জ্বালানি গ্যাস সিলিন্ডারবাহী ট্রাক চালক রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘গ্যাস সিলিন্ডার ভর্তি বোতল নিয়ে এই ভাঙা সড়ক দিয়ে চলাচল করতে খুব ভয় লাগে। সংঘর্ষের শব্দ সবসময় কানে আসে। দ্রুত সড়কের কাজ শেষ হলে নিশ্চিন্তে গাড়ি চালাতে পারতাম।’
দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার সাথে চট্টগ্রাম ও মংলার দূরত্ব কম হওয়ায় এ সড়কটি যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৯ সালে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়ককে চার লেনে উন্নীত করার প্রকল্প হাতে নেয়। তবে জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন না হওয়ায় পাঁচ বছরেও কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। কয়েক দফা টেন্ডার বাতিল করতে হয়েছে।
দূরপাল্লার ট্রাক চালক মকবুল হোসেন বলেন, ‘সড়কটি এতই ভাঙা যে কখনো তিন নম্বর গিয়ারের ওপরে যেতে পারি না। মালবাহী গাড়ি নিয়ে চলার সময় দুর্ঘটনা ঘটে, অনেক গাড়ি অকেজো হয়ে সড়কেই পড়ে থাকে। এতে পণ্য নষ্ট হয়, ব্যবসায়ী ও চালকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।’
আরও পড়ুন: মাদারীপুরে মহাসড়কের পাশে ময়লার ভাগাড়, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি
মংলা থেকে চট্টগ্রামগামী ট্রাক চালক সোহেল বেপারী বলেন, ‘ভালো সড়ক দিয়ে ঢাকা ঘুরে চট্টগ্রাম যেতে ১২০ কিলোমিটার বেশি পথ পাড়ি দিতে হয়। তাই সাশ্রয়ের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ শরীয়তপুর-চাঁদপুর সড়ক ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছি। কিন্তু সড়কের অবস্থা এখন এতটাই খারাপ যে চলাচল প্রায় অসম্ভব। দ্রুত মেরামত না হলে সমস্যার সমাধান নেই।’
স্থানীয় বাসিন্দা ইসমাইল সরদার বলেন, ‘তিন বছর আগে সড়কের যা অবস্থা দেখে বিদেশে গিয়েছিলাম, এখন ফিরে এসে দেখি তার চেয়েও খারাপ। ধুলাবালিতে বাড়িতে এক বেলাও শান্তিতে খেতে পারি না। এভাবে চলতে থাকলে বাড়ি ছেড়ে পালানো ছাড়া উপায় থাকবে না।’
শরীয়তপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ নাবিল হোসেন বলেন, ‘জমি অধিগ্রহণের ধীরগতির কারণে এমন সমস্যা হয়েছে। ডিপিপি সংশোধন করে ব্যয় বাড়িয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুতই কাজ শুরু হবে।’
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, ‘জমি অধিগ্রহণসহ সব জটিলতা দ্রুত নিরসনের চেষ্টা চলছে। জনস্বার্থে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে দ্রুত জনদুর্ভোগ কমানো হবে।’
]]>