প্রবাসী বাবার দাফন শেষে পরীক্ষাকেন্দ্রে মেহনাব

১ সপ্তাহে আগে
সারারাত বাবার নিথর দেহের পাশে বসে কাটিয়েছেন। সকালে জানাজা ও দাফন শেষে পরীক্ষার কেন্দ্রে গেছেন দাখিল পরীক্ষার্থী মেহনাব হোসেন।

হৃদয়বিদারক এ ঘটনাটি ঘটেছে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বড় ডালিমা গ্রামে।

 

বুধবার (৩০ এপ্রিল) ছিল কৃষি বিজ্ঞান পরীক্ষা। মেহনাব পূর্ব খাজুরবাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। পরীক্ষাকেন্দ্র কালাইয়া কামিল মাদ্রাসা।

 

এর আগের দিন মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে মালদ্বীপ থেকে বাবা জসিম উদ্দিনের (৪৫) মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সে করে বাড়িতে পৌঁছায়। বাবা জসিম উদ্দিন ছিলেন মালদ্বীপপ্রবাসী।

 

মেহনাব জানান, ‘বাবাকে সবসময় ভিডিও কলে দেখতাম। তিনি বলেছিলেন, আসন্ন ঈদুল আজহায় বাড়ি ফিরবেন। বাবাকে দেখার অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু তিনি ফিরেছেন লাশ হয়ে। আদর করতে পারলাম না।’

 

আরও পড়ুন: শহীদ কন্যা লামিয়ার পরিবারকে সহায়তা দিল দুই মন্ত্রণালয়

 

স্বজনরা জানান, প্রায় সাত বছর আগে সংসারের সচ্ছলতা ফেরাতে মালদ্বীপে পাড়ি জমান জসিম উদ্দিন। বিদেশে কঠোর পরিশ্রম করে পরিবারের জন্য স্বপ্ন বুনছিলেন। কথা ছিল এবার ঈদে বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু গত শনিবার (২৬ এপ্রিল) বাংলাদেশ সময় রাত ৪টার দিকে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মালদ্বীপের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

 

জসিমের ছোট ভাই মো. মাহফুজ জানান, দেশে ব্যবসায় ক্ষতির পর ঋণে জর্জরিত হয়ে মালদ্বীপে যান জসিম। তার মৃত্যুতে পরিবারে ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

 

নিহতের স্ত্রী মাসুমা আক্তার বলেন, ‘মেয়ে জারিন যখন ছোট, তখন ওর বাবা বিদেশে চলে যান। এখন বুঝ হওয়ার পরও বাবাকে সামনাসামনি দেখা হয়নি। ভিডিও কলে দেখত। এবার ঈদে বাবা আদর করবেন—এই স্বপ্নে ছিল। কিন্তু দেখা পেল শুধু নিথর দেহের।’

 

জসিম উদ্দিন বড় ডালিমা গ্রামের মো. আলাউদ্দিন আহম্মেদের ছেলে। ছয় ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সেজ। এক ছেলে মেহনাব ও এক মেয়ে জারিন (৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী) রয়েছে তার।

 

নিহতের বৃদ্ধা মা বিবি আয়েশা (৭৫) সন্তান হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন