পরিবেশ অধিদফতরের অভিযানে বাধার ঘটনায় মামলা, এনসিপি নেতাসহ আসামি ৪ শতাধিক

বান্দরবানের লামায় অবৈধ ইটভাটা নির্মাণ ও পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদফতর ও উপজেলা প্রশাসনের যৌথ অভিযানে বাধা দেয়ার ঘটনায় একটি মামলা করা হয়েছে। ওই মামলায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী এরফানুল হক রুমেলসহ (২৫) ১১ জনকে আসামি করেছে পরিবেশ অধিদফতর। এ মামলায় আরও ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

১৭ নভেম্বর (সোমবার) লামা থানায় মামলা দায়ের করেন পরিবেশ অধিদফতরের পরিদর্শক মোহাম্মদ নুর উদ্দিন।

মামলায় আরও যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে; তারা হলেন: এবি ওয়াহিদ (৫০), মিজবাহ উদ্দিন মিন্টু (৪৮), মো. মহিউদ্দিন (৪০), শওকত ওসমান (৪০), খাইয়ের উদ্দিন মাস্টার (৫০), মুজিবুল হক চৌধুরী (৫০), মিজান, জলিল, আলম মেম্বার ও জহির।

এ বিষয়ে পরিবেশ পরিদর্শক মো. নুর উদ্দিন জানান, ইটভাটায় অভিযানের সময় এলাকার মানুষরা কাফনের কাপড় পরে শুয়েছিলেন। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট আর অভিযান চালাতে পারে নাই। সেখানে স্থানীয়সহ এনসিপি নেতাও জড়িত ছিলেন। ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশ অনুযায়ী এ মামলা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: হাসপাতালের অনিয়মের বিরুদ্ধে মানববন্ধনে হামলা, কব্জি ভাঙল এনসিপি নেতার

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ফাইতং ইউনিয়নে অনুমোদন ছাড়াই ৩১টি ইটভাটার কার্যক্রম চলছে। এসব ইটভাটার মধ্যে এ বছর প্রায় ২৫টির কার্যক্রম চালু হয়। এরমধ্যে পাঁচ-ছয়টি ইটভাটার চুলায় আগুন দেয়া শুরু হয়েছে। ইটভাটার মালিকরা পাহাড় ও বন জঙ্গল কেটে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের মারাত্মক ক্ষতি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

জানা যায়, গত রোববার (১৬ নভেম্বর) ফাইতং ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় পরিবেশ অধিদফতরের সদর দফতর থেকে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রেজুয়ান উল ইসলামের নেতৃত্বে অবৈধ ইটভাটা ও পাহাড় কাটাসহ পরিবেশ ধ্বংসের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করতে যায়।

এ সময় গেলে ইটভাটা মালিকপক্ষের লোকজন রাস্তা অবরোধ করে মানববন্ধন করেন। এ সময় অভিযানের উদ্দেশ্যে আসা পরিবেশ অধিদফতর ও প্রশাসনের গাড়িবহরের সামনে কাফনের কাপড় পরে সড়কে শুইয়ে প্রতিবাদ করেন ইটভাটার শ্রমিকরা। পরে প্রশাসনে লোকজন বাধার মুখে পড়ে অভিযান বাদ দিয়ে চলে যায়।

আরও পড়ুন: কল রেকর্ড ফাঁসে এনসিপি নেতা রিজভীকে সাময়িক অব্যাহতি

এ বিষয়ে বান্দরবান জেলা পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘প্রশাসনের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা ফাইতং এর অবৈধ ইটভাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযানে যায়। কিন্তু অভিযানের সময় এনসিপির এক নেতাসহ ইটভাটার মালিকপক্ষের লোকজন বাধা দেয়। তাদের অনেক বুঝানো হয়, তারপর তারা আমাদের কথা কর্ণপাত না করে অভিযান পরিচালনা করতে দেয়নি। অভিযানে ব্যর্থ হয়ে আমরা সেখান থেকে চলে আসি।’

তিনি আরও বলেন, পরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রীয় কাজে বাধা দেয়ার অপরাধে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৩-৪  জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আগামীতে অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
 

]]>