সিলেট নগরীর সৌন্দর্য পর্যটকদের আকর্ষণ করলেও, এখানকার দৈনন্দিন জীবনযাপনে পানি সংকট একটি বড় সমস্যা। বিশেষ করে, শহরের বাইরের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত জনগণ এই সমস্যার শিকার, যাদের সেবা দেয়ার জন্যই ওয়াসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
অফিস বরাদ্দ ও জনবল নিয়োগ না হওয়ার কারণে সিলেট ওয়াসা বোর্ডের কার্যক্রম বিলম্বিত হচ্ছে। সিসিক অভিযোগ করছে যে, ওয়াসার মাধ্যমে পানি সরবরাহের কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালিত না হওয়ায়, চাহিদার অর্ধেক পানিও সরবরাহ করতে পারছে না তারা।
২০২২ সালের ২ মার্চ সিলেট মহানগরে পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিস্কাশন কর্তৃপক্ষ (ওয়াসা) গঠন করা হয়। কিন্তু এক বছর পরও কোনো কার্যক্রম শুরু হয়নি। ২০২২ সালের ২২ অক্টোবর আওয়ামী লীগ-ঘনিষ্ঠ চিকিৎসক এ কে এম হাফিজকে বোর্ডের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হলেও, তার অসুস্থতার কারণে কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে, সিলেট সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে যে, ২০০২ সালে সিলেট পৌরসভা সিটি কর্পোরেশনে উন্নীত হলে এর পরিধি ২৬ দশমিক ৫০ বর্গকিলোমিটার হয়ে ওঠে। ২০২১ সালে এর পরিধি ৪২টি ওয়ার্ডে সম্প্রসারিত হয়। তবে বর্ধিত ১৫টি ওয়ার্ডে পানি সঞ্চালন লাইন স্থাপন হয়নি।
আরও পড়ুন: টানা দুই দিন ৮.৫ ডিগ্রিতে কাঁপছে মৌলভীবাজার
কর্মকর্তারা জানান, সিলেটে পানি সরবরাহের সমস্যা সমাধান করতে দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রয়োজন। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের পানি শাখার প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান জানান, যদি দ্রুত ওয়াসার কার্যালয় স্থাপন ও লোকবল নিয়োগ না হয়, তবে পানি সংকট দূরীকরণ ও নর্দমা ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হবে না।
বর্তমানে, সিলেট নগরীতে দুটি প্ল্যান্টের মাধ্যমে সুরমা নদীর পানি পরিশোধন করা হচ্ছে। ১২ ঘণ্টা চালু থাকলে ১ কোটি ৪০ লাখ লিটার পানি উৎপাদন হচ্ছে, তবে ২৪ ঘণ্টা চালু করলে উৎপাদন দ্বিগুণ হতে পারে। এছাড়া, নগরীর ৪৫টি গভীর নলকূপ থেকে প্রতিদিন আড়াই থেকে ৩ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা হচ্ছে, কিন্তু পুরানো যন্ত্রপাতির কারণে উৎপাদন কমে গেছে।
২০১৬ সালে সিসিক ‘চেঙের খাল ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট’ প্রকল্পের উদ্যোগ নিলেও ওয়াসা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর প্রকল্পটি আটকা পড়ে গেছে।
এদিকে, সিলেটে পানির সংকট সামনের রমজানে আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সিলেটের সাধারণ মানুষ ও সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান।
]]>