাণ বুঝি।’
এ বিষয়ে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, ‘আন্তঃজেলা শ্রমিক ইউনিয়নের বিবাদমান দুপক্ষের বিরোধ এড়াতে পুলিশ হস্তক্ষেপ করে। কোনো পক্ষকে হল রুমে ঢুকতে দেয়া হয়নি। পুলিশ অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে যাবতীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।’