নড়াইলে ভুল সেটে এইচএসসি পরীক্ষা

৫ দিন আগে
নড়াইলের লোহাগড়ায় এইচএসসি বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষায় ভুল সেটে পরীক্ষা নেয়ায় কেন্দ্র সচিব ও ট্যাগ অফিসারকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার পাশাপাশি কারন দর্শানোর(শোকজ) নোটিশ দিয়েছেন যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। তবে খাতা মূল্যায়নে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা নেই জানিয়ে পরীক্ষার্থীদের বিচলিত না হওয়ার পরামর্শ বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের।

রোববার(২৯ জুন) লোহাগড়া উপজেলার লক্ষীপাশা আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে চলমান এইচএসসি পরীক্ষার দ্বিতীয় দিনে এ ঘটনা ঘটেছে।


সন্ধ্যায় মুঠোফোনে সময় সংবাদকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (প্রেষণে) প্রফেসর ড. মো. আব্দুল মতিন।


শিক্ষা বোর্ড ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের দেয়া পূর্ব নির্ধারিত সময় সূচি(রুটিন) অনুযায়ী রোববার (২৯ জুন) সকাল ১০টা হতে বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। যশোর বোর্ড থেকে সেট কোড ৪-(বারিধি)এ পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। তবে লক্ষীপাশা আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে ভুলবশত সেট কোড ২-(আমাজন) এর প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হয়। ফলে ওই কেন্দ্রের ৪৪২ জন পরীক্ষার্থী ভুল সেটে পরীক্ষা দেয়। পরীক্ষা শেষে অন্য কেন্দ্রের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রশ্ন মিলিয়ে দেখে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। এতে পরীক্ষার্থীরা দুশ্চিন্তায় পড়েন এবং অনেক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করেন।


লক্ষীপাশা আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী মিনহাজুর রহমান মাহিন বলেন, 'পরীক্ষা শেষে প্রশ্ন মেলানোর সময় জানতে পারি, সবাই এক সেটে পরীক্ষা দিলেও আমরা এই কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীরা ভুল সেটে পরীক্ষা দিয়েছি। আমরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। বোর্ড আমাদের খাতা গ্রহণ করবে কি না, আর মূল্যায়ন কীভাবে হবে তা নিয়ে চিন্তিত।'


তবে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করে যশোর বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড. মো. আব্দুল মতিন মুঠোফোনে সময় সংবাদকে বলেন, 'শিক্ষার্থীদের চিন্তার কিছু নেই। তারা যে সেটে পরীক্ষা দিয়েছে, সেই প্রশ্ন অনুযায়ীই খাতা মূল্যায়ন করা হবে। ওই কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীদের খাতা গুলো  আমরা বোর্ডে জমা পেয়েছি। নিরীক্ষকদের মূল্যায়নের ব্যাপারে আমরা সেট কোড অনুযায়ী খাতা মূল্যায়নের নির্দেশনা দিব।'


আরও পড়ুন: এইচএসসি পরীক্ষার ২য় দিনে অনুপস্থিত ২২ হাজার ৩৯১ পরীক্ষার্থী, বহিষ্কার ৪১


বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আরও বলেন, পরীক্ষার জন্য চারটা সেট নির্ধারিত ছিলো। কেন্দ্র সচিব ও ট্যাগ অফিসারের দায়িত্বে অবহেলা এখানে স্পষ্ট। তাদেরকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে এবং কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেয়া হয়েছে। চিঠিতে পাঁচ কর্ম দিবসের মধ্যে জবাব চাওয়া হয়েছে। নড়াইল জেলা প্রশাসক ও লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে নতুন করে কেন্দ্র সচিব ও ট্যাগ অফিসার নিয়োগের জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের নির্বিঘ্নে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আহ্বান জানান এ বোর্ড কর্মকর্তা।


ভুল স্বীকার করে কেন্দ্র সচিব ও লক্ষীপাশা আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাজল কুমার বলেন, 'গত ২৬ তারিখ বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষায় সেট কোড ২ ছিল। আজকের পরীক্ষায় সেট কোড ৪-এর নির্দেশনা এসেছিল, কিন্তু ভুলক্রমে আগের দিনের বার্তা দেখে আবারও সেট কোড ২-এর প্রশ্নপত্র বিতরণ করে ফেলি। বিষয়টি পরীক্ষা শেষে বুঝতে পারি। দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি ও কারণ দর্শানোর নোটিশের কথা শুনেছি, তবে এখনও লিখিত কিছু হাতে পাইনি।'


ট্যাগ অফিসার ও লোহাগড়া উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, 'কোন সেটে পরীক্ষা হবে, তা কেন্দ্র সচিবকে ম্যাসেজে জানানো হয়। সে অনুযায়ী কাজ করি। সম্ভবত ম্যাসেজ দেখায় কোনো ভুল হয়েছিল। এখনও আমি কোনো নোটিশ পাইনি। নোটিশ পেলে পুরো বিষয়টা ভালোভাবে বুঝতে পারব।'

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন