প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে চাচার পরিকল্পনায় যুবদলকর্মী খুন, দাবি পুলিশের

৩ সপ্তাহ আগে
নড়াইলের লোহাগড়ায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে আপন চাচার পরিকল্পনায় যুবদল কর্মী সালমান খন্দকার কিলিং মিশনে অংশ নেয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এ হত্যা মামলায় জড়িত শিপন শেখ (৩২) নামে এক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে লোহাগড়া থানা পুলিশ।

শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লোহাগড়া থানার হলরুমে আনুষ্ঠানিক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় ওই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শরিফুল ইসলাম।
 

নিহত যুবদল কর্মী সালমান খন্দকার উপজেলার শামুকখোলা গ্রামের খাজা খন্দকারের ছেলে। আর গ্রেফতারকৃত শিপন শেখ উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের চালিঘাট গ্রামের বোরাক শেখের ছেলে।
 

সংবাদ সম্মেলন ওসি শরিফুল ইসলাম জানান, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা ও তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যে সালমান হত্যায় জড়িত অন্যতম সদস্য উপজেলার গন্ডব গ্রামের নয়ন কাজীকে গত মাসের ১৭ তারিখ গ্রেফতার করা হয়। তার দেয়া তথ্য ও তদন্ত বিশ্লেষণে এ হত্যাকান্ডে জড়িত আরও এক সদস্য শিপন শেখকে সনাক্ত করে পুলিশ। শুক্রবার গভীর রাতে শিপন শেখকে ধরতে উপজেলার চালিঘাট গ্রামে অভিযান চালিয়ে তার নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী হত্যায় ব্যবহৃত একটি গুপ্তি (দুই দিকে ধারালো চাকু) পাশের বাড়ির খড়ের গাদার ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়।

আরও পড়ুন: পরকীয়ার বলি হলেন নড়াইলের মুন্নি, প্রেমিক গ্রেফতার

ওসি শরিফুল ইসলাম আরও বলেন, গ্রেফতার শিপন শেখ এর বিরুদ্ধে পূর্বের একটি মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া হত্যার ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
 

এদিকে গ্রেফতারকৃত অভিযুক্ত শিপন শেখ সালমান হত্যায় নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এস আই) তারক বিশ্বাস।
 

গ্রেফতারকৃত অভিযুক্ত শিপন শেখের স্বীকারোক্তি মোতাবেক, সালমানের শামুকখোলা গ্রামে একটি হত্যা মামলা ছিল, সেই মামলার কাউন্টার দিতে ও প্রতিপক্ষদের ফাঁসিয়ে অর্থ আদায় করতে তার আপন চাচা রিপন খন্দকারসহ গ্রাম্য দলীয় আরও কয়েকজন সালমানকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরে সালমানের চাচা রিপন খন্দকার ও নয়ন খন্দকার (স্থানীয় বংশীয় লিডার) সালমানকে হত্যা করতে উপজেলার গন্ডব গ্রামের ছেলে মালয়েশিয়ায় থাকা কিশোর গ্যাংয়ের লিডার স্বপন কাজীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরিকল্পনা মোতাবেক এ হত্যাকাণ্ডে ৮ লাখ টাকায় ৮ থেকে ৯ জনের স্বপন কাজীর অনুসারী কিশোর গ্যাং সদস্যদের ভাড়া করা হয়। আর গ্যাংয়ের সদস্যদের সঙ্গে অনলাইনে কথা বলেন মালয়েশিয়া প্রবাসী স্বপন কাজী। 
 

শিপন আরও জানান, পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন রাতে উপজেলার কাউলিডাঙ্গা বিলের কালুর ইট ভাটায় সালমানের চাচা রিপন খন্দকার তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান। আগে থেকেই ঘটনাস্থলেই অবস্থান করছিলেন ওই গ্যাংয়ের সদস্যরা। ইট ভাটায় চাচা রিপনের সাথে সালমান পৌঁছালে, তাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন তারই চাচা। এসময় ৮ থেকে ৯ জনের দল এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে সালমানের মৃত্যু নিশ্চিত করেন তারা। আর ঘটনার পর শিপনকে ৩০ হাজার টাকা দিয়েও সেটা ফেরত নিয়ে নেন সালমানের চাচা রিপন।

আরও পড়ুন: নড়াইলে ডাকাতির সময় গৃহকর্তাকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে ৫ জনের যাবজ্জীবন

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের (৯ মে) শুক্রবার সকালে উপজেলার শামুকখোলা গ্রামের কাউলিডাঙ্গা বিল থেকে সালমান খন্দকার নামে এক যুবদল কর্মীর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় রোববার (১১ মে) নিহত সালমানের ভাই নাহিদ খন্দকার বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন