পতনের মুখে নেতানিয়াহুর জোট সরকার

৪ সপ্তাহ আগে
সেনাবাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক করে করা একটি আইন ঘিরে সৃষ্ট অস্থিরতার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জোট সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার ইউনাইটেড তোরাহ জুডাইজম (ইউটিজে) সরকার থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এর ফলে চলমান গাজা যুদ্ধের এক কঠিন সময়ে নেতানিয়াহুর শাসন অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।

ইসরাইলি নাগরিকের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত দেশের সেনাবাহিনীতে দায়িত্ব পালন করা বাধ্যতামূলক। তবে হারেদি নামে একটি কট্টর ইহুদি ধর্মীয় গোষ্ঠীর সদস্যরা এ ব্যাপারে ছাড় পেয়ে আসছিল। কিন্তু গাজা যুদ্ধের প্রেক্ষিতে সেনা ঘাটতি মোকাবিলায় সম্প্রতি নতুন একটি বিল আনা হয়েছে যেখানে হারেদি গোষ্ঠীর সদস্যদের জন্যও সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।

 

আইনটির কারণে হারেদি সম্প্রাদায় স্বাভাবিকভাবেই নেতানিয়াহু সরকারের উপর ক্ষুব্ধ এবং এবং তারা এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। এমনকি সম্প্রতি বিক্ষোভ চলাকালে হারেদিরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষেও লিপ্ত হয়েছে। এই হারেদি সম্প্রদায়ের একটা বড় অংশের প্রতিনিধিত্ব করে ইউনাইটেড তোরাহ জুডাইজম (ইউটিজে) পার্টি।

 

নেতানিয়াহুর জোট সরকারের মধ্যে সেনাবাহিনীতে জোরপূর্বক নিয়োগের বিষয়টি নিয়ে দ্বন্দ্ব অনেকদিনের হলেও সম্প্রতি গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে আরও প্রকট আকার ধারণ করে। কারণ যুদ্ধের কারণে সেনাবাহিনীতে ব্যাপক জনবল ঘাটতি দেখা দিয়েছে। আর নেতানিয়াহু সরকার সেই ঘাটতি মোকাবিলা করতে চাইছে হারেদি গোষ্ঠীর সদস্যদের দিয়ে।

 

আরও পড়ুন: উত্তর গাজায় ট্যাঙ্ক বিস্ফোরণে তিন ইসরাইলি সেনা নিহত

 

বিষয়টির মিমাংসা না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত নেতানিয়াহুর সরকার থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইউনাইটেড তোরাহ জুডাইজম বা ইউটিজে। সরকার থেকে সরে যাওয়ার কারণ হিসেবে ইউটিজের একটি একটি অংশ দেগেল হাতোরাহ গোষ্ঠী এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘সরকার বারবার (হারেদি) ইহুদি শিক্ষার্থীদের মর্যাদা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘন করার পর তাদের আইনপ্রণেতারা ‘জোট সরকার থেকে তাদের পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।’

 

২০২২ সালে জোট সরকার গঠন করেন নেতানিয়াহু। তার এই সরকারকে ইসরাইলের এ যাবৎকালের সবচেয়ে কট্টর ডানপন্থি সরকার বলা হয়ে থাকে। হারেদি শিক্ষার্থীদের সেনাবাহিনীতে যোগদানের বিষয়টি ছাড় দেয়ার শর্তেই 
সঙ্গে জোট সরকার গড়তে সম্মত হয়েছিল ডানপন্থি দলগুলো।

 

তবে বাকি দলগুলো এই আইনে কোনো ছাড়ের সম্পূর্ণ বিরোধী ছিল। এর মধ্যেই গত বছর দেশটির সর্বোচ্চ আদালত ধর্মীয় শিক্ষার্থীদের জন্যও সেনাবাহিনীতে যোগদানের পক্ষে রায় দেয়। যার ফলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে থাকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে নানাভাবে চেষ্টা করে আসছেন নেতানিয়াহু। তবে শেষ পর্যন্ত সব চেষ্টা ব্যর্থ হলো।  

 

আরও পড়ুন: গুপ্তচরবৃত্তির শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও সম্পদ বাজেয়াপ্ত, আইন পাস করল ইরান

 

যদিও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী একটি দল সরে যাওয়ায় নেতানিয়াহুর শাসন এখই ভেঙে পড়ছে না। তবে তার সরকারে সংখ্যাগরিষ্ঠতা এখন কার্যত সুতোয় ঝুলছে যা এখন দুটি অতি-ডানপন্থি দলের ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এই দলগুলোও হামাসের সাথে যুদ্ধবিরতি আলোচনায় ছাড়ের বিরোধিতা করছে এবং গাজায় যুদ্ধ শেষ করার বা এমনকি থামানোর পদক্ষেপের ক্ষেত্রে সরকার থেকে সরে যাওয়ার হুমকি দিয়ে রেখেছে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন