সোমবার (৭ জুলাই) রাতে শ্রীনগর থানা পুলিশ তাদের আটক করে।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, পারিবারিক কলহের কারণে এ ঘটনা ঘটতে পারে। এ জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করতে শিশুদুটির মা মা শান্তা বেগম ও বাবা সোহাগ শেখকে আটক করা হয়েছে।
এর আগে রাত ৮টার দিকে বিবন্দীর একটি পুকুর থেকে সাত মাস বয়সি যমজ শিশু লামিয়া ও সামিহাকে উদ্ধার করে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
ওই সময় শান্তা বেগম অভিযোগ করেন, তার স্বামী সোহাগ শেখ ঘর থেকে দুই কন্যাকে নিয়ে পাশের ডোবায় ফেলে দেন। অপরদিকে সোহাগ শেখের দাবি, তার স্ত্রী-ই দুই সন্তানকে পানিতে ফেলে হত্যা করেছেন।
শিশুদের চাচা সাকিব শেখ বলেন, ‘রাত ৮টার দিকে সোহাগের ঘর থেকে চিৎকার শুনে ছুটে গিয়ে শান্তার কাছ থেকে জানতে পারি, সোহাগ বাচ্চাদের ডোবায় ফেলে দিয়েছে। তখন ঘরে সোহাগকে পাওয়া যায়নি। আমি পুকুরে গিয়ে দেখি, দুই শিশু উপুড় হয়ে পড়ে আছে। সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই।’
আরও পড়ুন: মুন্সীগঞ্জে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে হেলপার নিহত, আহত ১৫
শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. সিনথিয়া নূর বলেন, ‘দুই শিশুরই পেটভর্তি পানি ছিল। পানি থেকে তোলার আগেই হয়তো তাদের মৃত্যু হয়েছে।’
শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমূল হুদা খান বলেন, ‘দুই শিশুকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। সঠিক ঘটনা উদ্ঘাটনে তদন্ত চলছে, পুলিশের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে।’
জানা যায়, শ্রীনগর উপজেলার বিবন্দী গ্রামের দিনমজুর সোহাগ শেখের (২৮) সঙ্গে প্রায় দুই বছর আগে উপজেলার বীরতারা ইউনিয়নের মজিদপুর দয়হাটা গ্রামের শাহ আলমের মেয়ে শান্তার (২৪) বিয়ে হয়। পাঁচ মাস আগে শান্তা যমজ কন্যাসন্তানের জন্ম দেন।
সন্তান হওয়ার পর থেকে তাদের মধ্যে প্রায়ই পারিবারিক কলহ লেগে থাকত। শান্তা সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়িতে থাকলেও বেশ কয়েক দিন আগে তিনি স্বামী সোহাগের বাড়িতে আসেন।
সোমবার রাত ৮টার দিকে সোহাগের ঘর থেকে হট্টগোল শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে জানতে পারেন লামিয়া ও সামিহাকে পুকুরে ফেলে দেয়া হয়েছে। পরে পুকুর থেকে শিশু দুটিকে উদ্ধার করে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।