প্রেসব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘গত ৯ মে ভোরে সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া চরে ৭৫ বাংলাদেশি মুসলিম এবং ৩ জন ভারতীয় মুসলিমকে জোরপূর্বক পুশ ইন করে বিএসএফ। তাদের অধিকাংশই দীর্ঘদিন ধরে ভারতের গুজরাট রাজ্যে বসবাস করে আসছিল। বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন তারা।
এসময় পুশইন হওয়া বাংলাদেশিরা বলেন, ‘না খেয়ে মরে যাব, তবু ওদেশে আর যাব না।’ তারা জানান, পনেরো দিন পর মুখে ভাত দিতে পেরেছেন তারা বাংলাদেশে পৌঁছে।
ভারতীয় কোস্টগার্ড ও বিএসএফের ফেলে যাওয়ার আগে তাদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন করা হয়েছে। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে আটকে রেখে সকালে একটি বিস্কুট, অল্প পানি, আর রাতে একটি পাউরুটির বাইরে সামান্য পানি ছাড়া কিছুই মেলেনি বলে অভিযোগ তাদের। এমনকি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়ার কথা বলতেই তাদের ওপর চলতো বেপরোয়া লাটিচার্জ। মঙ্গলবার সকালে শ্যামনগর থানা চত্বরে আলাপচারিতায় এসব কথা জানান ভুক্তভোগীরা।
আরও পড়ুন: সুপরিকল্পিতভাবে পুশইন করছে বিএসএফ, সীমান্তে সতর্ক বিজিবি
ভারতীয় কোস্টগার্ড ও বিএসএফের মাধ্যমে পুশইন হওয়া ৭৮ বাংলাদেশির মধ্যে ৭৫ জনকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হলেও নতুনভাবে বিপদে পড়েছে তিন তরুণ। বাবা-মা সবাই বাংলাদেশি হওয়া সত্ত্বেও শুধুমাত্র ভারতে জন্ম নেয়ার কারণে তাদের অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের পিও (মিউজ) মো. মশিউর রহমান বাদী হয়ে ওই তিন তরুণের বিরুদ্ধে ১৯৫২ সালের অবৈধ অনুপ্রবেশকারী ধারায় মামলা করায় তাদের কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
তিন তরুণ হলো- খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা থানার খালিদ শেখ ও কাকলী দম্পতির ছেলে আব্দুর রহমান (২০), নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বিষ্ণুপুর গ্রামের মৃত মুন্না শাহ ও মৃত নুরজাহান বেগমের ছেলে মো. হাসান শাহ(২২) ও সোহেল শেখ ও সাবিনা দম্পতির ছেলে সাইফুল শেখ (১৯)। এজাহারে উল্লেখ করা হয় বাবা-মা গুজরাটে অবস্থানকালে গুজরাটের ফুলবাড়িয়া এলাকার নেহেরীনগর জোপারপাচ্চি এলাকায় তাদের জন্ম।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে ৭৮ জনকে পুশইন / ‘গুজরাট থেকে চোখ বেঁধে ধরে এনে চালানো হয় পৈশাচিক নির্যাতন’
এদিকে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হুমায়ুন কবির মোল্যা জানান, রোববার রাতে ৭৮ জনকে কোস্টগার্ড তাদের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছে। তিনজনকে অনুপ্রবেশ মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের স্বজনদের কাছে দেয়া হয়েছে।