পঞ্চগড়ে ধর্ষণ মামলায় ৬ আসামির যাবজ্জীবন

১ সপ্তাহে আগে
পঞ্চগড়ে ২০২২ সালের চাঞ্চল্যকর গণধর্ষণের এক মামলায় দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া ও সাক্ষীদের সাক্ষ গ্রহণের পর ৬ জন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

রায়ে ওই ৬ আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়।


বুধবার (২৮ মে) দুপুরের পর পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মাসুদ পারভেজ এ দণ্ডাদেশ দেন।


এ ঘটনায় বাদী পক্ষের আইনজীবী সন্তোষ প্রকাশ করলেও, রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে বলে জানান আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।


দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, আটোয়ারী উপজেলার মালগোবা এলাকার আমিনুর রহমানের ছেলে হাসান আলী (২৫), পুরাতন আটোয়ারী এলাকার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৫১), একই এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে আমিনুল ইসলাম (৩০), কৈলাশ চন্দ্রের ছেলে অমর চন্দ্র (৩৮), খাজিম উদ্দিনের ছেলে নজরুল ইসলাম (৪৩) ও একই উপজেলার ফতেহপুর এলাকার খামির উদ্দিনের ছেলে সবুজ আলী (৩৩)।

আরও পড়ুন: খুলনায় মাদক মামলায় যাবজ্জীবন

তবে মামলার আরেক আসামি আটোয়ারী উপজেলার মালগোবা এলাকার সমিজুল ইসলামের ছেলে রাজু ইসলামের বয়স ১৮ বছরের কম হওয়ার তার বিচার কার্য হচ্ছে শিশু আদালতে। তার বিষয়ে এখনও রায় দেয়নি আদালত। 


আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালে ৬ আগস্ট স্কুল পালিয়ে প্রেমিক হাসান আলীর সঙ্গে দেখা করতে পঞ্চগড়ে যান তেঁতুলিয়া উপজেলার পানিহাগা এলাকার দশম শ্রেণি পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রী। পরে হাসান ও তার সহযোগী রাজু মোটরসাইকেলে করে ওই স্কুল ছাত্রীকে পঞ্চগড় থেকে আটোয়ারী উপজেলার ধামোর ইউনিয়নের পুরাতন আটোয়ারী বন্দরপাড়া গ্রামের একটি বনে নিয়ে যায়। রাতে সেখানে থাকা একটি বেড়ার ঘরে দুজন তাকে ধর্ষণ করে।


এ ঘটনা দেখতে পায় ওই এলাকার সাইফুল, আমিনুল, অমর, নজরুল ও সবুজ। তারা এগিয়ে গেলে ওই স্কুল ছাত্রীকে ফেলে পালিয়ে যায় হাসান ও রাজু। এই সুযোগ ওই ৫ জনও তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে তাকে রাস্তার পাশে ফেলে পালিয়ে যায় তারা। পরে স্থানীয়রা ওই স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরদিন আটোয়ারী থানায় ওই ৭ জনকে আসামী করে মামলা করে ওই স্কুল ছাত্রীর বাবা। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া ও সাক্ষীদের সাক্ষ গ্রহণের পর বুধবার ৬ আসামীর উপস্থিতে আদালত এই রায় ঘোষণা করেন।


এ বিষয়ে পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি এ্যাড. জাকির হোসেন গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘আমরা আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আদালত ৬ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছর কারে কারাদন্ড প্রদান করেছেন। তবে মামলার আরেক আসামি শিশু হওয়ায় পৃথক আদালতে তার বিচারক কার্য চলমান রয়েছে। আমরা এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করছি।’


এদিকে এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে বলে জানান আসামিপক্ষের আইনজীবী এ্যাড. আহসান হাবিব।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন