বুধবার (৫ নভেম্বর) ভোরে সূর্যোদয়ের সঙ্গে হাজার হাজার নারী-পুরুষ, শিশু ভক্তরা আলোরকোল সংলগ্ন সমুদ্র সৈকতে নেমে স্নান করেন। পানির মধ্যেই নানা ধরনের প্রার্থনা করেন সনাতন ধর্মালবম্বীরা। পরে পূজা -আর্চনা সম্পন্ন করে নিজ নিজ গন্তব্যে রওনা হন ভক্তরা।
এর আগে সোমবার (০৩ নভেম্বর) সকালে বন বিভাগ ও পুলিশ সদস্যদের প্রহরায় নদী পথে রাস উৎসবে যায় পুণ্যার্থীরা। সন্ধ্যায় দুবলার চরের আলোরকোলে পৌঁছে তারা পূজা করেন। পরদিন মঙ্গলবার সারাদিন পূজা অর্চনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শ্রীকৃষ্ণের আরাধনা, গাজীকালুর পূজাসহ নানা আচার পালন করেন পুণ্যার্থীরা। রাতেও পূজার্চনার মধ্য দিয়ে কাটে পুণ্যার্থীদের সময়। এবার রাস পূজা উপলক্ষে মেডিকেল টিম, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ টহল টিমসহ বন বিভাগের কর্মকর্তারা সতর্ক অবস্থানে ছিলেন।
সনাতন ধর্মাবলম্বী ছাড়া অন্যদের বনে প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। নিষিদ্ধ থাকার পরেও নানা কৌশলে তারা বনে প্রবেশ করেছেন। হরিণ শিকারসহ নানা অপরাধের চেষ্টা করেছেন। রাস পূজার প্রথম দিন অর্থাৎ ৩ নভেম্বর দুপুরে হরিণ শিকারের ফাঁদ পাতার সময় একজনকে আটক করে বনরক্ষীরা। এসময় ওই শিকারীর সঙ্গে থাকা অন্য শিকারীরা বন কর্মকর্তাদের ওপর হামলা করেন।
আরও পড়ুন: নিরীহ আওয়ামী লীগ কর্মীদের বুকে টেনে নিতে বললেন বিএনপি নেতা
হামলায় সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) রানা দেব আহত হয়েছেন। পরবর্তীতে এ ঘটনায় রাফি হাসান (২৬), শহিদ মল্লিক (২৮) ও আল আমিন আকুঞ্জি (২৭) নামের তিন শিকারীকে আটক করে আদালতে পাঠায় বন বিভাগ। এছাড়া এই তিন দিনে ব্যাপকভাবে হরিণ শিকারের চেষ্টা করেছেন পুণ্যার্থীর ছদ্মবেশে বনে ঢোকা অপরাধীরা। তিন দিনে ৩২ জন হরিণ শিকারীকে আটক করেছে বন বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া হরিণ শিকারের কাজে ব্যবহৃত দুটি ট্রলার ও বিপুল সংখ্যক হরিণ শিকারের ফাঁদ জব্দ করেছে বন বিভাগ। এছাড়া নদী পথে যাওয়ার সময় যাচাই-বাছাই শেষে মুসলিম সম্প্রদায়ের শতাধিক মানুষকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।
রাস উৎসব উদযাপন পরিষদ ও দুবলা ফিমারমেন গ্রুপের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, দুর্গম বঙ্গোপসাগর পারে প্রায় ২৩০ বছর ধরে চলে আসছে হিন্দু ধর্মের এই রাস উৎসব ও রাস মেলা। এবারে রাস পূজা বনবিভাগ ও একাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শান্তিপূর্ণভাবে সমাপ্ত হয়েছে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘এবার রাস উৎসব উপলক্ষে বন বিভাগ, পুলিশ, র্যাব, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর ছিল। এরপরেও ছদ্মবেশে পরিচয় গোপন করে কিছু মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা বনে প্রবেশ করেছেন। হরিণ শিকারের প্রস্তুতির সময় বন কর্মকর্তাদের ওপর হামলাও করেছেন শিকারীরা। এ সময়ে আমরা ৩২ জন শিকারীকে আটক করেছি।’

৩ সপ্তাহ আগে
৬






Bengali (BD) ·
English (US) ·