গ্রেফতার যুবক সোহেল সরদার কালিয়া উপজেলার নড়াগাতী থানাধীন ডুমুরিয়া গ্রামের সামাদ সরদারের ছেলে।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় পিবিআই যশোরের পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন বিষয়টি সময় সংবাদকে নিশ্চিত করে বলেন, তথ্য প্রযুক্তি ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণের মাধ্যমে মুন্নি হত্যায় প্রধান অভিযুক্ত সোহেলকে ঢাকার কেরানীগঞ্জে শনাক্ত করা হয়। পরে বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাতে যশোর পিবিআই ও কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। ওই থানা এলাকার তেঘরিয়া বাসস্ট্যান্ডের পার্শ্ববর্তী একটি মেস থেকে প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সোহেল মুন্নির সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক স্বীকার করেন। প্রায় ১৪ মাস আগে মুন্নিকে খুলনার তেরাখাদা এলাকার হৃদয়ের সাথে বিয়ে দেন তার পরিবার। বিয়ের পরও মুন্নির সাথে সোহেলের প্রেমের সম্পর্ক চলমান ছিল। গত শুক্রবার (২৯ আগস্ট) সকালে খুলনার শ্বশুরবাড়ি থেকে একাই বাবার বাড়ি কালিয়াতে আসেন তিনি। ওই দিন বিকেলে শ্বশুর বাড়ি ফিরে যাওয়ার কথা থাকলেও আর ফেরেননি।
আরও পড়ুন: নড়াইলের আলোচিত সেই কৃষি কর্মকর্তাকে ডিমোশন দিয়ে বদলি
আরও জানায়, ওই দিন গত রাত আনুমানিক ৯টার দিকে নলামারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনে দেখা করেন মুন্নি ও তার প্রেমিক সোহেল। এসময় সোহেলকে বিয়ে করার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন গৃহবধূ মুন্নি। তবে সোহেল বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়ায় তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডতা হয়। এর একপর্যায়ে সোহেল রাগান্বিত হয়ে মুন্নিকে হত্যা করে মরদেহ কচুরিপানায়পূর্ণ ডোবায় ফেলে দেন। হত্যার পর মুন্নির গলায় থাকা স্বর্নের একটি চেইন নিয়ে যান তার প্রেমিক। পরে সেটিকে নকল মনে করে বাড়ির পেছনের বাঁশবাগানে ফেলে দেয়। পিবিআই অভিযুক্ত সোহেলকে গ্রেফতারের পর তার দেয়া তথ্যে মুন্নির পরনে থাকা স্বর্নের চেইনটি উদ্ধার করে।
অভিযুক্ত সোহেলকে নড়াইল আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান যশোর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (২৯ আগস্ট) সন্ধ্যার পর নিখোঁজ হয় কালিয়া উপজেলার নলামারা গ্রামের প্রবাসী শিমুল মিনার মেয়ে মুন্নি। সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান না পেয়ে ভুক্তভোগীর মা সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে নড়াগাতী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: নড়াইলের নদীতে মিললো অজ্ঞাত নারীর ভাসমান মরদেহ
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দক্ষিণ নলামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনের ডোবা থেকে যুবতীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পরে পরিবারের সদস্যরা গিয়ে মুন্নির মরদেহ শনাক্ত করেন। নড়াগাতী থানা পুলিশ সুরতহাল শেষে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ঘটনার পর মুন্নির মা বাদী হয়ে নড়াগাতী থানায় অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
]]>