পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে তৎপর সরকার, নতুন পাচার রোধে পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ

২ সপ্তাহ আগে
বাংলাদেশ থেকে পাচার করা অর্থ উদ্ধারে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে কাজ শুরু করেছে সরকার। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও সংস্থাগুলোর মধ্যে আন্তঃসংযোগ করে দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে অর্থ ফেরানোর প্রক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদি হওয়ায় রাজনৈতিক সরকারের শক্ত ভূমিকা নিতে হবে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। আর অর্থনীতিবিদরা বলছেন, নতুন করে অর্থপাচার বন্ধে শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে নির্বাচিত সরকারকে।

আর্থিক খাত সংস্কারে গঠিত শ্বেতপত্র কমিটির প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ সরকারের সবশেষ ১৬ বছরে প্রায় ২৮ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। এই অর্থ ফেরত আনার জন্য এবার অন্তর্বর্তী সরকার কার্যক্রম ত্বরান্বিত করেছে।

 

পাচার হওয়া অর্থের মধ্যে বড় অংশ ‘ট্যাক্স হ্যাভেন’ দেশে বাড়ি কেনাসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করেছে অপরাধ চক্র। অর্থ ফেরত আনতে দেশের অভ্যন্তরীণ সরকারি দফতরগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে বলা হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফার্ম ও সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ ও লবিং করা হচ্ছে।

 

সম্প্রতি ওয়াশিংটন সফরে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। এটি নতুন ধরনের কার্যক্রম; আগে বিদেশ থেকে টাকা ফেরানোর মতো কাজ আমরা করিনি। তাই এই প্রক্রিয়াটি আরও দক্ষতার সঙ্গে রপ্ত করতে হবে। আমাদের ইন্টারমিনিস্ট্রিয়াল এজেন্সিগুলোর কর্মদক্ষতা ও আন্তঃসংযোগ উন্নত করতে হবে।’

 

আরও পড়ুন: লাইসেন্স পেল ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’, চেয়ারম্যান হলেন কে?

 

পাচার হওয়া অর্থ ফেরানোর প্রক্রিয়া জটিল ও দীর্ঘমেয়াদি। অন্তর্বর্তী সরকার কার্যক্রম শুরু করলেও কবে নাগাদ উদ্ধার হবে, সে প্রশ্নের উত্তর নেই গভর্নরের কাছেও। তিনি বলেন, এটি একটি আইনগত প্রক্রিয়া। সাধারণত এই ধরনের কাজ করতে তিন থেকে পাঁচ বছর লাগে। অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদে পুরোপুরি সম্ভব নয়, তবে বর্তমান সরকার যতটা সম্ভব কাজটা এগিয়ে নেবে।

 

তবে নতুন করে অর্থপাচার বন্ধে সরকারকে আন্তরিক হতে হবে বলছেন অর্থনীতিবিদরা। জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ড. জামাল উদ্দিন বলেন, যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে, তারা বলে সবকিছু ঠিক করছি; তবে নতুন সরকার এলে বিগত সরকারের অনিয়ম‑দুর্নীতিগুলো সামনে আসে। তাই পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধার করার চেয়ে নতুন করে যাতে টাকা দেশের বাইরে না যায় সেটার জন্য চেষ্টা করতে হবে।

 

দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের দুর্বল নীতি এবং আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বিএফআইইউর দুর্নীতিও অর্থপাচারে সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে বলেও অভিযোগ আছে। তবে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর নিশ্চিত করেছেন, সেখানে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরানোর জন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও মহলের সঙ্গে আলোচনা চলছে। কিন্তু প্রকৃতভাবে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার জন্য রাজনৈতিক সরকারের সরাসরি সদিচ্ছা একান্তভাবে প্রয়োজন। যদি তা না থাকে, তবে সব ধরনের অগ্রগতি পিছিয়ে যাবে। 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন