শনিবার (২৬ জুলাই) এক বিবৃতিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব বলেন, পতিত আওয়ামী লীগ ফ্যাসিজম প্রতিষ্ঠার জন্য দেশকে ‘পন্থা ও পন্থি’তে বিভক্ত করে রেখেছিল। স্বাধীনতাপন্থি, পাকিস্তানপন্থি, দক্ষিণপন্থি, বামপন্থি ইত্যাদি নানাবিধ পন্থার রাজনীতি করে ফ্যাসিবাদের পক্ষে সম্মতি উৎপাদন করার চেষ্টা করেছে তারা। পন্থাকে সামনে এনে জুলুম-নির্যাতন, হত্যা-গুমকে বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করেছে। জুলাই অভ্যুত্থান সেই ‘পন্থা’র রাজনীতিকে ভেঙ্গে দিয়ে অধিকার ভিত্তিক রাজনীতির নয়া জমানার সূচনা করেছে। ফলে এসময়ে এসে পন্থাকেন্দ্রিক রাজনীতির বিকাশ হচ্ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করা যথার্থ নয়।
মাওলানা ইউনুস আহমদ বলেন, জুলাইয়ের আগে থেকেই দেশের সব ধারার রাজনৈতিক শক্তি এক টেবিলে বলে একই সুরে কথা বলেছে। জুলাইয়ের আগের রাজনৈতিক আন্দোলনে ডানপন্থী, ইসলামপন্থি, বামপন্থি, মধ্যপন্থি সবাইকে একত্রে আন্দোলন করতে দেখেছে দেশবাসী। জুলাই বিপ্লবেও সব পন্থার মানুষ কাঁধে কাঁধ রেখে ফ্যাসিবাদের বুলেটের মোকাবিলা করেছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পরেও রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্য-বিবৃতি ও সংস্কার এজেন্ডাতে পরিষ্কার যে, কেউ নির্দিষ্ট কোনো পন্থা প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে না। বরং সবার প্রধান বিবেচ্য হচ্ছে সংবিধান সংস্কারের মাধ্যমে দেশে নতুন কোনো ফ্যাসিবাদ তৈরির পথ বন্ধ করা। সেজন্যই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নিয়োগের ক্ষমতা এককবাবে প্রধানমন্ত্রীর হাতে থাকবে নাকি কোনো যৌথ কমিটির হাতে থাকবে-- তা নিয়ে তর্ক হচ্ছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনে সব ইসলামি দল জোটবদ্ধ হবে, প্রত্যাশা খেলাফত মজলিসের
‘একই ব্যক্তি দল ও সরকার প্রধান হওয়া না হওয়ার বিষয়ে তর্ক হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের রাজনীতি এখন পন্থা ভিত্তিক নয়, বরং অধিকার ভিত্তিক। এমন সুবর্ণ সময়ের রাজনীতিতে ‘দক্ষিণপন্থার উত্থান’কে বড় আকারে উপস্থাপন করা এবং তার ভিত্তিতে ভীতি ছড়ানো কোনোভাবেই কাম্য নয়’, যোগ করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব।
তিনি বলেন, আজকে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ‘দক্ষিণপন্থিদের উত্থান’ সম্পর্কিত এক প্রশ্নে যেভাবে উত্তর দিয়েছেন তা জনমনে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভুল বার্তা দেবে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব বলেন,
আমরাও বাংলাদেশে রাজনীতি করছি। আমরা তো এমন কোনো শক্তির উত্থান দেখছি না। তিনি যদি এমন কোন শক্তির উত্থান দেখেন তাহলে তা পরিষ্কার করে বলা উচিত। কিন্তু তা না করে অনির্দিষ্টভাবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে এমন নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করাকে আমরা অশুভকর বলে মনে করছি। তার এই বয়ান পতিত ফ্যাসিবাদের বয়ানকে সমর্থন করে।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি: ইন্তিফাদা বাংলাদেশ
তিনি আরও বলেন, পতিত ফ্যাসিবাদ তাদের ফ্যাসিজমকে বৈধতা দিতে তাদের অবর্তমানে এমন কোনো শক্তির উত্থানের আশঙ্কাকে বড় করে দেখাতো। এখন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যদি জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে এমন শক্তির উত্থান হয়েছে বলে উদ্বিগ্ন হন, তাহলে আওয়ামী লীগের বক্তব্যই সঠিক বলে প্রমাণ হয়। অথচ এটা সত্য নয়।