প্রেমিকার গলায় ফাঁস, প্রেমিকের দোকান ভাঙচুর!

৪ দিন আগে
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পরকিয়া প্রেমের জেরে প্রেমিকা (১৪) গলাঁয় ফাঁস নিয়ে আত্মহননের চেষ্টা করেছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রেমিকের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান সাইকেল গ্যারেজে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে প্রেমিকার স্বজনদের বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকাল সোয়া ১০টার দিকে উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের সোন্দাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মো. অনিকের (২২) দোকানে এ হামলার ঘটনা ঘটে। তিনি ওই এলাকার কৃষক মাসুদুর রহমানের ছেলে। এরআগে, বুধবার (১২ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে নিজঘরে বাঁশের আড়ার সঙ্গে গলায় ওরনা পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে কিশোরী প্রেমিকা। বর্তমানে সে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, প্রায় এক বছর ধরে উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের বাঁশআড়া গ্রামের এক ব্যবসায়ীর মেয়ের (১৪) সঙ্গে সোন্দাহ গ্রামের মাসুদুর রহমানের ছেলে অনিকের প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছে। বিষয়টি জানাজানি হলে প্রায় চার মাস আগে স্থানীয়ভাবে সালিশ বসানো হয়। সালিশে তাদের প্রেম ভেঙে দেন মাতব্বররা। সালিশের সপ্তাহখানেক পরে অনিককে অন্যত্রে বিয়ে দেন পরিবারের সদস্যরা।

 

এরপর প্রায় ১৪ দিন আগে ওই কিশোরীকে অন্যত্রে বিয়ে দেন তার স্বজনরা। তবুও তাদের মধ্যে মুঠোফোনে যোগাযোগ চলমান ছিল। এনিয়ে উভয় পরিবারের মধ্যে মনমালিন্য চলছিল। এক পর্যায়ে বুধবার সকাল ৯টার দিকে বাবার বাড়ির নিজঘরে গলাঁয় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে কিশোরী। তখন টের পেয়ে স্বজনরা ওই তাকে উদ্ধার কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসক তাকে আইসিইউতে রেখেছেন। সেই ক্ষোভে তার বাবা, চাচাসহ ৮ থেকে ১০জন অনিকের দোকানে হামলা ও ভাঙচুর চালায়।

 

আরও পড়ুন: ইউল্যাবের ছাত্রী তানহার মৃত্যু, প্রেমিককে দায়ী করছে পরিবার

 

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সোন্দাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে অনিকের সাইকেল গ্যারেজের দোকান। দোকানের যন্ত্রপাতি, আসবাব, মালামাল ভাঙচুর করা হয়েছে। সেখানে উৎসুক জনতা ভিড় করেছে। কাজ করছে পুলিশ।

 

এ সময় অনিকের বাবা মাসুদুর রহমান বলেন, ছেলের সঙ্গে একবছরের প্রেম ছিল। এ নিয়ে চারমাস আগে সালিশ বসানো হয়েছিল। সালিশের সপ্তাহখানেক পর ছেলেকে অন্যত্রে বিয়ে করিয়েছি। বিয়ের পরও বিভিন্ন নম্বর থেকে ছেলেকে কল দেয় ওই মেয়ে। কিন্তু ছেলে কোনো কথা বলেনি। হঠাৎ জানতে পারি বুধবার ওই মেয়ে গলাঁয় ফাঁস নিছে। আর সকালে মেয়ের বাবা, চাচাসহ ৮ থেকে ১০ জন ছেলের দোকানে ব্যাপক ভাঙচুর করেছে। পুলিশ এসেছিল। থানায় মামলা করব।

 

এ বিষয়ে জানতে প্রেমিক অনিককে পাওয়া যায়নি। তার ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

 

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ওই কিশোরীর বাড়িতে উৎসুক জনতা। আহাজারি করছেন তার মা। বাড়িতে নেই তার বাবা ও চাচা।

 

এ সময় কিশোরীর মা বিলাপ বিলাপ করতে করতে বলেন, ১৪ দিন মতো হল মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। তবুও ওই ছেলে মেয়েকে বিভিন্ন নম্বর দিয়ে কল করে। শ্বশুর বাড়ির সামনে গিয়ে ঘুরাঘুরি করে। তবে বাড়িতে কোনো ঝগড়া ছিলো না। হঠাৎ বুধবার সকালে খাওয়ার পরে গলাঁয় ফাঁস নিয়েছে মেয়ে। বর্তমানে আইসিইউতে আছে। আমি এর বিচার চাই। তবে আমরা কারো দোকান ভাঙচুর করিনি।

 

আরও পড়ুন: রাতের আঁধারে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়াই কাল হলো শিহাবের

 

কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল চিকিৎসক হোসেন ইমাম ফোনে বলেন, ওই কিশোরী বর্তমানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তবে বর্তমানে শঙ্কা মুক্ত।


কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার জিয়াউর রহমান বলেন, প্রেমের সম্পর্কের জেরে এক মেয়ে গলাঁয় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহননের চেষ্টা করেছে। সেই ক্ষোভে স্বজনরা আজ প্রেমিকের দোকানে ভাঙচুর চালিয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন