সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাত ৮ টার দিকে ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলী এলাকার শাহ সুফি সড়কের সৌদি-বাংলা প্রাইভেট হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী রোগী জেলার সদরপুর উপজেলার আসলাম হোসেনের স্ত্রী।
রোগীর স্বজন ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুরে হাসপাতালটিতে পাইলসের সমস্যা নিয়ে গৃহবধূ হ্যাপি বেগম ভর্তি হন। চিকিৎসক ডা. ফজলুল হকের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছিল। সন্ধ্যা ৭ টার দিকে তাকে অপারেশন থিয়েটরে প্রবেশ করানো হয় এবং ডা. নজরুল ইসলাম পিত্তথলির অস্ত্রোপচার করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে ওই চিকিৎসক হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান।
অপারেশনের তিন ঘণ্টা পার হলেও হ্যাপি বেগমকে কোনো চিকিৎসা দেয়া হয়নি। পরে রোগীর স্বজনরা প্রশাসন, সাংবাদিক ও ছাত্র প্রতিনিধিদের বিষয়টি জানান। রাত সাড়ে ৯ টার দিকে সিভিল সার্জন ও বিএমএর নেতারা হাসপাতালে এসে রোগীর শারীরিক পরীক্ষা করে তাকে ফরিদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালে পাঠান। এ ঘটনায় রোগীর পরিবার, শিক্ষার্থী ও সুধী মহল ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
আরও পড়ুন: ‘সিজার’ করে বোরকা পরে পালানোর সময় অষ্টম শ্রেণি পাস যুবক ধরা!
ভুক্তভোগী হ্যাপি বেগমের মেয়ে জান্নাতি আক্তার অভিযোগ করে বলেন, ‘হাসপাতালে আরেকজন রোগী ভর্তি ছিল, তার পিত্তথলিতে পাথর হয়েছে। কিন্তু সেই রোগীর জায়গায় আমার আম্মুকে অপারেশন করেছে। কোনো কাগজপত্র যাচাই-বাছাই ছাড়া কেন অপারেশন করল? আমার আম্মুর কিছু হলে কাউকে ছাড়ব না।’
তবে এমন অবস্থায় হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা পালিয়ে যায় বলে তরুণ সংগঠক আবরাব নাদিম অভিযোগ করে বলেন, ‘৩ ঘণ্টা হয়ে গেলেও রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হয়নি। একজন চিকিৎসকের কাছে রোগীদের নিরাপত্তা কোথায়? রোগীর কাগজপত্র, ফিটনেস না দেখেই অপারেশন করা হয়েছে। এরা মানুষের জীবন নিয়ে ব্যবসা করে। আমরা এ ঘটনার উপযুক্ত বিচারের দাবি জানাই এবং হাসপাতালটি স্থায়ীভাবে বন্ধের দাবি জানাই।’
হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট ও চিকিৎসকের অবহেলা ও গাফিলতির বিষয় তুলে ধরে সিভিল সার্জন ডা. মাহামুদুল হাসান বলেন, ‘ডাক্তার রোগীর কাগজপত্র ঠিকমতো দেখেননি। এ কারণে পাইলসের রোগীকে পিত্তথলির অপারেশন করা হয়েছে। আজ থেকেই হাসপাতাল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামীকাল তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং তদন্তের ভিত্তিতে হাসপাতাল ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
]]>